গল্পঃ প্রেম স্বীকারোক্তি (১)

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী ০৮ মে, ২০১৪, ০৯:৩২:৩৬ রাত



প্রেম! সে তো প্রেমের আকুতি! দুনিয়াতে কত রকম ফেরের প্রেম আছে তা আমার জানা নেই। তবে প্রতিটি প্রেমের ঘটনা তার জীবনের জন্য এক ইতিহাস। প্রেম নিয়ন্ত্রণ করে অনেক মানুষের জীবনী। তাই জীবন সঞ্জীবনী এই প্রেমকে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে রাখার অধিকার আমার নেই। আমি বসে আছি আমার চেয়ারে, আমার সামনে এক প্রেমিক। সে বলে চলছে তার প্রেমের ঘটনা। এভাবে কতজন যে তার আপনজনের কাছে নিজের প্রেমের কাহিনী বলে ভারমুক্ত হয় তা আড়ালেই থেকে যায়। সেই কাহিনী আমার আপনার কাছে মেকি হোক কিংবা ভারযুক্ত হোক তা তার কাছে পর্বতসম।

১.

আমি তখন ক্লাস থ্রিতে পড়তাম। থাক না ভাই! আজকে নয়, অন্য একদিন শুনবেন।

ও আমিই তো বলেছিলাম আপনাকে বলব। দাঁড়ান, একটু ভেবে নিই। লম্বা কাহিনী তো! আজ রাতে শেষ হবে কিনা বলতে পারছি না।

কি যেন বলছিলাম। ও আপনিও ভুলে গেছেন! দাঁড়ান আবার মনে করে নিই। মাথাটা ঠিক মতো কাজ করছে না। আপনাকে যা বলতে চেয়েছিলাম সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

সিগারেট ধরিয়ে।– সেই ছোট্টবেলা থেকে ভাই। আমার তখন বয়স কত আর হবে, নয় কি দশ। ক্লাস থ্রিতে পড়তাম, মেয়েটা পড়ত ক্লাস ফোরে। আমাদের পাশের বাসায় থাকত ওরা। ক্লাসে বড় বলে আমার চেয়ে বড় মনে করবেন না আবার। ও ছিল আমার চেয়ে একদিনের ছোট।

মেয়েটার নাম? পরে বলছি। আগে শুনুন। ওরা ছিল আমার দূর-সম্পর্কের আত্মীয়। ওর মা ছিল আমার একরকমের খালা।

সেই তখন থেকে শুরু। শুরু মানে, ভালো লাগা শুরু। ওকে আমার প্রচণ্ড ভালো লাগত। তবে তখনো বুঝতাম না প্রেম কি জিনিস। তবে বুঝতাম ওকে দেখলে আমার ভালো লাগে।

নামটা শুনে কি করবেন? থাক না!

ও আচ্ছা, লুকিয়ে বা কিই হবে, সে তো আমার কাছ থেকে অনেক দূরে।

এইতো নিন। সিগারেট খেতাম না একসময় বুঝলেন। এখন আর চাইলেও ছাড়তে পারি না। ও জনমেও খেতাম, এ জনমেও খায়।

শুনুন তাহলে, ওর নাম ছিল রোবা। খুব ছোট নাম। তবে কতটা মিষ্টি ভেবেছেন। আমার হৃদপিণ্ডের প্রতিটা স্পন্দন সব সময় ‘রোবা! রোবা!’ করে এখনও। আসুন, কান পেতে শুনুন।

শুনতে পাবেন জানতাম। যাই হোক। আমি ওকে দেখতাম, দেখতাম আর দেখতাম। ওর সাথে এক পুকুরে গোসল করতাম, এক সাথে স্কুলে যেতাম আর ফিরতাম। দিনগুলো যেন আমার চোখের সামনে ফ্রেম বাঁধানো ফটোর মতো চলে আসছে এখন। ইস! কত সুন্দর ছিল দিনগুলো।

আর বলবেন না। তারপর কি ও আমার কাছে থাকলো। সরকার হল আমার কাল। সরকারের কাজই শুধু ট্রান্সফার করানো। করবি কর, তাই বলে রোবাদের। রোবার মা আমাকে কত আদর করতো। আমাকে ডেকে সেমাই খাওয়াতো, মিষ্টি খাওয়াতো। আর আজ! আজতো সেই রোবার মা আমাকে দেখতেই পায় না। অবশ্য কিছুদিন আগে আমাকে সহ্যও করতে পারত না।

আর বলবেন না, রোবারা চলে গেল সেই সিলেটে। সিলেট কি কম দূরে! আর আমরা পড়ে রইলাম দিনাজপুর। সেই সব দিনগুলোর কথা ভাবলে আমার শীতল রোমগুলোও খাড়া হয়ে ওঠে।

জী ভাই, তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়তাম। আমি আর রোমান একসাথে পড়তাম। এই রোমানটা হল গিয়ে আমার মামাতো ভাই। একি বয়সি, একসাথে স্কুল-কলেজে পড়েছ।

গল্পঃ প্রেম স্বীকারোক্তি (২)

বিষয়: সাহিত্য

১৪৮৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

219211
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:১৩
গেরিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
219220
০৮ মে ২০১৪ রাত ১০:২৭
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : এরকম আধা পাগল প্রেমিক এখনো কিছু খুঁজে পাওয়া যায়। অবশ্য একটা সত্যি বিষয় কি নারী ঘটিত যে কোনো বিষয় শেয়ার করার জন্য মনটা সবসময় আকুপাকু করে। এটা কি সবার ক্ষেত্রেই নাকি বুঝতেছি না। Love Struck
০৯ মে ২০১৪ রাত ১২:৫২
167064
মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী লিখেছেন : কেউ কেউ তীব্রভাবে চেপে রাখে ব্যাপারগুলো, খুব কম মানুষ আসল ব্যাপার-গুলো জানে
219288
০৯ মে ২০১৪ রাত ০১:০৫
চোথাবাজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
219291
০৯ মে ২০১৪ রাত ০১:২৩
সবুজেরসিড়ি লিখেছেন : ভালই লিখেছেন ধন্যবাদ . .. .
219676
১০ মে ২০১৪ রাত ০৪:৪৫
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : পরের পর্ব আগে পড়ে নিয়েছি।
227414
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০২:২০
আতিকুর রহমান ফরায়েজী লিখেছেন : আমিও উল্টো দিক থেকে পড়া আরম্ভ করেছি। প্রথমে ৫ তারপর ৪, ৩,২ এবং শেষে এক। অন্যরকম অনুভূতি কাজ করলো ভিরতে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File