!! যথাযথ সচেতনতা ও প্রস্তুতি ভুমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে !! জেনে রাখা অনেক ভালো -
লিখেছেন লিখেছেন বাচ্চা ছেলে ০৭ মে, ২০১৫, ০৮:১৭:১৮ রাত
ভুমিকম্পনের সময় করণীয়-
১. ভুকম্পন অনুভূত হলে শান্ত থাকুন; আল্লাহকে স্মরন করুন ও সম্ভব হলে উচ্চস্বরে আজান দিন। আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করবেন না কিংবা তাৎক্ষনিকভাবে বাড়ি থেকে বের হবার চেষ্টা করবেন না।
২. ভুমিকম্পের সময় বিছানায় থাকলে, বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে নিন; অতঃপর টেবিল, ডেস্ক বা শক্ত কোন আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন এবং তা এমনভাবে ধরে থাকুন যেন মাথার উপর থেকে সরে না যায়। এছাড়া শক্ত দরজার চৌকাঠের নিচে ও পিলারের পাশে আশ্রয় নিতে পারেন।
৩. বারান্দা, ব্যালকনি, জানালা, বুকশেল্ফ, আলমারি, কাঠের আসবাবপত্র, বার্ধানো ছবি বা কোন ঝুলন্ত ভারি বস্তু থেকে দূরে থাকুন।
৪. রান্না ঘরে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসুন। বাড়ির বিদ্যুতের মূল সংযোগ সম্ভব হলে বিচ্ছিন্ন করুন ও গ্যাসের চাবি বন্ধ করুন।
৫. লিফট ব্যবহার করবেন না।
৬. উঁচু বাড়ির জানালা, বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেবেন না।
৭. ঘরের বাহিরে থাকলে গাছ, উঁচু বাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে খোলাস্থানে আশ্রয় নিন।
৮. জনাকীর্ন ঘরে (যেমন- গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী, হাসপাতাল, সিনেমা হল, মার্কেট, স্কুল-কলেজ) থাকলে বাহিরে বের গওয়ার জন্য দরজার সামনে ভিড় কিংবা ধাক্কাধাক্কি করবেন না। পণ্য সামগ্রীর শেল্ফ থেকে দূরে আশ্রয় নিন এবং দুই হাত মাথা ঢেকে বসে পড়ুন।
৯. গাড়িতে থাকলে ওভারব্রীজ, ফ্লাইওভার. গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামান। ভুকম্পণ- না থামা পর্যন্ত গাড়ির ভেতরেই থাকুন।
১০. ভাঙ্গা দেওয়ালের নীচে চাপা পড়লে বেশি নড়া-চড়ার চেষ্টা করবেন না। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন যাতে ধুলোবালি শ্বাসনালিতে না ঢোকে। সম্ভব হলে দেয়ালের পাশে সরে আসুন এবং উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করুন। শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে উচ্চস্বরে চিৎকার করুন। খেয়াল রাখবেন, এ সময় যাতে শ্বাসযন্ত্রে ধুলোবালি প্রবেশ না করে।
(ভুমিকম্প সাধারনত ৩০-৪০ সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং তা আমাদের বুঝতেই ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড চলে যায়। ভুমিকম্পের সময় তাই ভবন থেকে দৌড়ে বের হওয়া খুবই ঝুকিপূর্ণ)
ভূমিকম্প পরবর্তীকালে করণীয়-
১। একবার কম্পন হওয়ার পর আবারো কম্পন হতে পারে। তাই প্রথমবার অনুভূত কম্পন থেমে যাওয়ার পর ঘর থেকে সিঁড়ি দিয়ে সারিবদ্ধভাবে বের হয়ে খালি জায়গায় আশ্রয় নিন।
বৈদ্যুতিক/টেলিফোনের খুটি ও তার, উঁচু দেয়াল ও ভবন থেকে দূরে থাকুন।
২। গ্যাস বা অন্য কোন রাসায়নিক দ্রব্যের গন্ধ পেলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
৩। জরুরী তথ্য পাওয়ার জন্য রেডিও ব্যবহার করুন।
৪। কেউ অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
৫। উদ্ধার কাজে তৎপর সংস্থাসমূহকে সহযোগীতা করুন।
উদ্ধারের ক্ষেত্রে শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিন।
(মনে রাখবেন, একটি ভূমিকম্পের পর আরও ভূকম্পন হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ভবন, ব্রীজ ও বিভিন্ন অবকাঠামো থেকে দূরে থাকুন। কারণ পরবর্তী ভূকম্পনে সেগুলো ধ্বসে যেতে পারে।)
ভূমিকম্প মোকাবেলায় নিজেকে প্রস্তুত রাখুন-
১। বাড়ি নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড মেনে চলুন।
২। গ্যাস, বিদ্যুত ও পানি সরবরাহের সংযোগ ঝুঁকিমুক্ত কি-না তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। এগুলো বাড়ি/বাসার কোথায় অবস্থিত এবং কিভাবে বন্ধ করতে হয় তা সকলকে জানিয়ে রাখুন।
৩। জরুরী অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার সম্ভাব্য একাধিক পথসহ বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গা পরিবারের সকলকে দেখিয়ে রাখুন।
৪। ঘরের ভারি আসবাবপত্র (যেমন- আলমারি, শেল্ফ, ফুলের টব, ফ্যান, ছবির ফ্রেম ইত্যাদি) যাতে ভুমিকম্পে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য যথাসম্ভব পেছন থেকে আংটা লাগিয়ে দেয়ালের সাথে আটকিয়ে রাখুন।
৫। ভারি ও ভঙ্গুর জিনিসপত্র শেলফের নিচের তাকে রাখুন। ফায়ার স্টেশন, হাসপাতাল/ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবাসমূহের টেলিফোন নম্বর বাড়ির প্রকাশ্য স্থানে রাখুন যেন তা সকলে দেখতে পারে।
৬। বহুতল ভবন/মার্কেট/হোটেল/বিদ্যালয়ের সিঁড়ি প্রশস্ত করুন ও জরুরি দরজা ও সিঁড়ি ব্যবস্থা রাখুন।
৭। ভূমিকম্পকালীন আত্মরক্ষার স্বার্থে ঘরে সবসময়ের জন্য রেডিও, বাশি, টর্চ লাইট, হাতুড়ি, হেলমেট, কুড়াল ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামসমূহ একটি ব্যাগে মজুদ রাখুন।
বিষয়: বিবিধ
২০৬৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার পরামর্শগুলো খুব উপকারী এবং খু ভালো লেগেছে।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
কারণ বন্যা , ঘূর্নিঝড় , সুনামি , খরা ...এসবের জন্য আগে থেকে সতর্ক করা যায় এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া যায় । এজন্য আগে ঘূর্নিঝড়ে উপকূল সমুহে যে পরিমান প্রানহানী হত এখন সেটা মাশা আল্লাহ অনেক কমে এসেছে।
ভূমিকম্প বাংলাদেশের(সারা পৃথিবীর জন্যও) জন্য খুবই অশনী সংকেত কারণ বাংলাদেশের বড় বড় শহর দুটির অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং মারাত্মক ঘিন্জি পরিবেশ । এটার জন্য আগে থেকেই পূর্বাভাস করা যায় না কারণ এর উতপত্তিস্থল ভূঅভ্যন্তরে । সারা পৃথিবীতে ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্র ভালই একটিভেট থাকলেও বাংলাদেশে সেটা থাকে নষ্ট (সরকার কা মাল দরিয়া মে ডাল) । বাংলাদেশে কি মাত্রায় হল সেটা জানতে আরেক দেশের সাহারা নিতে হয় ।
মাত্র ৩০-৬০ সেকেন্ডে এটার ব্যাপক বিধ্বংস করার ক্ষমতা আচে। এবং রিয়েক্ট টাইমও অল্প , ততক্ষনে যা হবার তা হয়ে যাচ্ছে।
যেহেতু ভূমিকম্পে বড় বড় দালালগুলোই বেশী এফেক্টেড হয় তাই কোন দালান যাতে ২-৩ তলার বেশী না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে ।
কিন্তু আধুনিক সভ্যতাতে বড় বড় দালানই তো হচ্ছে আভিজাত্যের লক্ষণ।
তাই ''বড় বড় দালান করব আবার ভুমিকম্প থেকে রেহাই পাব'' - এটা গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি দেবার মত ব্যাপার ।
আল্লাহর উপরে নিজেকে সপে দিলাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন