রাজপথে আমার নজরুল স্যার,হামিদ স্যার ...................................

লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ নিজামী ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৮:১১:২৮ রাত

প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় পড়ি, শিক্ষকদের আন্দোলনের খবর , ডিটেইলস পড় হয় না,নতুন কি ?সব সরকারের সময়ই তো দেখি।কিন্তু হঠাৎ করে চোখ আটকে যায় ,মরিচের গুড়া স্প্রে এর খবরে, নিজের চোখে এ যেন জ্বলুনি অনুভব করি।

হঠাৎ করে যেন ফিরে যাই কুড়ি বছের আগে ,১৯৯০ সালের ডিসম্বর মাস, হাইস্কুলে ভর্তি হতে গিয়েছিলাম শশ্রুমন্ডিত যে লোকটি পিতস্নেহে আমার নামধাম জিজ্ঞেস করেছিলেন ,পরে জেনছিলাম তিনি ছিলেন নজরুল স্যার, আমাদের ধর্ম পড়াতেন।আজো আমার কাধে স্যারে উষ্ণ হাতের স্পর্শ অনুভব করি।

তবে কি , হারামজাদা পুলিশ! আমার নজরুল স্যারকে মেরেছে?ধুর তা কি করে হয় স্যার তো বিনা চিকিৎসায় অনেক বছর আগেই মারা গিয়েছেন।

তবে কি নেজাজুল করিম স্যার?শীর্ণ দেহের তরুণ, খুব একনিষ্ঠতার সাথে বাংলা সাহিত্য পড়াতেন,শুদ্ব উচ্চরণের প্রতি ছিলো যার অসম্ভব রকমের ঝোক।যিনি আমার মাঝে বপন করেছিলন বই পড়ার বীজ।

না না,তা কি করে হ্য়।শীর্ণ দেহের লোকটি তো পুলিশের একটি বাড়িই সহ্য করতে পারবেন না,স্যারের জন্য আমার মায়া হয়।

তবে কি আমার আব্দুল মাবুদ স্যার,মাত্র ১৯ বছর বয়সে স্নাতক পাশ করে কোন দিকে না তাকিয়ে শুধুমাত্র সম্মানের লোভে শিক্ষকতার পেশায় এসেছিলন, আমাদেরকে বিজ্ঞান পড়াতেন। আব্বা অসুস্হ ছিলেন বলে ,যিনি প্রইভেট পড়ানোর টাকাটা নিতে চাইতেন না।এতোদিনে নিশ্চয় প্রৌঢ়ত্বে ।

আমি কল্পনায় দেখতে থাকি,স্যার রাজপথে পুলিশের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি করছেন।

না না এ অসম্ভব,স্যার তো শুধু সম্মান চেয়েছিলেন।

তাহের স্যার না তো,ডাবল মাষ্টার্স ডিগ্রীধারী লোকটি প্রায় ৪০ বছর আগে, বেসরকারী সংস্হার লোভনীয় চাকরি ছেড়ে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েছিলেন,যার যুবক ছেলেটিকে মাঝরাতে পুলিশ ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলায় ঝুলিয়ে দিয়েছিল।

না না বৃদ্ব লোকটিকে মেরে পুলিশের কি লাভ, সারজীবন শুধু সম্মান আর খেয়ে পরে দিনগুজরান করতে চেয়েছিলেন।

তারা তো সন্ন্যাসী নন, তাদের ও স্ত্রী- পুত্র আছে,তাদের লেখা পড়া আছে,বিনোদন আছে। তারা কি করবে?

তারা তো হলমার্কের মতো ব্যান্ক ডাকাতি করতে পারেন না,বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান শিক্ষকদের মতো বছরের পর বছর সেশনজট ঝুলিয়ে রেখে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষ্যাপ মারতে পারেন না।

আমি ঘোরের মধ্যে ভাবতে থাকি, আমার নজরুল স্যার, হামিদ স্যার কে রাজপথে পুলিশের মার আর মরিচের গুড়া খেতে হচ্ছে।

অসম্ভব! এটা হতে পারে না।মুষ্টিবদ্ব হাত দিয়ে সজোরে টেবিলে বাড়ি দেই।

নাহ কিছুই হ্য় না। অক্ষম আক্রোশে ক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে কী-বোর্ডে। বুঝতে পারি না এ অশ্রু কি অপমানের না তরল মরিচের ।

বিষয়: বিবিধ

১৪২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File