মলির জন্য; শিশু শ্রম এবং নির্যাতন বন্ধ চাই

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তাফিজ ফরায়েজী জেরী ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৬:৫৯:২৩ সন্ধ্যা



মিসেস সাহেদা বেগম। তিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী। তাহার স্বামী চাকুরী করেন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে। তাহার স্বামী এবং তিনি উভয়েই শিক্ষিত। তাহাদের একটি ৭ বছরের বাচ্চা আছেন। এই হচ্ছে তাহাদের পরিচয়। তাহাদের পরিচয় দিতে আমি গর্ববোধ করিতেছি।

একদিন একটা ঘটনা ঘটে গেল। আজব সেই ঘটনাটা হচ্ছে, তাদের একমাত্র ছোট ছেলে যে নাকি প্রতিদিন দুইটি ডিম আর হাফ লিটার দুধ খায়, তার হাত একটুখানি কেটে গেল। তার শরীরে রক্তের অভাব ছিল না। মাংসে আর রক্তে টইটুম্বুর একেবারে। তবু হল যেন লঙ্কা কান্ড। সাহেদা বেগম চিৎকার করলেন, ‘ডাক রে! ডাক রে! ডাক্তার ডাক। আমার ছেলের কি হল রে!’

সেই চিৎকার- তার স্বামী অফিস থেকেও শুনতে পায়। তার স্বামী তার সব কাজ ফেলে ছুটে চলে আসে ঘরে। পরক্ষনেই সে কি আয়োজন। কত জন ছুটল ফলের ডালা নিয়ে সে কথা বলতে গেলে পৃষ্ঠায় কুলাবে না।

আর একটা কথা, সে বাড়িতে এক দাসী বাস করত। তার বয়স ৮ কি ৯ হবে। তাতে কি? তাকে সব কাজ করতে হবে বড়দের মতই। আর খেতে দেওয়া হবে যা পড়ে থাকবে খাওয়া শেষে, কোন দিন যদি না পড়ে থাকে- তবে কিসের খাওয়া? দাসীর বয়স কম তাই ক্ষুধা সহ্য করতে পারে না। তার লোভ জন্মে খাবারের প্রতি। একদিন তো ফ্রিজ থেকে একটা মিষ্টিই বের করে খেয়ে ফেলল দাসীটি।

‘এত বড় সাহস! আমার ঘরে চোর। এটা কি করে মানি। আর আমি দেব ছাড়। দেখি তুই বাঁচিস কেমনে!’

দাসী ভয়ে জড়সড়। হাজার টাকার মিষ্টি খেয়েছে সে। তাও আবার দেয় না বলে ক্ষুধার জ্বালায়। এ তো বিরাট অপরাধ!

‘ঠাস! ঠুস! ঠাস! ঠাস! (গালে), টং টং টং (মাথায়)।’

হা! হা! হা! মনে হচ্ছে যেন বাদ্যযন্ত্র। তারপর গলা ধাক্কা দিয়ে, ‘দূর দূর দূর।’

বলি হে মাতা, তুমি যে কলঙ্কিত হয়ে রহিলে। যে তোমাকে সর্বক্ষণ তাহার সর্বস্ব চেস্টা দিয়ে সাহায্য করিল, তাহার প্রতি তোমার ক্ষীণ মমতা জন্মিল না। তাহাকে খেতে দিতে পর্যন্ত কার্পণ্য করিলে। একটা শখের খাবার খাওয়ার জন্য মারিলে। কোথায় মাতা তুমি, মমতাহীন কি মাতা হওয়া যায়?

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জেরী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

[প্রেক্ষাপট- সিলেটে ৮ বছরের মলিকে নির্মম নির্যাতন। ]

(DUTIMZ.com -এ প্রকাশিত।)

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File