শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
লিখেছেন লিখেছেন আফরোজা হাসান ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৫:২৩:৫০ বিকাল
উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষার মান উপরে থাকার মূল কারণ হল তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবধর্মী ও জীবনমুখী। তাদের জীবনের উদ্দেশ্য যাই থাকুক না কেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তারা সুষ্ঠু পরিকল্পনার ভিত্তিতে বড় করতে চেস্টা করে। মুসলিমদের মধ্যেও মেধা ও প্রতিভার কোন কমতি নেই। কমতি শুধু সঠিক ও সাবলীল পরিবেশ এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার। আল্লাহর খলিফা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার উপযুক্ত করে নিজেকে গড়ে তোলাই ইসলামের শিক্ষার লক্ষ্য। অন্যকথায় আল্লাহর ইবাদত ও সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন মানব জীবনের লক্ষ্য। আর শিক্ষা সে লক্ষ্য হাসিলে সহায়তা করে। শিক্ষা একটি বাহন আর মানুষ সেই বাহনের যাত্রী। কথায় আছে, বাহন যদি যায় সমুদ্রের তলে, মানুষ ডোবে গভীর জলে। একই ভাবে আমাদের নৈতিকতা বহির্ভুত আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিকে তলিয়ে দিচ্ছে গভীর ধ্বংসের মুখে। তাই শিক্ষা গ্রহণের শুরুতেই আমাদের ভাবতে হবে আমরা সঠিক শিক্ষা নিচ্ছি কিনা। কারণ ইসলামের ইতিহাসের সঠিক তথ্য দ্বারা অবগত হওয়া ছাড়া মুসলিমদের মুক্তির পথের সন্ধান পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মানবতার মুক্তির পথের দিশারী খোঁজার জন্য আমাদেরকে আশ্রয় নিতে হবে আল-কুরআন ও সহীহ হাদীস গ্রন্থসমূহের উপর। শিক্ষার ইংরেজি এডুকেশন। আর ইংরেজি এডুকেশন শব্দটির প্রতিটি অক্ষরে শিক্ষার কাঙ্খিত রূপ ফুটে ওঠে।
E(ই-ইকুইটি) সকল কাজের নিরপেক্ষতা বা ন্যায়পরায়ণতা।
D(ডি-ডিউটিফুলনেস) মানবতা, দেশ, জাতি, জনগণ, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের জন্য সদা কর্তব্যপরায়ন।
U(ইউ-ইউনিট) সত্য ও সুন্দরের জন্য ঐক্যবদ্ধ।
C(সি-কারেজ) সত্য ও সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাহসিকতা।
A(এ-একাউন্টেবিলেটি) মেধা, সময় ও জাতীয় সম্পদ সম্যক ব্যবহারে দায়বদ্ধতা।
T(টি-ট্রান্সপারেন্সি) আচার,ব্যবহার ও সকল কাজের সততা ও জবাবদিহীতা।
I(আই-ইনভেস্টিগেশন) নব দিগন্তের উন্মোচন বা উদ্ভাবন।
O(ও-ওবিডিয়েন্ট) জাতির প্রতি কর্তব্যবোধ ও আনুগত্যপরায়ণ।
N(এন-এনথেসিয়াম)মহৎ কাজের প্রতি আসক্তি।
এডুকেশন শব্দটির প্রতিটি অক্ষরের অর্থকে সামনে রেখে আমাদেরকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। যখন নিজে সত্যিকারের শিক্ষিত হয়ে উঠবো, তখন আমরা অন্যদেরকেও সেই শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে পারবো। কেননা অযোগ্যতা, আধা-যোগ্যতা আর ভাবাবেগ দিয়ে কাজ করার মধ্যে কোন বরকত নেই। ইসলাম ইখলাস আর যোগ্যতার সমন্বয় চায়। মুসলিমদের সামনে আজ তাই বিরাট চ্যালেঞ্জ। তাদেরকে মুসলিম উম্মাহর যুগোপযোগি জীবন গঠনে ইখলাস ও যোগ্যতার সমন্বয় ঘটাতে হবে। এখানে মনে রাখা দরকার যে, জীবনে সফল ও যোগ্য হওয়া যেমন সহজ নয়। আবার খুব যে কঠিন তাও নয়। সফল হতে হলে কিছু ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। নিজেকে আরো যোগ্য ও অপরিহার্য করে তুলতে হবে। জীবনের যে কোনও উদ্দেশ্য সফল করতে হলে একাগ্রতা ও দৃঢ়তার প্রয়োজন। নানারকম বাঁধা- প্রতিবন্ধকতা, বিপদে বা ব্যর্থতায় হতাশ না হয়ে একাগ্রভাবে লক্ষ্যের প্রতি স্থির থাকাই প্রকৃত মু'মিনের লক্ষণ। আর আল্লাহ্র সাহায্য বা করুণা তখনই পাওয়া যায় যখন আমাদের মধ্যে বিশ্বাস, বিশ্বস্ততা, চেষ্টা, আন্তরিকতা, শৃঙ্খলা, একতা, ন্যায়পরায়ণতা প্রভৃতি গুণের জন্মলাভ করবে। যে ব্যক্তি বা জাতির মধ্যে এইসব গুণাবলীর জন্ম নেবে অবশ্যই সে ব্যক্তি বা জাতি হবে সফলকাম - ইহকালে এবং পরকালেও।
বিষয়: বিবিধ
১২০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন