দৃশ্যপটে ইয়াজুজ মাজুজ !!
লিখেছেন লিখেছেন বাচ্চা ছেলে ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৮:৩৩:৩৪ রাত
ইয়াজুজ মাজুজ যখন মুক্ত হবে তখন তারা জেরুজালেমে আসবে। জেরুজালেমে আসার পথে তারা গ্যালিলি হ্রদের পানি পান করবে। তাদের সর্বশেষ দল এসে দেখবে, সেখানে আর কোন পানি নেই। তারা বলবে, "এখানে একসময় পানি ছিল!" নিশ্চয়ই জানেন, গ্যালিলি হ্রদের পানি কমতে কমতে এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, গত সপ্তাহে সেখানে নাকি একটা দ্বীপ দেখা গেছে।
যদি জেরুজালেমে আসতে আপনাকে গ্যালিলি হৃদ পার হতে হয়, তবে আপনাকে উত্তর দিক হতে আসতে হবে। অর্থাৎ ইয়াজুজ মাজুজ মুক্ত হওয়ার পর উত্তর দিক থেকে আসবে। বুঝেছেন? এটা হলো ভূগোলবিদ্যা। সুতরাং জুলকারনাইন ইয়াজুজ মাজুজকে উত্তরের কোথাও বন্দী করেছিল। পবিত্র কোরান থেকে আমরা পাই, জুলকারনাইন তার যাত্রা শুরু করেছিল পশ্চিম দিকে। পশ্চিমে সে কোথাও বাঁধাপ্রাপ্ত হয় যেখানে সে তার প্রথম যাত্রা শেষ করে।
পশ্চিমে দুটি সাগর রয়েছে। একটি ভূমধ্যসাগর, অন্যটি কৃষ্ণসাগর। ভূমধ্যসাগরের সৈকতে আপনি পা ডোবালে তা দেখতে পাবেন। কিন্তু কৃষ্ণসাগরের নাম কৃষ্ণ কেন? কারণ সেখানে কালো আস্তরণের জন্য আপনি পরিষ্কার দেখতে পাবেন না। পবিত্র কোরান "কালো, কর্দমাক্ত জল" দ্বারা কৃষ্ণসাগরের কথাই বলছে যার পূর্বদিকে হলো কাস্পিয়ান সাগর আর উত্তরে ককেশাস পর্বতশ্রেণী। ককেশাস পর্বতের মাঝে দারিয়াল জরজ (Daryal Gorge), যেখানে জুলকারনাইনের দেয়াল ছিল। এখনো কী সেখানে ইয়াজুজ মাজুজ বন্দী? না। কারণ, আমরা পবিত্র কোরান থেকে পাই, ইয়াজুজ মাজুজ ব্যতীত ইহুদিদের জেরুজালেমে প্রত্যাবর্তন সম্ভব ছিল না। আর রাসুলুল্লাহ (সা) তাঁর স্ত্রী জয়নাবকে বলে গিয়েছিলেন, ইয়াজুজ মাজুজের দেয়ালে ফুঁটো সৃষ্টি হয়েছে আর ইয়াজুজ মাজুজরা আরবদের ধ্বংসের কারণ হবে। জয়নাব (রা) জিজ্ঞাসা করেছিলেন, যদি আরবদের মধ্যে ন্যায়পরায়ণ লোক থাকে, তবুও ধ্বংস হবে? রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছিলেন, তবুও ধ্বংস হবে।
তার মানে আরবদের এই ধ্বংস শাস্তি হিসেবে নয়, অন্য কারণে। আর সেটা হলো বিসর্জন। এই জন্যই নবী ইব্রাহীম (আ) স্বপ্নে ইসমাইল (আ) কে আল্লাহর রাস্তায় কুরবানি করার আদেশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ইসমাইল (আ) আরবজাতিকে রিপ্রেজেন্ট করছে। ইয়াজুজ মাজুজরা আরবদের কখন ধ্বংস করবে? রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যখন রাবিশরা অধিক প্রভাবশালী হবে।
আমরা জানি, রাবিশের মধ্যে অন্যতম হলো ফালতু হারাম কাগুজে মুদ্রা। আমরা এও জানি, একদিন আরবরা ছিল জ্ঞানে গরিমায় চরিত্রে সোনার মানুষ। তাদের নৈতিকতা দেখে, তাদের আদর্শ দেখে, তাদের সাহস ও সততা দেখে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মানুষ অনুপ্রাণিত হত। আর আজকের আরব হলো ঝুলি কাঁধে ঝুলিয়ে ইউরোপের সীমান্তে সীমান্তে দিনাতিপাত করা ভ্যাগাবন্ড।
ইয়াজুজ মাজুজ কর্তৃক আরবদের ধ্বংস এখন দোড়গোড়ায়। ইয়াজুজ মাজুজ হলো ইহুদি-খ্রিস্ট জায়োনিস্ট এলায়েন্স। এখন, অনারব মুসলিমদের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশী। যখনই তারা দেখবে মালহামা শুরু হয়েছে এবং পশ্চিমা সভ্যতা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে, আমার অনুরোধ থাকবে পাকিস্তানসহ অনারব মুসলিম আলেমদের প্রতি যে, আপনারা তৎক্ষণাৎ খিলাফত রাস্ট্র গঠন করতে এগিয়ে আসবেন। ইহুদিরা তাদের খিলাফত রাস্ট্র গঠন করতে কাজ করছে। আপনি জানেন কী? হ্যাঁ, ইজরায়েল খিলাফত রাস্ট্র গঠন করতে কাজ করছে। যদিও সেটা তাদের বোগাস খিলাফত রাস্ট্র।
কুরআন ও হাদীছ থেকে ইয়াজুয-মা’জুয সম্পর্কে যা জানা যায়:
আল্লাহর দু’জন সৎ বান্দা সমগ্র পৃথিবীর বাদশা হয়েছিলেন। একজন হলেন আল্লাহর নবী সুলায়মান ইবনে দাউদ (আঃ) আর অন্যজন যুল-কারনাইন। যুলকারনাইন বাদশা পূর্ব-পশ্চিম প্রান্তসহ সমগ্র পৃথিবী পরিভ্রমণ করেছিলেন। কুরআন মাজীদের সূরা কাহাফে তাঁর ভ্রমণ কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। তাঁর ভ্রমণের কাহিনীর এক পর্যায়ে ইয়াজুয-মা’জুযের বিবরণ এসেছে।
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
“অতঃপর তিনি পথ অবলম্বন করলেন। চলতে চলতে তিনি যখন দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছলেন তখন তথায় এমন এক জাতির সন্ধান পেলেন যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না। তারা বলল, হে যুল-কারনাইন! ইয়াজুয ও মা’জুয পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা কি আপনাকে বিনিময়স্বরূপ কর প্রদান করবো এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মাঝখানে একটি প্রচীর নির্মাণ করে দিবেন? যুল-কারনাইন বললেন, আমার প্রভু আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছেন তাই যথেষ্ট। তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মাঝখানে একটি মজবুত প্রাচীর তৈরী করে দিবো। তোমরা লোহার পাত নিয়ে আসো। অতঃপর যখন দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকাস্থান পূর্ণ হয়ে লৌহ স্তুপ দুই পর্বতের সমান হলো তখন যুল-কারনাইন বললেন- তোমরা ফুঁক দিয়ে আগুন জ্বালাও। যখন ওটা আগুনে পরিণত হলো তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা আনয়ন কর ওটা আগুনের উপরে ঢেলে দেই। এভাবে প্রচীর নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ইয়াজুয ও মাজুয তা অতিক্রম করতে পারলো না এবং তা ছিদ্র করতেও সক্ষম হলো না। যুল-কারনাইন বললেন, এটা আমার প্রভুর অনুগ্রহ । যখন আমার প্রভুর ওয়াদা পূরণের সময় (কিয়ামত) নিকটবর্তী হবে তখন তিনি প্রাচীরকে ভেঙে চুরমার করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন। আমার প্রতিপালকের ওয়াদা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। সেদিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দেবো দলের পর দলে সাগরের ঢেউয়ের আকারে। এবং শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সকলকেই একত্রিত করব” । [সূরা কাহাফ ১৮: ৯২-৯৯]
আখেরী যামানায় কিয়ামতের পূর্বে পাহাড় ভেদ করে ইয়াজুয ও মা’জুযের আগমন সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা অন্যত্র বলেন:
“এমন কি যখন ইয়াজুয ও মা’জুযকে মুক্ত করা হবে তখন তারা প্রত্যেক উঁচু ভূমি থেকে দলে দলে ছুটে আসবে। যখন সত্য প্রতিশ্রুতি নিকটর্তী হবে তখন কাফেরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। তারা বলবে- হায়! দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম এ বিষয়ে উদাসীন; বরং আমরা ছিলাম যালিম”। (সূরা আম্বীয়া ২১ : ৯৬-৯৭)
সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফে যায়নাব বিনতে জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, “একদা নবী (ছাঃ) তাঁর নিকটে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে প্রবেশ করলেন। তিনি বলছিলেনঃ আরবদের জন্য ধ্বংস! একটি অকল্যাণ তাদের অতি নিকটবর্তী হয়ে গেছে। আজ ইয়াজুয-মা’জুযের প্রাচীর এই পরিমাণ খুলে দেয়া হয়েছে। এ কথা বলে তিনি হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী ও তার পার্শ্বের আঙ্গুল দিয়ে বৃত্ত তৈরি করে দেখালেন। যায়নাব বিনতে জাহশ্ (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূল (ছাঃ) কে বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল আমাদের মাঝে সৎ লোক থাকতেও আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? নবী (ছাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচার বেড়ে যাবে”। (সহীহুল বুখারী: অধ্যায়-কিতাবুল আম্বীয়া)
ইয়াজুয-মা’জুয কখন বের হবে?
কুরআনের বর্ণনা থেকে যা জানা যায়, তাহলো কিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে তারা মানব সমাজে চলে এসে ব্যাপক অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। “ইয়াজুয-মা’জুয প্রাচীরের ভিতর থেকে বের হওয়ার জন্য প্রতিদিন খনন কাজে লিপ্ত রয়েছে। খনন করতে করতে যখন তারা বের হওয়ার কাছাকাছি এসে যায় এবং সূর্যের আলো দেখতে পায় তখন তাদের নেতা বলে, ফিরে চলে যাও, আগামীকাল এসে খনন কাজ শেষ করে সকাল সকাল বের হয়ে যাব। আল্লাহ তা’আলা রাত্রিতে প্রাচীরকে আগের চেয়ে আরো শক্তভাবে বন্ধ করে দেন। প্রতিদিন এভাবেই তাদের কাজ চলতে থাকে। অতঃপর আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদ যখন শেষ হবে এবং তিনি তাদেরকে বের করতে চাইবেন তখন তারা খনন করবে এবং খনন করতে করতে যখন সূর্যের আলো দেখতে পাবে তখন তাদের নেতা বলবে, ফিরে চলে যাও। ইনশা-আল্লাহ আগামীকাল এসে খনন কাজ শেষ করে সকাল সকাল বের হয়ে যাবো। এবার তারা ইনশা-আল্লাহ বলবে। অথচ এর আগে কখনো তা বলেনি। তাই পরের দিন তিনি এসে দেখবে যেভাবে রেখে গিয়েছিল সেভাবেই রয়ে গেছে। তখন অতি সহজেই তা খনন কাজ সম্পন্ন করে মানব সমাজে বের হয়ে আসবে। তারা পৃথিবীর নদী-নালার সমস্ত পানি পান করে ফেলবে। এমনকি তাদের প্রথম দল কোন একটি নদীর পাশে গিয়ে নদীর সমস্ত পানি পান করে শুকিয়ে