এক তুহিন মালিক ও পিয়াস করিমে নাস্তানাবুদ সরকার
লিখেছেন লিখেছেন বাচ্চা ছেলে ১৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:৪৫:৩০ দুপুর
এক তুহিন মালিক ও পিয়াস করিমে নাস্তানাবুদ সরকার। বাসা বাড়ি ও তাদের উপর হামলাও হয়েছিল কিন্তু কেন? জেনে নেয়া যাক -
দুই দশক যাবৎ সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় জড়িত। মালিক ল’অ্যাসোসিয়েটস এর প্রতিষ্ঠাতা। বাবা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক। ব্রিটেনের অ্যাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
মেয়াদীত্তির্ণ সরকার প্রসঙ্গে ড. তুহিন মালিক মন্তব্য করেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।
তার কাছ থেকে আরো কিছু গবেষনালব্দ মতামত আসে, ২৭ তারিখের পর বর্তমান সংসদের অধিবেশন অবৈধ। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের পদ সংবিধানবিরোধী। চালাকি করতে গিয়ে ফেঁসে গেছে সরকার। ৪৯ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে তার লিগ্যাল নোটিশ। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশেই সংবিধানের এত বড় বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে আপিল করলেই আবদুল হামিদের প্রেসিডেন্ট পদ চলে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সরকার সংবিধানকে বিকৃত করছে।
তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামকে বিপরীত প্রান্তে দাড় করিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশে যেই ইসলামের কথা বলবে সেই রাজাকার। আল্লামা সাঈদীর রায়ের চুলচেড়া বিশ্লেষণ ও মধ্যযুগীয় বর্বরতা শীর্ষক প্রগতীশীল মহল থেকে একটি হুজুগ সম্পর্কে তিনি বলেন, সভ্যতার উতকর্ষ মধ্যযুগেই হয়েছে।
বর্তমান অস্থিতিকর সময়ের সমাধান দিতে গিয়ে তুহিন মালিক বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী একদলীয় মনোভাব থেকে সরলে ৫ মিনিটে সমাধান।
গার্মেন্টস খাত ধ্বংসের পায়তারা এবং সঠিক পরিচর্যা হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইমেজ তৈরি করতে পারেনি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তরা। রক্তের দাগ দিয়ে কাপড়ের ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক নেতারাই যে সুশাসন চান না তার কারন হিসেবে তুলে ধরেন, সুশাসনই রাজনৈতিক দলগুলোর বড় প্রতিপক্ষ।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়েও অনেক কিছু বলেন তিনি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, প্রতারনা দিয়েই রাজনিতি শুরু করল জয়। ইনুর আঙ্গুল হলো ১২টা, ২ টা শুধুই খোচা দেওয়ার জন্য।
নারী এমপিদেরও তিনি এক হাত নিয়েছেন। সংসদে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা প্রসঙ্গে বলেন, এমপিদের পেস্ট-এর বদলে হারপিক ব্যবহার করা উচিৎ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দুদক এর চেয়ারম্যান সরকারের গোলামী করছে এই প্রসঙ্গে বলেন, তার বাপ তার নাম ঠিকই রেখেছেন গোলাম দুদক।
পিয়াস করিম। একজন রাজনৈতিক সচেতন শিক্ষিত স্বজ্জন মানুষ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর। বিভিন্ন সময় সেমিনার টিভি টক শো’তে বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেন। দেশের আশু অবস্থা সম্পর্কে তার কিছু উল্লেখযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার প্রয়াস নেয়া হলো।
আসুন জেনে নেয়া যাক তিনি কেন কিছু মানুষের কাছে এতই অপ্রিয় -
রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রনায়ক প্রসঙ্গে পিয়াস করিম বলেন, মিথ্যাচারের ওপর রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে। মিথ্যাবাদীদের রাস্ট্র পরিচালনায় থাকা উচিত নয়।
সংবিধানের অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, মানুষের জন্য সংবিধান, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। সরকার যেটা করছে সেটা একদমই ঠিক হচ্ছে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়। আপস করলেই ১৮ দলের রাজনৈতিক মৃত্যু, সরকারের সাথে আপস হবে বিএনপির রাজনৈতিক আত্মহত্যা।
পুলিশ প্রশাসন সম্পর্কে কিছু অপ্রিয় সত্য কথা বলেন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, পুলিশি সন্ত্রাসে মানবাধিকার লঙ্ঘিত। পুলিশি সন্ত্রাস নয়, এটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। গণহত্যায় হাত পাকাচ্ছে পুলিশ, মানুষ হত্যার ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে পুলিশকে। বিগত পাঁচ বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যে সকল লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড খুঁজলে দেখা যাবে সবাই ছাত্রলীগ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য অনৈতিকভাবে একটি দলের হয়ে কাজ করছেন, মনে রাখবেন ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী।
পিয়াস করিমের বাসায় হামলা, দারোয়ানকে গুলি (প্রথম আলো), 'অনবরত হত্যার হুমকিতে উদ্বিগ্ন নই: আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত যেন সত্য বলে যেতে পারি'।
বিরোধীদলের উপর সরকারের জুলুম নির্যাতন প্রসঙ্গে বলেন, গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে বিএনপির প্রয়োজন রয়েছে। আ.লীগ মনঃস্তাত্ত্বিক খেলা খেলছে। বিরোধীদলের শীর্ষনেতাদের গ্রেফতার করে সরকার নিন্দনীয় কাজ করেছে। বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার সংকট আরো ঘনীভূত করবে।
বর্তমান মিডিয়ার দায়িত্ব প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের মিডিয়া তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যার্থ হয়েছে।
আ.লীগ নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, 'মোহাম্মদ নাসিম ভূতের ভয়ে গান গাইছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটা অপদার্থ-অযোগ্য-কা-জ্ঞানহীন লোক।তথ্যমন্ত্রী 'বিশ্ব-বাচাল', ইনুর ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্যতাও নেই।
মুক্তিযুদ্ধ চেতনা এসব কথা যখন লীগের নেতারা প্রায়শই বলে বেড়ান তখন পিয়াস করিম সাহেব সেই সব নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সুরঞ্জিত সাহেব কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন?
আশু পরিস্থিতি সমাধানকল্পে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রাতের পর রাত বলছি সমঝোতা করার জন্য এবং দেশের উন্নতীকল্পে জাতীয় পুঁজি বিকাশের অর্থনীতি চালুর প্রস্তাব রাখেন।
বিষয়: রাজনীতি
১৬২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন