গণতন্ত্র ও পৃথিবীর ভবিষ্যৎ [ধারাবাহিক]

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী ২২ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:১২:৫৬ দুপুর

[[[বিভেদ সৃষ্টিতে নামীয় গণতন্ত্র]]]

পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক দেশ কয়টি? একটিও না। যা আছে তা হচ্ছে নামীয় গণতন্ত্র। নামীয় গণতন্ত্র পৃথিবীতে একদিকে সাম্য আনতে ব্যর্থ হয়েছে আর সাথে সাথে বিভেদ সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে। পৃথিবীতে সর্বোচ্চ বুদ্ধিমান জাতি হল মানুষ জাতি। আর এর আছে অনেক উপজাতি। এই সব উপজাতি বা ছোট-বড় জাতি মিলেই এই পৃথিবী। এছাড়াও ধর্মের ভিত্তিতেও পৃথিবীতে বহু জাতি আছে। তবে সবাই মানুষ জাতির অন্তর্গত। আগে যেমন জাতিতে জাতিতে বিদ্বেষ ছিল, এই আধুনিক যুগেও তার সামান্য পরিবর্তন নেই। বরং গণতন্ত্রের উত্থানের পর এই বিভেদ আরো বড় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নেই যারা অন্য দেশকে বিশ্বাস করে। এই অবিশ্বাস থেকেই তারা গড়ে তোলে বিধ্বংসী সব অস্ত্রভাণ্ডার। যার অস্ত্রভাণ্ডার যত বড় সেই এই গণতান্ত্রিক বিশ্বের চালক, যেমনটি ছিল রাজতন্ত্রে।

পৃথিবীর যে পরিবর্তন এসেছে তা হল মানুষের মানুসিকতায়। অনেকেই মনে করে মানুষের এখনকার স্বাধীনতাবোধ আধুনিক রাষ্ট্রতন্ত্রের অবদান, রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতার অবদান। প্রকৃতপক্ষে তা ঠিক নয়। যতই দিন গেছে মানুষ ততই নিজেদের বিষয় সচেতন হয়েছে, নিজেদের বুঝতে শিখেছে, মানুষেরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে গেছে। এই পরিবর্তন কোন রাষ্ট্রব্যবস্থাই দমিয়ে রাখতে পারত না। আজ অবধি যদি রাজতন্ত্রই বহাল থাকত পৃথিবীব্যাপী, তবুও এমনটিই হত পৃথিবীর অবস্থান। উঁচু উঁচু বিল্ডিং যেমন হত, তেমনি পারমানবিক অস্ত্রও তৈরি হত।

তবে পৃথিবীর মানুষ আজীবন প্রতীক্ষা করে গেছে, কবে তারা একটি সুন্দর ও স্বচ্ছ রাষ্ট্রব্যবস্থা পাবে- যেখানে মানুষের ভেদাভেদ সর্বোচ্চ সীমিত হবে। তবে নানা তন্ত্র মানুষকে এক হতে দেয় নি কখনো। মুষ্টিমেয় শাসকদের স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে আজো মানুষেরা দাস হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কেন?

কারণ মানুষ হাজার কোটি বছরের শাসকশ্রেণীর প্রতি নিজেদের নত করার অভ্যাস ছাড়তে পারে নি। তবে আর কতদিন এমনটি চলবে তা ভাববার বিষয়। মানুষ কি শাসক বিহীন ভেদাভেদ বিহীন পরবর্তী বিশ্ব দেখতে একদিন একত্রিত হবে? তবে তা বাস্তবিক পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়।

যাই হোক, যে আশায় বুক বেধে মানুষ দিনের পর দিন গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রেখেছে তা পূরণ করতে নামীয় গণতন্ত্র সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। নামীয় গণতান্ত্রিক দেশের বিভিন্ন দল উপদল, প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে বিভেদ সৃষ্টির চক্রান্ত বুনে যাচ্ছে। এই চক্রান্ত থেকে রেহায় পায় না পরিবার, গ্রাম, শহর, দেশ এবং এই পৃথিবী। যার খেসারত প্রতিনিয়ত দিতে হচ্ছে জনগণকে।

বিষয়: সাহিত্য

১৩৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File