মিডিয়া সার্কাসের চুলকানী বনাম চুশিল, চুন্নী সম্প্রদায়।

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ০৮ মে, ২০১৩, ০৩:১৭:৫৯ দুপুর

আজকে কয়দিন ধরে টিভি সেট খুলে বসলে কয়টি শব্দ কেবল শুনতে পাই, তান্ডব, সাইক্লোন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য। সাথে আরো একটি নাম বেশি বেশি জিকির হচ্ছে। সেটা হলো কোরআন শরীফ। কোরআন পুরে যাওয়ার ঘটনায় যেভাবে নাস্তিক বাম রামরা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে দেশটা বুঝি ইসলামী রাষ্ট হয়ে গেছে। কোরআনের শাষন চলছে। এত মোহাব্বাত কোরআনের প্রতি আর কোন দেশের মিডিয়া দেখাতে পেরেছে বলে কেউ শুনেনি। অথচ কিছু দিনও আগেও এই কোরআন ছিল জংগিবাদের কিতাব, এটা ছিল মধ্যযুগিও র্ববর আইনের কিতাব। এর বিধি বিধানে দারুন ভাবে নারী সমাজকে হেয় করা হয়েছে বলে দাবি করছিল এই মিডিয়াগুলো লালিত কিছু ভারতিয় দালাল টাইপের বুদ্ধিজীবি।

কোরআনে বর্নিত ফরজ হিজাব কে হাইকোর্টের তরফ থেকে মোবাহ করে দেওয়া হয়েছিল। কোরআনের যেটুকো ভুল (??) হাইকোর্টের নজরে পড়েছে তা সংশোধন করে দিয়ে তারা সুয়োমোটা রুল দিয়েছে। এই কোরআনের বর্নিত নির্ভুল নারী নীতিমালাকে নারীদের জন্য বেইনসাফী নামে আখ্যায়িত করে নতুন নারী নীতিমালা করেছেন যেই বুদ্ধিজীবিরা তারা আজকে কোরআনকে অবমাননার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছেন। এই কিছু দিন আগেও কোরআনের ধারক মোহাম্মদ (স) কে নিয়ে যা ইচ্ছে মন্তব্যকারীদের কে জাতির প্রেরনার বাতিঘর বানিয়ে দেয়া মিডিয়াগুলো যেভাবে কোরআনের পুরে যাওয়া পাতাকে কাভার হেডে যায়গা দিয়েছে, তাতে মনে হতে পারে মতিঝিলের শাপলা চত্তরে সম্ভবত ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত হয়ে গেছে। দেশের সরকার ও তাদের পরিচালিত মিডিয়াগুলো কোরআনের অবমাননায় করেনি এমন কোন কাজ বাকি ছিল না।

অথচ আজকে তাদের মুখে কোরআনের মহত্ব্য আর গুনকির্তন শুনে মনে হচ্চে ওয়াজ মাহফিলে মোল্লাদের বয়ানের দিন বোধ হয় শেষ। আসন্ন মাহফিল গুলোতে আওয়ামী বুদ্ধিজীবিরাই প্রধান বক্তা হয়ে কোরআনের শান, মান বর্ননা করতে পারবেন। সাথে সাথে যোগ হয়েছে মাজারের কোন পড়ে থাকা কিছু গাজ্ঞা খোর দরবারী মোল্লা। যাদের কোন কাজ নেই কেবল মাজারে সিন্নি চরানো আর সরকারের পা চাটা, চাই তারা যে সরকারই হোক না কেন। তাদের এক জন কোরআন অবমাননার কারনে একটি মামলা করেছেন। চুশিল মিডিয়াগুলো তাদের কে হাইলাইট করছে। বিষয়গুলো নিয়ে ভাবলে মাঝে মাঝে মনে জঙ্গলীয় কোন শাষন ব্যাবস্থায় বসবাস করছি আমরা।

আওয়ামী সোনার ছেলেরা যখন জামায়াতের অফিস পাঠাগারে আগুন দিত তখনও সেখানে অসংখ কোরআন হাদিস পুরে ছাই হয়ে যেত। নাস্তিক মিডিয়াগুলো তার কয়টি প্রকাশ করেছে। আজকে কোরআনের প্রতি এত মোহাব্বাত কোথা থেকে আসলো। হাস্যকর বিষয় হচ্ছে নাস্তিক ইমরানেরাও কোরআন অবমাননার প্রতিবাদের সমাবেশ করার ঘোষনা দিয়েছেন। অথচ এই কোরআন যার ওপর নাযিল হলো, তাকে দিনের পর দিন অবমাননা কারীদের কে সাথে নিয়ে জামায়াত বিরোধী আন্দোলন করেছেন এই নাস্তিকরা। তার মৃত্যুতে তাকে শহীদের মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। রাষ্টিয সম্মানে তাকে দাফন করা হয়েছিল। সংসদের ভিতরে তার জন্য শোক প্রকাশ করা হয়েছিল। তখন কোথায় ছিল এই কোরআন প্রেমের নমুনা। কোরআনের ধারক কে পছন্দ হয় না, কোরআনের বর্নিত বিধিবিধান কে বর্বর মধ্যযুগিও বলে গালি দেওয়া জ্ঞানপাপীরা এত তাড়াতাড়ি বোল পাল্টে ফেললো, এত সপ্তম আশ্চার্য্যের থেকেও বেশি আশ্চার্য্যপূর্ণ।

টিভি টকশোতে নাস্তিক এক বক্তাকে প্রশ্ন করা হলো যে, ছাত্রলীগের ছেলেরাও তো অসংখ্য কোরআন হাদিস পুরিয়েছে, তখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলো না কেন। শালার নাস্তিকের চামচা বলে, জামায়াতীরা যেই বই (তাফসির নয) পড়ে সেগুলো কে কোরআনের তাফসির বা কোরআন বলে স্বয়ং হেফাজতের অনেকে মানেন না। তাই এসব কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের মতে তাফহিমুল কোরআনে আগুন লাগালে কোন পাপ নেই। এই সার্টিফিকেট হেফাজতের নেতারাই দিয়েছেন। কি জবাব দেবেন এখন হেফাজতের নেতারা। কথায় কথায় ইখতেলাফী বিষয় নিয়ে যাদের কাফের গোমরাহ বলে রায় দিয়ে দেওয়া হতো তারাই আজকে হেফাজতের পক্ষে জান মাল দিয়ে লড়ছে। আর যেই ভন্ডকে এতদিন সাপোর্ট করেছেন তারা, সেই আজকে তাদের কর্মসুচীকে চ্যালেজ্ঞ ছুড়ে দিয়ে তাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে দিয়েছেণ। এতদিন জামায়াতের পাঠাগার পুরানোর দায়িত্ব্যের ভার তাহলে কিছুটাও হেফাজতের নেতাদের ওপর বর্তাতে পারে বৈকি।

হেফাজতের নেতাকর্মীরা কোরআন পুরিয়েছে একথা স্বয়ং শয়তানও বিশ্বাস করবে না। দেশের মিডিয়ার চরিত্র এখন খোলাশা হয়ে গেছে। কারা দালালী করে সত্যকে গোপন করছে এবং মিথ্যার পক্ষ নিয়ে নিজেদের পকেট ভরাচ্ছে দেশের তৌহিদী জনতা সেটা বুঝে গেছে। সত্যিকারের কথা হচ্ছে এখন দেশের সাধারন তৌহিদী জনতা এসব টয়লেট পেপার কিনে পয়সা খরচ করে না। তারা নিজেদের টাকায় ফালতু মিথ্যাচার শুনতে ভুলে গেছে। এ কারনে,দৈনিক নয়াদিগন্ত আর আমার দেশের প্রকাশনা দিনকে দিন বাড়তে লাগলো। সরকার বিষয়টি টের পেয়ে ঠুনকো অযুহাতে তৌহীদি জনতার মুখপাত্র কে বন্ধ করে দিল। বাকি ছিল ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মুখপাত্রটি বন্ধ করার। সেটাও করে নিল এক উসিলায়।

স্বাধীন মত প্রকাশের তত্ব ফেরি করা সুশীল সমাজের গাধাগুলি এখন মুখে কুলুপ এটেছে। তাদের কাছে এসব হচ্ছে শান্তী শৃংখলা রক্ষার কৌশল। সারাদিন মিথ্যাচারে ব্যাস্ত মিডিয়াগুলোর বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোন সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই বেচারারা কি ভূমিকা নেয় সেটাই দেখার বিষয হয়ে রইল। কতজন সম্পাদক কে মাহমুদুর রহমানের মতো ভাগ্য বরন করতে হবে তার একটি লিস্টও আল হামদুলিল্লাহ তৈরির কাজ চলছে।

আরেকটি বিষয় শেয়ার করতে চাই। আমাদের এক দ্বীনি ভাই তার এক নবজাতক ভাতিজার নাম রেখেছিলেন মোঃ মিজানুর রহমান। তাদের পরিবারের সবার সর্ব সম্মতি ক্রমে স্বিদ্ধান্ত হয়েছে এমন কলংকিত দালাল টাইপের নাম রাখা হবে মতিঝিলের হাজারো শহীদের সাথে তামাশার শামিল। অবশেষে নাম পাল্টে রাখা হয়েছে সাইফুল্লাহ। সবাই যদি পারেন ভন্ড আওয়ামী দালাল আওয়ামী মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়ে দেন। ভবিষ্যতে তারও বিচার হবে দালালীর বিচার। ভবিষ্যতে হয়তো পালিত কুকুরের নামও রাখা হতে পারে তার নামে।

বিষয়: রাজনীতি

১৮০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File