ঠ্যালার নাম বাবাজী না দাদাজী ?
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ১৩ মে, ২০১৩, ০৯:৪৪:৫৬ রাত
মতিঝিলের গনহত্যা বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে করা পোষ্টটি নিয়ে অনেকে আমার কাছে ফোন করেছেন। তাদের আক্ষেপ কেন এমন একটি পোষ্ট দিতে গেলাম। তারা মনে হয় সত্যকে নিয়ে যথেষ্ট আতংকিত। তারা বুঝতে পারছেন না যে, আমরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যার্থ হচ্ছি। সত্যকে তুলে ধরতে যদি এত ব্যার্থতা দেখাই তাহলে আন্দোলনে নামার দরকার কি ? কেউ কেউ আবার সহমত পোষন করেছেন। তারাও দাবি করেছেন যে, এই ব্যাপারে হেফাজতের ভূমিকা পরিস্কার করার জন্য।
ইতিমধ্যেই জানতে পারলাম হুরপরী নামের একটি আগাছা কে টুডে ব্লগ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এরি মধ্যে কেউ কেউ আবারও সেই পুরনো প্যাচাল, ধর্মবিরোধী কাসুন্দী নিয়ে বসে পড়েছেন আগের মতোই। দুনিয়ার সকল প্রানীর লাজ- লজ্জা বোধ থাকলেও নাস্তিকদের কোন লজ্জা বোধ নেই কারণ তারা কোন প্রকার প্রানীর কাতারে পড়ে বলে তারা নিজেরাও সেটা মনে করেনা, আর আমরা সেটা মনে করার কোন কারণও নেই। তাদের গরু ডারউইনের সেই বিখ্যাত বির্বতনবাদকে তারা আজো আগলে ধরে আছে আর ভাবছে তারা আসলেই সত্যিকারের কোন জানোয়ারের বিকৃত রূপ অথবা দৈব ক্রমে তৈরি হওয়া এক ধরনের আগাছা। এই সকল আগাছা গুলো কে জমিন থেকে মুছে দেয়ার জন্য হেফাজতের চাপে একটি ট্রাইবুন্যাল করা হয়েছিল। সেই ট্রাইবুন্যালের সুপারিশে কয়কেজন নাস্তিক নামের আগাছা কে আটকও করা হয়েছিল। অথচ আজকে দেখছি মহামান্য বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করে দিয়েছেন এবং সাথে সাথে নবীর বিরুদ্ধে খিস্তিখেউর লিখার এক ধরনের নৈতিক সনদও প্রদান করেছেন বলে অনেকে মনে করেন। হয়তো দেখা যাবে বিখ্যাত হওয়ার স্বপ্নে বিভোর আরেক আগাছা মহিউদ্দিন আসিফও মুক্তি পেয়ে হুংকার ছেড়ে দিয়ে বলবেন বাংলা জামিন তোদের জন্য নয়, আমাদের আগাছাদের জন্য বিদেয় হ তোরা। আমরা অপেক্ষায় আছি সেই মহৎ দিনটি দেখার জন্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও গনসংযোগ বিভাগের শিক্ষক নামের কুলাংগার রোবায়েত ফেরাদাউস তাদের জন্য জান প্রান দিয়ে লড়েছেন। তার কাছে আল্লাহ ও নবীর বিরুদ্ধে খিস্তি খেউর লেখা এই সকল কত্তার বাচ্চা গুলি নাকি মুক্তচিন্তার পথিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাংবাদিকতা ও গন সংযোগ বিভাগটি কবে যে নাস্তিকদের কবল থেকে উদ্ধার হবে তা কেবল মাত্র আল্লাহ পাক ভালো জানেন।
আসলে ভাই ঠ্যালার নাম বাবাজি। গনজাগরন মঞ্চের চাপে সরকার একদিকে কেবল আইন পাল্টাচ্ছে তা নয়, বরং সাথে সাথে ইমরান এইডস ছারখার দের খায়েশ মতো ফাঁসীর রায়ও দিচেছ। অনেকে বলেন বিচারকরা নাকি কেবল রায় পড়ে শুনান, রায় লিখে দেন অন্য কেউ। আমি জানিনা এসব সত্য কিনা। যদি এমনটি হয় তাহলে এটা হবে আইনের শাষনের কফিনে আওয়ামী লীগের হাতের মারা একটি জবরদস্ত পেরেক যেটার ফলাফল তাদের কেও একদিন পেতে হতে পারে।
