ইমানদারির সাথে দায়িত্ব পালন করবে বলাই কি অপরাধ !!
লিখেছেন লিখেছেন বাচ্চা ছেলে ১৯ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:২০:০১ বিকাল
টাইগার নামের এক ভাই প্রচুর খেমতা তার। এলাকার লোকজন তার উপর চরম ক্ষেপা। কেননা তার অত্যাচারে নিষ্পেষিত সাধারন মানুষ। একদিন কি হলো? টাইগার ভাইয়ের চাকুরী হয়ে গেলো পুলিশে। ঠিক পুলিশে না পুলিশের সাহায্যকারী হিসেবে। ইংরেজিতে বলা হয় অক্সিলিয়ারী ফোর্স। এলাকার লোকজন তো আরো মহা বিরক্ত। এবার না জানি টাইগারের কি রুপটাই তাদের দেখতে হয়।
দেশে বিদ্রোহ বিক্ষোভের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছিলো সরকারকে। সরকার তাই সিদ্ধান্ত নিলো সাধারন মানুষকে সাথে নিয়ে সেই বিদ্রোহ দমন করবে। এই নিমিত্তেই তারা কিছু ফোর্স নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করলো।
সেই ফোর্সে অসংখ্যা টাইগার যুক্ত হলো। তারা চালাতে থাকলো বিদ্রোহীদের উপর স্টিম রোলার। বিতর্কিত হতে থাকলো সরকার কেননা টাইগারদের ঠিকমত বাদ বিচার না করেই চাকুরীতে বহাল করেছে। আর পরিস্থিতি এমন যে তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশন নেবারও কোন সুবিধাজনক সময় ছিলো না তখন।
এদিকে এই ফোর্সকে ঈমানদারীর সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানায় কিছু রাজনীতিবীদ এবং সেটা তারা করে থাকে দেশের কল্যানের স্বার্থেই। বিদ্রোহ কঠিন পর্যায়ে পৌছায়। বাহিরের আমদানী করা বিদ্রোহীরাও যুক্ত হয় দেশীও বিক্ষোভকারীদের সাথে। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে শেষ মেষ সরকারের পতন ঘটে।
এবার শুরু হলো সরকারের ভিতরে যারা বিদ্রোহকে দমন করতে অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন করেছে তাদের বিচার এবং যারা তাদেরকে সাহায্য করেছে তাদেরও। অর্থাৎ টাইগাররাও এবার শেকল পড়তে যাচ্ছে।
কিন্তু হলো কি টাইগারদের যারা বলেছিল তোমরা ঈমানের সহিত দায়িত্ব পালন করো তাদেরই বিচার শুরু হলো। যারা অত্যাচার নির্যাতন করলো তারা মাফ পেয়ে গেলো কি এক অজানা কারনে।
এখন প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট কোন বাহিনীকে সঠিকভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করার কথা জানানোর পর সেই বাহিনীর কোন সদস্য যদি কোন অপরাধ করে তার জন্য যিনি এই আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি কি ঐ অপরাধের জন্য দায়ী হতে পারেন? না। ধরুন, বর্তমান পুলিশ বাহিনী এটি আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি বাহিনী এবং পুলিশের প্রধান আই,জি সাহেব যদি এই পুলিশদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলেন এবং পরবর্তীতে ঐ পুলিশের কোন সদস্য যদি কাউকে ক্রস ফায়ারে বা নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করে তাহলে এই অপরাধের জন্য আই,জি সাহেবের বক্তৃতাকে দায়ী করা যাবে কি? অবশ্যই না।
প্রসঙ্গত, রাজাকার অর্ডিন্যান্সের কোথাও রাজাকারদের মানবতাবিরোধী অপরাধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়নি, অধিকারও দেয়া হয়নি বরং আইনের ভাষ্য অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকা। এরূপ বাহিনীকে ঈমানদারীত্বের সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে বলেছিলেন তৎকালীন জামায়াতের কিছু নেতা। এটা কি কোন অপরাধ হতে পারে? যদি এর কোন সদস্য কোন অপরাধ করে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যই দায়ী হবে, যিনি তাকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি দায়ী হতে পারেন না। কিন্তু দায়ী করা হচ্ছে তাকে, যে তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এভাবেই চলছে আমাদের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য। ভবিষ্যতে জাতি যখন জানতে পারবে এভাবে বিচারকার্য পরিচালনা হয়েছে, মাফ পাবে না কেউই।
বিষয়: বিবিধ
১০১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন