এখনো সময় আছে তাঁর ভালোবাসা পাবার।

লিখেছেন লিখেছেন গাজী হাসান ২৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০১:৪৭:১৩ রাত

মুমিনের জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ্‌ রব্বুল আলা’মীনের ভালোবাসা অর্জন করা।পৃথিবীর কারো ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কত কিছুইনা আমরা বিরামহীনভাবে করে যাই।আমরা সম্পূর্নরুপে জানিনা আমি জাকে ভালোবাসি তাঁর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমাকে কি কি করতে হবে? কোন দিক নির্দেশনা দেয়া থাকেনা।বুঝে নিতে হয়।এই নশ্বর পৃথিবীর কারো ভালোবাসা পেতে আমরা যত ত্যাগ স্বীকার করি তেমন ভাবে আল্লাহ্‌ রব্বুল আলা’মীনের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কি আমরা ত্যাগ স্বীকার করি? তিনি তো আমাদের শুধু এই দুনিয়াতেই ভালোবাসবেন না বরং পরকালে দিবেন জান্নাত।সেখানে জান্নাতিরা যা চাইবে তাই পাবে এই ওয়াদা আল্লাহ্‌ করেছেন।তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমাদের কি করতে হবে তা তিনি শুধু বলেই দেননি রাসুলের মাধ্যমে বাস্তবে তাঁর প্রতিফলন করে দেখিয়েছেন।

আমার ছেলে একদিন ফোন করে আমাকে বললো বাবা আমি কবিতা মুখস্থ করেছি।আমি অতি আগ্রহকরে বললাম শোনাও তো বাবা। সে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি বিখ্যাত কবিতার কয়েকটি লাইন আমাকে শুনালো। আধোআধো গলায় বলতে লাগলো,

ঘুমাইয়া ক্বাজা করেছো ফজর, তখনো জাগোনি যখন জোহর

হেলায় খেলায় কেটেছে আসর, মাগরিবের ঐ শোন আযান

জামাতে শামিল হওরে এশাতে এখনো জামাতে আছে স্থান।

মনে মনে ভাবলাম, তাইতো জীবনের কত সময়তো চলে গেছে দুনিয়ার জন্য কতো কিছুইতো করছি আমরা সবাই কিন্তু আল্লাহ্‌ রব্বুল আলা’মীনের ভালোবাসা কি অর্জন করতে পেরেছি বা তার ভালোবাসা পাবার চেষ্টা করছি!!

সুতরাং মুমিন হিসেবে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহ্‌ রব্বুল আলা’মীনের নির্দেশগুলো পালন করা আর তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বেচে থাকা।

আসুন,পবিত্র কুরআনের আলোকে আমরা নিজেদেরকে যাচাই করে নেই যে, আল্লাহ্‌ রব্বুল আলা’মীনের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমরা কি করছি এবং কি করা উচিৎ আর তাঁর অপছন্দ,ক্রোধ থেকে বাঁচার জন্য আমরা কি করছি বা কি করা উচিৎ।

মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত সময় আছে মহান রবের ভালোবাসা পাবার।হে ঈমানদারেরা আর দেরী নয় .....

মহান আল্লাহ্‌ যাদের ভালবাসেন।

১.আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।বাক্বারা-১৯৫,মায়িদা-১৩

২.নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন।বাক্বারা-২২২

৩.আল্লাহ পরহেজগারদেরকে ভালবাসেন। আলে ইমরান-৭৬

৪.আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন। আলে ইমরান-১৩৪, মায়িদা-৯৩

৫.যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।আলে ইমরান-১৪৬

৬.যারা সৎকর্মশীল আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।আলে ইমরান-১৪৮

৭.আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন।আলে ইমরান-১৫৯

৮.নিশ্চয় আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন।মায়িদা-৪২

৯.অবশ্যই আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন।তাওবা-৪

১০.আল্লাহ পবিত্র লোকদের ভালবাসেন।তাওবা-১০৮

১১.নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।হুজরাত-৯

১২.আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।আস সফ-৪

মহান আল্লাহ্‌ যাদের অপছন্দ করেন।

১.নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।বাক্বারা-১৯০

২.আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না।বাক্বারা-২০৫,ক্বাসাস-৭৭

৩.আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে।বাকারা-২৭৬

৪.আল্লাহ কাফেরদিগকে ভালবাসেন না।আলে ইমরান-৩২,আর রুম-৪৫

৫.আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।আলে ইমরান-৫৭,১৪০, আশ শুরা-৪০

৬.নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। নিসা-০৬,নাহল-২৩,ক্বাসাস-৭৬,লুকমান-১৮, হাদীদ-২৩

৬.আল্লাহ পছন্দ করেন না তাকে, যে বিশ্বাস ঘাতক পাপী হয়।নিসা-১০৭

৭.আল্লাহ অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।মায়িদা-৬৪

৮.নিশ্চয় আল্লাহ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।মায়িদা-৮৭, আ’রাফ-৫৫

৯.নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।আনআম-১৪১,আ’রাফ-৩১

১০.নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না।আনফাল-৫৮

১১.আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।হাজ্জ-৩৮

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File