আকাশের নির্ধারিত অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইহুদি জাতি
লিখেছেন লিখেছেন ফারুক ফেরদৌস ২২ জুলাই, ২০১৪, ০৮:৪১:৩৯ রাত
হাদিসে কেয়ামতের আগে ইহুদিদের উপর একটি গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। বলা হয়েছে গাছ পাথরও মুসলমানদের ডেকে ডেকে বলবে আমার পেছনে একজন ইহুদি লুকিয়ে আছে, ওকে হত্যা করো। এই হাদিসগুলো পড়ার সময় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে, একটি বিশেষ ধর্মের মানুষকে শুধু তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণেই হত্যা করা হবে কেন? শুধু কোন ধর্মের অনুসারী হওয়ার কারণে কাউকে হত্যার অনুমোদন কি মানুষের ন্যায়বোধ বা ইসলাম করে? এই কালে এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে ইহুদিদের একক রাষ্ট্র ইজরাইল ও এর জনগণের কাছে। গত ছয় দশকে এই অবৈধ রাষ্ট্রটির কল্যাণে গোটা পৃথিবীতে ইহুদিরা জাতিগতভাবেই ডাকু ও রক্তলোলুপ পিশাচের পরিচয় পেয়েছে। আগ্রাসী যুদ্ধবাজ অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে ইজরাইলের গুণগত পার্থক্য হলো অন্য আগ্রাসী রাষ্ট্রের অপরাধের বেশিরভাগের দায় শুধু সরকার বহন করলেও ইজরাইলে এক্ষেত্রে রাষ্ট্র, সরকার ও জনগণ একাকার হয়ে গেছে। অন্য দেশ যখন যুদ্ধ করে, গণহত্যা ও অন্যান্য যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করে, তখন দায়ী হয় রাষ্ট্র ও সরকারের সাথে জড়িত কিছু মানুষ। ইজরাইলের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি হলো, হিংস্রতা ও হত্যাযজ্ঞে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে ইহুদি রাষ্ট্রটির প্রতিটি অপরাধে দায়ী হয় একটি পুরো ধর্মীয় জাতি। একটি ধর্মের আটানব্বই শতাংশ মানুষ। এবারের যুদ্ধে একটি ঘটনা মিডিয়ায় এসে হতবাক করে দিয়েছে পৃথিবীকে। গাজায় যখন বিমান হামলা চলছিলো, রাতের গাজা যখন আগুনের নিষ্ঠুর হলুদ আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, প্রতিটি আক্রমণের সাথে যখন গাজা থেকে ভেসে আসছে মরণাপন্ন নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী শিশুদের আর্ত চিৎকার, ইজরাইলের সীমান্তবর্তী পাহাড়ে তখন শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিলো গাজায় তাদের বিমানবাহিনীর কীর্তি উপভোগের জন্য। প্রতিটি আক্রমণের সাথে, কেয়ামত কবলিত গাজা থেকে ভেসে আসা প্রতিটি আর্ত চিৎকারের সাথে সাথে সেখানে আনন্দধ্বনি উঠেছে। বোমার শেলে আহত, মৃত্যুপথযাত্রী যন্ত্রণাকাতর মানুষের, নারী শিশুর আর্ত চিৎকার শুনে এই মানুষরূপী জানোয়ারগুলো উল্লাসে চিৎকার করেছে। হাততালি দিয়েছে। আল জাজিরা খবরটি দিতে গিয়ে নাকি তিনটি শব্দ ব্যাবহার করেছে ‘নিষ্ঠুর’! ভয়াবহ’!! ‘নৃশংস’!!! এরচেয়ে ক্রিটিক্যাল আর কোন শব্দ বোধহয় ছিলোনা প্রতিবেদকের অভিধানে। মনুষ্য ও মানবতার এত ভয়াবহ অধঃপতন পৃথিবীর অন্য যে কোন জায়গায়ই কল্পনাতীত। গত ছয় দশকে হিংস্রতা ও নৃশংসতার অনুশীলন করে করে একটি পুরো জাতি যে মানুষের মুখোশে রক্তলোলুপ শয়তান হয়ে উঠেছে, এই ঘটনাটি যেন চোখে আঙুল সেটে দেখিয়ে দিলো বিশ্ববাসীকে। মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে আরেক ইজরাইলি নারীর উক্তি। এই নারী ইজরাইলের অতি ডানপন্থী রাজনৈতিক সংগঠন জুইশ হোমের নারী সাংসদ আলিয়াত শেকাদ। একজন নারী হয়ে তিনি ফিলিস্তিনি মা’দের হত্যার আহ্বান জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনি মায়েদের অপরাধ তারা তার ভাষায় ‘ক্ষুদে সর্পছানা’দের জন্মদাত্রী। গত ১৩ জুলাই এই ফিমেল ভ্যাম্পায়ার বেসামরিক জনগণ ও নারী শিশুদের হত্যার পক্ষে তার জানোয়ার-মস্তিষ্ক-প্রসবিত যুক্তি তুলে ধরে নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “প্রতিটি সন্ত্রাসীর পেছনে রয়েছে অনেক নারী ও পুরুষ, যাদের সাহায্য ছাড়া তিনি সন্ত্রাসবাদে যুক্ত হতে পারেন না। তাদের সবাইকে শত্রুপক্ষীয় যোদ্ধা হিসেবে গণ্য করতে হবে। তাদের মধ্যে রয়েছে সেই সব নিহত সন্তানদের মায়েরাও, যারা তাদের সন্তানদের ফুল ও চুমু দিয়ে নরকে পাঠায়। তাদেরও তাদের সন্তানদের পরিণতি বরণ করা উচিত। এর চেয়ে ন্যায়বিচার আর কিছু নেই। ধ্বসে পড়া বাড়িগুলোর মতো তাদেরও ধ্বংস হওয়া উচিত। সেই বাড়িগুলো, যেখানে তারা ‘সাপ’ লালন-পালন করেছে। তা না হলে আরও ‘বাচ্চা সাপ’ সেখানে লালিত-পালিত হবে।” যে জাতির নারীরা এই ভাষায় ভেতরের উন্মাদ হিংস্ররতা উগরে দিতে পারে, সেই জাতির মানবিক অধঃপতনের মাত্রা বুঝতে কষ্ট হয় না। আলিয়াত শেকাদ এখানে অন্য ইজরাইলি নারীদের প্রতিনিধি। যাদের বেশিরভাগ তার মত করেই ভাবেন। ফিলিস্তিনি নারীদেরও মরতে হবে কারণ তারা নিজের পিতৃভিটার জন্য লড়াই করা ফিলিস্তিনি যুবকদের মা! এভাবে পুরো ইজরাইলি জাতি, অন্য কথায় পুরো ইহুদি জাতি জঘন্য ও ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধে সম্মিলিত ভাবে শরিক হয়ে, জাতিগত ভাবে হিংস্রতাকে লালন করে, নৃশংসতার অনুশীলন করে জাতিগত ভাবেই মানুষরূপী পিশাচে পরিণত হচ্ছে। সভ্য পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য অনুপযোগী করে তুলছে নিজেদেরকে। বিশ্বশান্তির পূর্বশর্ত হিসেবে এই অভিশপ্ত জাতিটি নিজেরাই নিজেদের উপর একটি ‘সর্বাত্মক নির্মূল অভিযান’কে আবশ্যক করে তুলছে। পদে পদে আকাশের নির্ধারিত অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইহুদি জাতি।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
২১৫১ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আলহামদুলিল্লাহ্ মুসলিমরা এখন একটু একটু করে হলেও বুঝতে পারছে যে, সে দিন এগিয়ে আসছে - যে দিন ইয়াহুদীদের নিঃশৃংসতা, নিপীড়ন ও নির্যাতন - আপনার সকল ধৈর্য, ব্যাক্তিত্ব ও মানবতাকে হারিয়ে দিয়ে - এমন উন্মাদনা আনবে, এমন ঘৃনা তৈরী করবে যে - মুসলিম হিসাবে আপনি একজন ইয়াহুদীকে 'না মারা' কে মনে করবেন - এ্যাজ ইফ আপনি আপনার আত্মার সাথে বেঈমানী করছেন।
অনুরূপ ভাবে আর একটি হাদীস যেখানে 'দাব্বাতুল আরদ' ভূপৃষ্ঠে উদঘত পশু' সম্পর্কে বলা আছে - আপনার ভাষা ও বর্ননা অবিকল সেই পশু ইসরাইলকে যথার্থভাবে চিহ্নিত করে। অনেক আলেম যারা চিন্তা করে কোরান ও হাদীসকে মাথায় রেখে, যারা আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থা ও ধর্মের ভূমিকা ও ব্যবহার নিয়ে কাজ করেন - তাদের বেশীর ভাগই এ ইস্যুতে ইসরাইলকে সে দাব্বাতুল আরদ বলে মনে করেন।
ধন্যবাদ পরিমিত সুন্দর লিখার জন্য।
এই একটি প্রশ্ন বহুদিন মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে তবে আজ পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে
মন্তব্য করতে লগইন করুন