গল্পঃ প্রেম স্বীকারোক্তি (২)
লিখেছেন লিখেছেন মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী ০৯ মে, ২০১৪, ১০:৫০:১০ রাত
গল্পঃ প্রেম স্বীকারোক্তি (১)
২.
ঐ যে তারপর থেকে অপেক্ষা। তাহার জন্য অপেক্ষা। অপেক্ষা কি জিনিস তা আমি বুঝতে শিখলাম। বুঝতে শিখলাম প্রেম কি জিনিস, ভালোবাসা কি জিনিস।
কিভাবে আবার! নাটক-সিনেমা দেখে। বিশেষ করে সিনেমার নায়ক-নায়িকা আমাকে বুঝতে শেখাল প্রেম কি জিনিস। আমি তখন একটা ঘোরের ভিতর পড়ে গেলাম। আমার মস্তিকের প্রতিটা কোষ যেন রোবার জন্য পাগল হয়ে উঠল।
হ্যাঁ, অপেক্ষার পালা তো শেষ হতো। ঈদে অথবা কোন অকেশনে যখন আমরা সবাই রাজশাহী আসতাম, তখন দেখা হত। রাজশাহী ছিল আমার নানীর বাড়ি। রোবাদের বাসাও একি তল্লাটে ছিল। আর আমার নানীর বাড়ি তো সবার আনাগোনা ছিল। রোবা তো দিন-রাত আমার নানীর বাড়িতে পড়ে থাকত।
আমি অভাগা, অকেশনের এক মাস আগ থেকেই দিন গুনতাম। তখনকার প্রতি মিনিট সেকেন্ড আমার ছিল মহাকালের সমান।
নানীর বাসায় আসলে তো কথায় নেই, রোবার সাথে গল্প-খেলা সব চলত। আর রোমানের সাথে এদিক-ওদিক ঘোরা-ঘুরি তো ছিলই। আমরা ঘুরতাম মাঠে-রাস্তায়-বাজারে। দেখতাম নানান প্রকার মানুষ। জেলে, চাষি থেকে শুরু করে চামারদের কাজ করা দেখতাম আমরা। আর দুপুরে ডুব দিতাম পুকুরে।
একবার কি হয়েছিল জানেন, এক সাপুড়ে এসে হাজির। ডুগডুগি বাজিয়ে বাজিয়ে আক্কাস সাপুড়ে চিৎকার করে বলে যাচ্ছে, ‘সাপ খেলা! সাপ খেলা!’
রোবাতো কেঁদে কেটে অস্থির। ও সাপ খেলা দেখবই। সাপুড়ে চলে গেছে আমাদের তল্লাট ছাড়িয়ে দূরে। শেষে রোমানের মা মানে আমার মামী যখন দেখলো রোবার কান্না থামছে না, তখন আমি আর রোমান দৌড়ে পাশের পাড়ায় গিয়ে সাপুড়েকে খুঁজে নিয়ে আসলাম।
সাপুড়ে তো আসলো, এসে যেই সাপ বের করল, রোবা ভয়ে কান্না জুড়ে দিল। এই ব্যাপারটা নিয়ে হাসাহাসির সীমা থাকল না। তবে আমি সেদিন হাসলাম না বরং মনটা কেন জানি খারাপ হয়ে গেল। রোবাকে নিয়ে রোমান ঠাট্টা করায় তো ওকে তেড়ে মারতে পর্যন্ত গেলাম।
গল্পঃ প্রেম স্বীকারোক্তি (৩)
বিষয়: সাহিত্য
১৩৪৪ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন