কলমের ইতিহাস

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৯:১১:৪৪ রাত



কলম বিনে পড়ালেখা? চিন্তা করা যায়। এদেশে তো নয়ই। যদি কলম না থাকে হাতে মনের কথা মনেই পড়ে র'বে। তাই কলমের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কারোর মনে দ্বিধা থাকার উপায় নেই। তবে এই কলম পৃথিবীতে আর কতদিন থাকবে তা নিয়ে আছে সংশয়। হয়তো একদিন আসবে যখন কলমকে প্রাচীন আমলের লেখার উপকরণ ধরবে সবাই। আর কম্পিউটারের বাটন বা স্ক্রিনে হাল্কা ছোয়া দিয়ে লেখা হয়ে যাবে লেখার উৎকৃষ্ট মাধ্যম। এছাড়াও মুখের কথা শুনে অটমেটিক লেখা উঠে আসার প্রক্রিয়াও জনপ্রিয়তা পাবে ভবিষ্যতে। তবে ইতিহাস থেকে যাবে। কলম পৃথিবীর শিক্ষার ক্ষেত্রে যে অবদান রেখে যাবে তা এক যুগান্তকারী অধ্যায়।

মিশরিয়রা প্রথম পেপাইরাসে লেখা শুরু করে। তখন কলম হিসেবে ব্যবহার করা হত খাগের কলম। খাগের কলম তৈরী হয়- খাগ বা নলখাগড়া, বাঁশ ইত্যাদির একদিক সরু করে কেটে। খাগের কলমের ব্যবহার শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দ থেকে। তারপর আর কলমের ইতিহাস থেমে থাকে নি। খ্রিস্টপূর্ব ১০০ অব্দের দিক থেকে ব্যবহার করা শুরু হয় কুইল বা খাগের কলম। কুইল কলম হচ্ছে- রাজহাঁস বা বড়সড় পাখির পালকের তৈরি কলম। এই কলমে পালকের ফাঁপা অংশ কালিদানি হিসেবে কাজ করত এবং কৈশিক পরিচলন প্রক্রিয়ায় কালির পরিচলন হত। মধ্যযুগে পার্চমেন্ট বা চামড়ার কাগজের উপরে কুইল দিয়ে লেখা হত। কুইল কলমগুলোর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা যায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। কুইল পেনের পর আসে নিবের কলম। নিব কলম গুলো সাধারণত কাঠের হাতলের সাথে একটি ধাতব নিব লাগিয়ে তৈরি করা হয়। নিবটি অনেকটা ঝর্ণা কলমের নিবের মতই, তবে এই কলমে কোন কালি জমা রাখার উপযোগী কালিদানি নেই এবং লেখার সময়ে বারবার এটিকে কালিতে চুবিয়ে নিতে হয়। ঝর্ণা কলমের তুলনায় এই কলমে সুবিধা হল এই কলমে ঘন কালি এবং ধাতব কালি ব্যবহার করা যায় যা ঝর্ণা কলমে জমে গিয়ে আটকে যায় অথবা মরিচা ধরে যায়। নিব কলম এখন প্রধানত অলংকরণ, ক্যালিগ্রাফি এবং কমিকস আঁকার কাজে ব্যবহার হয়।

এই গেল প্রাচীন কলমের কথা। এসব কলম এখন আর তেমন লেখার কাজে ব্যবহার করা হয় না।

এখন আমরা যে কলম গুলো ব্যবহার করে থাকি সেগুলো হল- বলপয়েন্ট কলম, রোলারবল বা জেল কলম, ঝর্না কলম এবং ফেল্ট টিপ কলম বা মার্কার কলম। তবে সাধারণত আমরা বলপয়েন্ট এবং জেল কলম দিয়েই লিখে থাকি।

ঝর্না কলম প্যারিসের এক ছাত্র Romanian Petrache Poenaru আবিষ্কার করেন যা ১৮২৭ সালে ফ্রেঞ্চ সরকার অনুমোদন দেন।

John J Loud ৩০ অক্টোবর ১৮৮৮ সালে বলপয়েন্ট কলম আবিষ্কারের জন্য পেটেন্ট পান। পরবর্তীতে বলপয়েন্ট কলমের ব্যাপক উন্নতি সাধন হয়।

টোকিও স্টেশনারী কোম্পানি ১৯৬০ সালে মার্কার পেন নিয়ে আসে বাজারে। জেল কলম বা রোলারবল কলম আসে ১৯৭০ সালের দিকে।

এই হচ্ছে কলমের ইতিহাস যা লিখলাম কলম বাদেই লেখার ভবিষ্যৎ জনপ্রিয় এক মাধ্যম দিয়ে।

বিষয়: বিবিধ

২০৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File