ফেলবে। পরবর্তী দলটি সেখানে এসে কোন পানি দেখতে না পেয়ে বলবেঃ এখানে তো এক সময় পানি ছিল। তাদের ভয়ে লোকেরা নিজ নিজ সহায়-সম্পদ নিয়ে অবরুদ্ধ শহর অথবা দুর্গের মধ্যে প্রবেশ করবে। ইয়াজুয-মা’জুযের দল যখন পৃথিবীতে কোন মানুষ দেখতে পাবেনা তখন তাদের একজন বলবে যমিনের সকল অধিবাসীকে খতম করেছি। আকাশের অধিবাসীরা বাকী রয়েছে। এই বলে তারা আকাশের দিকে তীর নিক্ষেপ করবে। রক্ত মিশ্রিত হয়ে তীর ফেরত আসবে। তখন তারা বলবে যমিনের অধিবাসীকে পরাজিত করেছি এবং আকাশের অধিবাসী পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। অতঃপর আল্লাহ তাদের ঘাড়ে ‘নাগাফ’ নামক এক শ্রেণীর পোকা প্রেরণ করবেন। এতে এক সময়ে একটি প্রাণী মৃত্যু বরণ করার মতই তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আল্লাহর শপথ! তাদের মরা দেহ এবং চর্বি ভক্ষণ করে যমিনের জীব-জন্তু ও কীটপতঙ্গ মোটা হয়ে যাবে এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে”। [সুনান ইবনু মাজাহ্-হা: ৪০৮০, হাদীসটি সহীহ; জামি’আত তিরমিযী, ইবনে হিব্বান ও মুস্তাদরাকে হাকেম; সিলসিলায়ে সহীহা, হা:১৭৩৫]
তবে নির্দিষ্টভাবে তাদের আগমন হবে ঈসা (আঃ)-এর আগমন এবং দাজ্জালকে পরাজিত করার পর। নবী (সাঃ) বলেন: “অতঃপর ঈসা (আঃ) এর নিকট এমন কিছু লোক আসবেন, যাদেরকে আল্লাহ তা,আলা দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাযত করেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বুলাবেন এবং বেহেশতের মধ্যে তাদের উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে সংবাদ দিবেন। ঈসা (আঃ) যখন এ অবস্থায় থাকবেন তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে জানাবেন যে, আমি এমন একটি জাতি বের করেছি, যাদের সাথে মোকাবিলা করার ক্ষমতা কারো নেই। কাজেই আপনি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে তুর পাহাড়ে উঠে যান। এ সময় আল্লাহ তা’আলা ইয়াজুয-মাজুযের বাহিনী প্রেরণ করবেন। তারা প্রত্যেক উঁচু ভূমি থেকে বের হয়ে আসবে। তাদের প্রথম দলটি ফিলিস্তীনের তাবারীয়া জলাশয়ের সমস্ত পানি পান করে ফেলবে। তাদের শেষ দলটি সেখানে এসে কোন পানি না পেয়ে বলবেঃ এক সময় এখানে পানি ছিল। তারা আল্লাহর নবী ও তার সাথীদেরকে অবরোধ করে রাখবে। ঈসা (আঃ) ও তার সাথীগণ প্রচন্ড খাদ্যাভাবে পড়বেন। এমনকি বর্তমানে তোমাদের কাছে একশত স্বর্ণ মুদ্রার চেয়ে তাদের কাছে একটি গরুর মাথা তখন বেশী প্রিয় হবে। আল্লাহর নবী ঈসা ও তাঁর সাথীগণ এই ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন। আল্লাহ তাদের দু’আ কবূল করে ইয়াজুয-মা’জুযের ঘাড়ে ‘নাগাফ’ নামক একশ্রেণীর পোঁকা প্রেরণ করবেন। এতে এক সময়ে একটি প্রাণী মৃত্যু বরণ করার মত তারা সকলেই হালাক হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহর নবী ঈসা ও তার সাহাবীগণ যমিনে নেমে এসে দেখবেন ইয়াজুয-মাজুযের মরা–পচা লাশ ও তাদের শরীরের চর্বিতে সমগ্র যমিন ভরপুর হয়ে গেছে। কোথাও অর্ধহাত জায়গাও খালি নেই। আল্লাহর নবী ঈসা ও তাঁর সাথীগণ আল্লাহর কাছে আবার দু’আ করবেন। আল্লাহ তাদের দু’আ কবূল করে উটের গর্দানের মত লম্বা লম্বা একদল পাখি পাঠাবেন। আল্লাহর আদেশে পাখিগুলো তাদেরকে অন্যত্র নিক্ষেপ করে পৃথিবীকে পরিষ্কার করবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। এতে পৃথিবী একেবারে আয়নার মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। [সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান, হা: ১১০/২৯৩৭]
ইয়াজুয-মা’জুয ধ্বংসের পর পৃথিবীর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য :
প্রাচীরের অপর প্রান্ত হতে বের হয়ে এসে ইয়াজুয-মা’জুয যখন পৃথিবীতে বিপর্যয় ও অশান্তি সৃষ্টি করবে, অকাতরে গণহত্যা চালাবে এবং ধন-সম্পদ ও ফসল-ফলাদি ধ্বংসের কাজে লিপ্ত হবে তখন আল্লাহর নবী ঈসা (আঃ) এই মহাবিপদ থেকে মুসলমানদেরকে উদ্ধার করার জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন। কারণ তারা সংখ্যায় এত বেশী এবং তাদের আক্রমণ এত প্রচন্ড হবে যে, তাদের সাথে মোকাবিলা করার মত মুসলমানদের কোন শক্তি থাকবেনা। আল্লাহ তা,আলা তাঁর দু’আ কবুল করে ইয়াজুয-মাজুযের উপরে ছোট ছোট এক ধরনের পোঁকা প্ররণ করবেন। পোঁকাগুলোর আক্রমণে এই বাহিনী সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের মরা-পঁচা দেহে এবং দুর্গন্ধে যমিন ভরপূর হয়ে যাবে এবং তাতে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এতে নতুন এক সমস্যার সৃষ্টি হবে। দ্বিতীয়বার আল্লাহর নবী ঈসা (আঃ) আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন। আল্লাহ তাঁদের দু’আ কবূল করে উটের গর্দানের মত লম্বা লম্বা এক দল পাখি পাঠাবেন। আল্লাহর আদেশে পাখিগুলো তাদেরকে সাগরে নিক্ষেপ করে পৃথিবীকে পরিষ্কার করবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। এতে পৃথিবী একেবারে আয়নার মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা যমিনকে ফসল-ফলাদি উৎপন্ন করার আদেশ দিবেন। যমিন সকল প্রকার ফল ও ফসল উৎপন্ন করবে। ফলগুলো এত বড় হবে যে, একটি ডালিম এক দল মানুষের জন্য যথেষ্ট হবে। লোকেরা ডালিমের খোসার নিচে ছায়া গ্রহণ করতে পারবে। দুধে বরকত দেয়া হবে। একটি উটের দুধ সেদিন কয়েকটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে, একটি গাভীর দুধ একটি গোত্রের লোকের জন্য যথেষ্ট হবে এবং একটি ছাগলের দুধ এক পরিবারের সকলে জন্য যথেষ্ট হবে। [সহীহ মুসলিম-অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান, হা: ১১০/২৯৩৭]
মোটকথা, মানুষের মাঝে তখন চরম সুখ-শান্তি বিরাজ করবে। কোন প্রকার অভাব-অনটন থাকবেনা। সকল বস্তুতে আল্লাহর তরফ থেকে বরকত নাযিল হবে। আল্লাহর ইচ্ছায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে। কতই না সুন্দর হবে তখনকার মানুষের জীবন ব্যবস্থা!
বিষয়: বিবিধ
২৭৭৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বড় বিধায় যে কোন একসময় পড়ে নিব। ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন