ইতিহাস ও ধর্মের কষ্টিপাথরে পহেলা বৈশাখ

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ০২:৩২:৪০ রাত

আচ্ছা, পহেলা বৈশাখ কত তারিখে?

কিছুক্ষণ চিন্তা করে আপনি হয়তো বলবেন, আজ্ঞে ১৪ তারিখ।

হ্যা, আমাদের পহেলা বৈশাখ ১৪ তারিখে, পশ্চিমবঙ্গে আবার এখন ১৫ তারিখে। অথচ পহেলা বৈশাখ- বৈশাখ মাসের ১ তারিখেই হয়ে থাকে।

এই লঘু প্রশ্নটিই হয়তো বলে দেয় বাংলা সনের দিকে আমাদের অবহেলার কথা।

বাংলা সন কবে, কীভাবে বাংলায় উদ্ভব ঘটলো এ নিয়ে বিরাট গোন্ডগোল আছে। কেননা, কবে থেকে বাংলা সনের প্রচলন শুরু হয়েছে এ নিয়ে সঠিক তথ্য আজ পর্যন্ত কারো কাছেই নেই। তবে এটি প্রবর্তনে মুঘল সম্রাট আকবর যে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তা নিয়ে সংশয় নেই। মুঘল সম্রাট আকবর জোতির্বিজ্ঞানী ফতেউল্লাহ সিরাজীকে হিজরী ও প্রাচীন বাংলা সৌরসনের মিশ্রণে একটি নতুন সনের প্রবর্তন করতে বলেন। তার ফলেই আধুনিক বাংলা সনের কাঠামো প্রবর্তিত হয়। সে সময় এটা হয়েছিল খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে।

একটা কথা বলে রাখা ভালো, বাংলাতে মুসলমানরা আসার আগে এখানে প্রাচীন বাংলা সৌরসনই প্রচলিত ছিল। তবে মুঘল আমলে খাজনা আদায় হিজরী সনে শুরু হলে ঝামেলা হয়। কেননা, হিজরী সন চন্দ্রসন। চন্দ্রসনে খাজনা আদায়ের মাস একই থাকলেও ঋতু পাল্টে যেত।

কীভাবে ঋতু পাল্টে যেত সেটা বোঝা কঠিন নয়, যেমন মনে করুন সম্রাট আকবর ঠিক করলেন রমজান মাসে খাজনা আদায় করবেন। সে বছর রমজানের সময় বাংলায় ফসল তোলার সময় হলেও দু’তিন বছর পরেই ফসল তোলার সময়টা আর রমজান মাসে থাকত না। সুতরাং প্রজাদের খাজনা দিতে অসুবিধা দেখা দিত। এ বিষয় বিবেচনায় সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করিয়েছিলেন। এটা একদম স্পষ্ট যে কোন ধর্মীয় কারণে তিনি এটা করেন নি।

বাংলার ইতিহাস মানেই অস্পষ্টতা। তাই সম্রাট আকবরের আগের বাংলা সৌরসন কবে থেকে প্রচলিত হয় তা জানা যায় নি। কিন্তু সম্রাট আকবরের আগের সময়কার দুটি স্থাপনায় ‘বঙ্গাব্দ’ শব্দটি পাওয়া যায়। এ বিচারে কেউ কেউ মনে করেন শশাঙ্কের সময় থেকেই প্রাচীন বাংলা সনের প্রচলন হয়। এই সন প্রচলনে আর্যদের রীতি গৃহীত হবে এটাই স্বাভাবিক। কেননা তখন পুরো ভারতবর্ষে আর্যদের আধিপত্য। আর্যদের পূর্বে বাংলায় কোন সনের প্রচলন ছিল কিনা সে ইতিহাসও অজানা।

তবে মৌর্যযুগে এবং পালযুগে বাংলা যে অবস্থায় ছিল সে বিচারে এই দুই যুগের কোন এক সময় বা তারও অনেক আগ থেকে বাংলাতে ৩৬০/৩৬৫ দিনে বছর এই হিসাব রাখা শুরু হয়েছিল। কেননা ষড়ঋতুর এই বাংলায় দিনক্ষণের হিসাব না রাখলে ফসল ফলানো কঠিন ব্যাপার।