আওযামী সরকারের কাছ থেকে কোন কিছু আদায় করে নিতে ঠ্যালার কোন বিকল্প আছে বলে আমার মনে হয় না। আসলে দেশের ইতিহাসে এত ঠুনকো বিরোধীদল বোধহয় আর আসেনি। আমরা সাধারন জনগন ভাবতাম বি এন পির কাধে চরে জামায়াত দিন কে দিন বেড়ে উঠছে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে তার উল্টোটা। জামায়াতের কাধেঁ চড়ে বি এন পি তার অস্তিত্ব্য ধরে রেখেছে। এরকম একটি অপদার্থ দলকে দিয়ে দেশের মানুষের ভবিষ্যত কতটুকো সুন্দর হবে তা নিয়ে আমি সংকিত।
খালেদা জিয়া নিজের দলের কোন্দল মেটাতে চরম ভাবে ব্যার্থ হয়েছেন। হাই কমান্ড থেকে ভারতের চর, আমওয়ামী দালালদের কে না সরিয়ে তিনি বরং তাদের কে আরো বৃহত্তর দায়িত্ব্য দিয়েছেন। সারা দেশের কমিটিগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে এটা বোধ হয় আওয়ামী লীগের বি টিম। সত্যিকারের কর্মীবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব্য কারী নেতাদের সংখ্যা একেবারে অপ্রতুল সেখানে।
সারা দেশের (দু একটি জেলা বাদে) প্রত্যেকটি জেলা কমিটিতে সভাপতি ও সেক্রেটারী হিসেবে যাদের নাম রয়েছে তারা এক সময়ের আওয়ামী লীগের দলীয় ফান্ড প্রোভাইডার ছিল বলে ইতিমধ্যেই গোয়েন্দা রিপোর্টে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যেই খালেদার কাছে সেই রিপোর্ট পেশ করেছে যা ইতিমধ্যেই কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত হযেছে। এই সব ভারতের দালাল আওয়ামী চরদের কে অতি কৌশলে বি এনপির বিভিন্ন কমিটিতে ডুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যে সব বি এনপি নেতারা টাকা দেখা মাত্র অজ্ঞান হয়ে যান তাদের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় করা এই লোকগুলোই এখন বি এন পি তথা প্রধান বিরোধী জোটের গলার কাটা। তারা যে কাজটি করেছেন তার মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হলো এরা দলের তৃণমুলের কর্মীবাহিনীর পছন্দনীয় ত্যাগি নেতাকর্মীদের কে দল থেকে নিস্কিয় করে দিয়েছেন নতুবা বিভিন্ন অযুহাতে দলের হাইকমান্ডের এক শ্রেণীর দুর্নিতীবাজদের কে দিয়ে বহিস্কার লেটার দিয়ে রেখেছেন।
ফলাফল হলো এই যে, এক সময়ের ত্যাগী, সক্রিয় কর্মীগুলো ক্ষোভে দুঃখে দলিয় কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে একেবারে নিস্ক্রিয় হয়ে গেল। এসব কোন্দল আর ক্ষোভের কারনে বি এন পি মাঠের আন্দোলনের মারাতœক ভাবে পরাজিত হচ্ছে। এসব নেতারা প্রকাশ্যে কর্মসুচী পালনে কর্মীদের কে অনুৎসাহিত করে থাকেন বলে খবর পাওয়া গেছে। একজন কর্মী গ্রেফতার হওয়র পরে তার লোকজন কোন এক জেলা সেক্রেটারীর কাছে গেলে তিনি তাদের কে স্পষ্ট করে বলে দেন যে, তাকে কে বলেছে পিকিটিং করতে। আমরা কি বলেছিলাম। এই হলো বি এন পির জেলা কমিটির সেক্রেটারীদের মন্তব্য। এভাবে কর্মীরা কার স্বার্থ্যে মাঠে গিয়ে মারা পড়বেন। তারা কর্ম সুচী পালনকালে পুলিশের হাতে নির্যাতিত হলে কমিটির কারো কাছ তেকে কোন সাহায্য তো দুরে থাক একটু সহানুভুতিও পান না। এভাবে কি কোন বিরোধী দলের আন্দোলন চলতে পারে ?