এই বাংলা সন আবার বাংলাদেশে ১৯৬৬ সালে ড. শহীদুল্লাহর উদ্যোগে সংস্কার করা হয় ইংরেজি সনের সাথে সমন্বয় করে। তিনি বললেন, বাংলা সনের প্রথম ৫ মাস হবে ৩১ দিনে আর লিপ ইয়ারে ফাল্গুন মাসটা হবে ৩১ দিনে। এর মাধ্যমে একটা পরিবর্তন ঘটল সেটা হল চিরস্থায়ীভাবে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে রুপান্তরিত হল। পহেলা বৈশাখ আর ১৪ এপ্রিল সমার্থকে পরিণত হল। এর হিসাবটাও সহজ সরল। ইংরেজি যে সনে ফেব্রুয়ারি ২৯ দিনে সেই সনে বাংলা ফাল্গুন ৩১ দিনে। যেহেতু ফাল্গুনের শেষ ফেব্রুয়ারি মাস শেষের পর পরই হয় তাই ফেব্রুয়ারির ওই অতিরিক্ত ১টি দিন ফাল্গুন পূর্ণ করে নেয়। একারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ হয় ১৪ তারিখে।

তাহলে এটা স্পষ্ট বর্তমান বাংলা সন হিজরী চন্দ্রসন, বাংলা সৌরসন এবং ইংরেজি সনের সংমিশ্রণে তৈরি একটি স্বতন্ত্র সন। বাঙালী যেমন মিশ্র জাতি তেমনি বাংলা সনও মিশ্র সন।

সনের কোন ধর্ম নেই, সন বোঝে না সাম্প্রদায়িকতা কিংবা অসাম্প্রদায়িকতা। সন তো আর মানুষ নয় যে সন খারাপ হবে। সনের কাজ শুধু নিজে ব্যবহৃত হয়ে মানুষকে সহযোগিতা করা।

হিজরী সন যেমন ধর্ম পালনে এখনো বাংলার মুসলমানদের সহায়তা করছে, তেমনি বাংলা সন একসময় বাংলার মানুষের জীবনে প্রশান্তি এনেছিল।

তা সত্ত্বেও বাংলা সন, বিশেষ করে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে নানা আলোচনা সমালোচনা দেখা যায়।

বিভিন্ন সময় পহেলা বৈশাখকে নেওয়া হয়েছে ধর্মের কষ্টিপাথরে। যাচাই করে দেখা হয়েছে ধর্মের কাছে বাংলা সন টেকে কিনা।

কেউ বলেছেন, সম্রাট আকবর যেহেতু খাঁটি মুসলমান ছিল না সুতরাং তার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। আর আধুনিক বাংলা সন যেহেতু হিন্দু সৌরসনের ভিত্তিতে করা হয়েছে তাই এটা মেনে নেওয়া যায় না। কেননা, মুসলমানদের অন্য ধর্মের লোকদের অনুসরণ করা হারাম।

এটা একদম খোঁড়া যুক্তি। কেননা, ইসলামের শুরু থেকেই হিজরী সন ছিল না। এমনকি মহানবী (সঃ)-ও জন্মের সময় আরবে অন্য একটি চন্দ্রসন চালু ছিল। মহানবী (সঃ)-ও সেই সনই মেনে চলতেন। কিন্তু পরবর্তীতে মহানবী (সঃ)-এর মৃত্যুর পর ধর্মীয় রীতি-নীতি পালনের সুবিধার্থে হিজরী সন প্রবর্তন করা হয়। এক্ষেত্রেও একটি সনের উদ্ভব হয় প্রয়োজনে যেমনটি বাংলা সনের বেলাতেও হয়েছিল।

অন্যদিকে আরেক ইসলামিক চিন্তাবিদ নানা চিন্তা করে একটা নিবন্ধে মেনে নিয়েছেন বাংলা সনের ইতিহাস। সম্রাট আকবরকে নিয়েও তার সমস্যা নেই। তবে বর্তমান যুগে যেভাবে পহেলা বৈশাখ পালিত হচ্ছে এটা নিয়েই তার সমস্যা।

একটা সময় ছিল যে সময় পহেলা বৈশাখ পালিত হত শুধু খাজনা দেওয়ার সমাপ্তির পর শুভ মূহুর্ত হিসেবে। তারপর হালখাতার প্রথা এর সাথে যুক্ত হয়। তবে সংস্কৃতিমনা বাঙালীর মন আটকে রাখা যায় নি। তারা ধর্মীয় ও সংস্কৃতির মোড়কে পহেলা বৈশাখ পালন করেছে। হিন্দুরা বিভিন্ন পূজো করে এই দিন পালন করেছে আর আরেক গোষ্ঠী গান বাজনা কিংবা মেলার মাধ্যমে। অন্যদিকে বাঙালী মুসলমানরা এটা শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। এই কারণে মুসলমানদের সংস্কৃতির সাথে আজো পহেলা বৈশাখ মিশতে পারে নি।

বর্তমানে পহেলা বৈশাখ নিকটবর্তী হলে মসজিদে মসজিদে এই দিনের বিরুদ্ধে নানা অযৌক্তিক বয়ান দিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বোঝানো হয় এই দিনটি পালন করো না। অথচ এ দিনটিতে যদি মসজিদে মসজিদে দেশবাসীর সফলতা কামনা করে দোয়া করা হত তবে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে দু’লাইন বলতে গেলে সবাইকেই বলতে হত- পহেলা বৈশাখে বাংলার মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা করা হয়।

একথা সবাই জানে যে, শুধু এক্ষেত্রে নয় বাঙালী মুসলমানরা প্রথমে পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণেও অনীহা দেখিয়েছিল। অথচ আজ বাঙালী সংস্কৃতির নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছে মুসলমান প্রধান অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।

আগে একটা সময় ছিল যে সময় কলকাতা বাংলা শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের নিয়ন্ত্রক ছিল, কিন্তু তা এখন ঢাকাকেন্দ্রিক। তাই বাঙালী মুসলমানরা চাইলেই পারে পহেলা বৈশাখের অসাম্প্রদায়িক নিদর্শন আরো উজ্জ্বল করতে।

বাংলার সাধারণ মুসলমানের ভিতর অবশ্য এসবের তোয়াক্কা নেই। মসজিদে বয়ানেও তাদের নজর নেই, কিংবা সমাজতান্ত্রিকদের অসাম্প্রদায়িকতার বাণীর দিকেও তাদের নজর নেই। তারা শুধু জানে পহেলা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম দিন। এইদিন একটু বাড়িতে ভালো কিছু রান্না হবে, যে পারবে নতুন পোশাক কিনবে, কেউ কেউ ঘুরে বেড়াবে পহেলা বৈশাখের আমেজ উপভোগ করার জন্য। কেউ আবার মঙ্গল শোভাযাত্রার পিছনে ছুটবে শখের বসে। গ্রামের কোন ছোট্টমণি বৈশাখী মেলায় যাবার জন্য বায়না ধরবে। এইতো পহেলা বৈশাখ। এইতো পহেলা বৈশাখের আনন্দ।

তবে একথা সত্য বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পাশ্চাত্যের প্রভাব ও পহেলা বৈশাখের ব্যবসায়িক তাৎপর্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে পহেলা বৈশাখের ভবিষ্যৎ রূপ নির্ণয় করা সহজ নয়। পহেলা বৈশাখের নয়া ইলিশ সংস্কৃতি একদিকে আমাদের ইলিশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে, অন্যদিকে বাংলার সব উৎসবে প্রেমিক-প্রেমিকাদের দৌরাত্ম্য সংস্কৃতির স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। আর কত বছর চর্চাবিহীন এই বাংলা সনের ১ম দিনটি বাংলা সংস্কৃতিতে থাকবে এ নিয়ে হিসেব কষেও লাভ নেই। আশা করি, পহেলা বৈশাখ নানা পরিবর্তনের মাঝেও তার স্বীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে থেকে যাবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।

বিষয়: সাহিত্য

১৫৪০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382652
১৪ এপ্রিল ২০১৭ রাত ০৩:০৮
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : "বর্তমানে পহেলা বৈশাখ নিকটবর্তী হলে মসজিদে মসজিদে এই দিনের বিরুদ্ধে নানা অযৌক্তিক বয়ান দিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বোঝানো হয় এই দিনটি পালন করো না। অথচ এ দিনটিতে যদি মসজিদে মসজিদে দেশবাসীর সফলতা কামনা করে দোয়া করা হত তবে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে দু’লাইন বলতে গেলে সবাইকেই বলতে হত- পহেলা বৈশাখে বাংলার মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা করা হয়।"


বিদয়াত নিয়ে সঠিক ধারনা নেই লেখকের। ইসলামীক দৃষ্টিকোন নিয়ে লেখকের আলোচেনা খুবই সীমিত। লেখার টাইটল এর সাথে ভেতরের আলোচনার মিল খুব বেশি নেই। ১০০ তে 30
১৪ এপ্রিল ২০১৭ রাত ০৩:১৬
316187
মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে
১৪ এপ্রিল ২০১৭ রাত ০৩:২১
316188
মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী লিখেছেন : আসলে এতদিন পর ব্লগে এসেছি তাই কিছু বললাম না। শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। মসজিদে আমিও যাই। একথার ভিতর মিথ্যে কিছু নেই।
382653
১৪ এপ্রিল ২০১৭ সকাল ০৫:২৮
আনিসুর রহমান লিখেছেন : প্রহেলা বৈশাক নিয়ে আজকের বিতর্কের মুল কারনই হল সম্ভবত এই ধরনের রেফারেন্স বিহীন লেখা/ বক্তব্য।
আজকে দেশের প্রধান মন্ত্রী সহ এক পক্ষ বলছে প্রহেলা বৈশাক এর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। ভাল কথা কিন্ত প্রহেলা বৈশাককে অস্ত্র হিসাবে ব্যাবহার করে এদেশের ইসলাম বৈরীরা মুসলমানদের মন-মস্তিকে শিরক/বেদাত ঢুকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। মনে হচ্ছে তারা এটাকে বর্ষবরন হিসাবে নয় বরং এদেশের বৃহৎ জনগুষ্ঠির কৃষ্টি কালচারকে পরিবর্তন করে দেওয়ার GOLDEN CHANGE হিসাবে ব্যাবহার করছে। সুতরাং কেউ নিজেকে মুমিন দাবী করলে সে নিস্কৃয় ভাবে বসে থাকতে পারে না। এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরী করা তাদের ঈমানী দায়িত্বের-ই অংশ। ধন্যবাদ।
382655
১৪ এপ্রিল ২০১৭ সকাল ০৬:১৫
চেতনাবিলাস লিখেছেন : হিন্দু সংস্কৃতি থেকে আগত পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতিতে মুসলমানদের মনোযোগ না দেওয়াই উত্তম। শয়তান নানা বাহানায় আজ মুসলমানের মানসকে বিকৃত করে দিয়েছে। আপনার এই লেখাটি সেই বিকৃতিরই. ফসল।
382657
১৪ এপ্রিল ২০১৭ সকাল ০৭:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার লিখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। বৈশাখি উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা সহ কার্যক্রম এর সাথে বাংলা সন গননার কোন সম্পর্ক নাই। এটাকে ব্যবহার করে যারা ইসলাম এর বিরোধি সংস্কৃতির প্রচলন করছে তাদের কে প্রতিরোধ করতে গিয়ে এই তারিখ গননা ব্যবস্থা কেই হারাম বলা আরো বড় ধরনের ভুল।
382665
১৪ এপ্রিল ২০১৭ সকাল ১০:২২
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশী মুসলমানদের জেনে বুঝে এমন কিছু করা উচিত হবে না এই পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করে যা কি না তার ঈমানের উপর প্রশ্ন আনে ।

পরকালে একজন বাঙ্গালী হিসেবে যে আপনার বিচার হবে না সেটা তো জানেন?
382672
১৪ এপ্রিল ২০১৭ দুপুর ০২:০১
বিবর্ন সন্ধা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম,

একদিকে বৈশাখী পালনের জন্য নিরব উস্কানি,
অন্য দিকে ইলিশের বিলুপ্তি, প্রেমিক জোড়াদের নিয়া উৎকণ্ঠা,
মহান আল্লাহ্‌ মানুষ কে,
মাথায় ঘিলু দিয়েছেন, ভাল মন্দ বুঝে কাজ করার জন্য, আর আমরা সেই ঘিলু কাজে লাগাই ভালোর মাঝে কিভাবে মন্দ মিশিয়ে ফেলা যায়, সেই উদ্দেশ্যে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File