অনেকে মনে করেন যে, গনতান্ত্রীক ভাবে নির্বাচিত এই নেতাগুলি যদি আওয়ামী দালাল হয় তাহলে তাদের কে নেতাকর্মীরা ভোট দিলেন কেন ? এর জবাব হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যাবসায়ী বা মাফিয়াদের কে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের পদ দিতে যেসব নেতারা সহায়তা করেছেন তাদের মুখ দেখে সাধারন নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে গেছেন। অন্যদিকে প্রচুর টাকা খরচ করে দলের বিভিন্ন হাই কমান্ডের নেতাদের কে ম্যানেজ করার মাধ্যমের এক ধরনের বহিস্কার আতংকের মধ্যে রাখা হয়েছে মাঝারী সারির নেতাদের কে। কেউ কেউ টাকার বিনিময়ে সেসব নেতাদের পক্ষ হয়ে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে ক্ষ্যান্ত হচ্ছে। এ রকম অবস্থায় ম্যাডাম খালেদার গর্জন দেয়া ছাড়া কার্যত আর কিছুই করার নেই। সাথে রয়েছে নেতাদের ওপর মামলার হিরিক।
কেউ জানেনা খালেদা জিয়া কবে কোমরা সোজা করে নিজের দলের পুরাতন নেতৃত্ব্যকে আবারো সজাগ করতে পারবেন। কেননা যে ভারত বিরোধীতা বা আওয়ামী বিরোধী চেতনা নিয়ে বি এন পির জন্ম সেই চেতনা অনেক দুরে সরে গেছে এই বি এন পি। তারা একদিকে মসজিদে যেতেও পারছেনা আবার মন্দিরে যেতেও ইতস্ত করছে। ভারত বিরোধীদের কে জামায়াতের দালাল বলে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল তারেক জিয়ার নেতৃত্ব্যে। সেই তারেক জিয়া জরুরী সরকারের সময় হারে হারে টের পেয়েছেন যে, ভারত বিরোধী মনোভাব ধারন কারীদের কে হাড়িয়ে তিনি কতটা ভুল করেছেন। এখনো সময় আছে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার হাতে। তিনি যদি শক্ত হাতে দলের নেতৃত্ব্য সেই সকল নেতাকর্মীদের হাতে তুলে দিতে পারেন যারা আওয়ামী বিরোধীতাকে তাদের আদর্শ মনে করে তাহলে হয়তো তিনি একজন পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। নয়তো দেখা যাবে যে, বি এন পি কে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে একজন মহাসচিব নির্বাচনে।
বি এন পির সর্বশেষ আল্টিমেটাম এবং হেফাজতের পক্ষে মাঠার থাকার জন্য খালেদা জিয়ার আহ্বান কে তার দলের নেতারা যেভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখালো তাতে মনে হচ্চে খালেদার নেতৃত্ব্যের প্রতি তাদের আস্থা সেভাবে আর নেই।
এর পরেও যারা বি এন পি কে ভালোবাসেন তাদের ভালোবাসা মনে হয় বি এন পির জন্য নয়, কেবল আওয়ামী লীগের প্রতি ঘৃনাগুলো বি এনপির পক্ষে ভালোবাসা হয়ে যাচেছ। নতুবা আমরা মনে করি বর্তমান জনগনের সেন্টিমেন্ট বুঝতে খালেদা জিয়া স¤পূর্ণরুপে ব্যার্থ হয়েছেন। খালেদা জিয়াকে তার সেই পুরনো বন্ধুদের কে ফিরিয়ে আনতে হবে যাদের তিনি তুচ্ছ তাচ্ছিল করে বহিস্কার আদেশ দিয়ে ঘরে বসিয়ে রেখেছেন। আশা করছি ম্যাডাম জিয়া আমাদের আহ্বান গুলো শুনতে পাবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৭২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন