সংসার সুখের হয় পুরুষের গুণে......
লিখেছেন লিখেছেন আফরোজা হাসান ১৩ মার্চ, ২০১৪, ০১:৫৮:৫৭ দুপুর
“সংসার সুখের হয় পুরুষের গুণে” ভাবছি এই শিরোনামে একটা সিরিজ লিখবো। নারীর গুণে সংসার সুখের হবার বা জীবনে হাসি-আনন্দ বিকশিত হবার অনেক কাহিনী শুনেছি, পড়েছি, দেখেছিও। কিন্তু একটা সংসার সুখী হবার পিছনে একজন পুরুষের অবদান কতখানিক হতে পারে এটা নিয়ে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু পড়া বা শোনা আমার অন্তত হয়নি। তবে দেখা? হুমম...অনেক দেখা হয়েছে। নানুমণি, মামণি, খালামণি, মামীমা, চাচীমা, ফুপ্পিদের থেকে নিয়ে শুরু করে নিজেকে, বোনদেরকে, বান্ধবীদেরকে এমনকি কয়েকদিন আগে হওয়া ভাতিজীর সংসার দেখেও এই চিন্তাটাই আরো দৃঢ় হয়েছে যে, আমাদের পরিবারের প্রতিটি সংসারের সুখের পেছনে নারীদের চেয়ে পুরুষদের অবদানই বেশি।
গতকাল আমাদের বোনদের সাপ্তাহিক আলোচনা সভাতে হঠাৎ করেই সংসারে সুখী হবার পেছনে কার অবদান বেশি সেটা নিয়ে কথা উঠলো। ভাবী ও বোনেরা মিলে আমরা তেরো জন এক বাক্য স্বীকার করে নিয়েছিলাম যে, আমরা সুখী এর নাইনটি পারসেন্ট ক্রেডিট আমাদের হাজবেন্ডদের। তখন মনেহলো কেমন হয় নিজেদের সংসার গুলোকে নিয়ে একটু গবেষণা করে দেখলে? যেই মানুষগুলো দ্বারা জীবন অনিন্দ্য সুন্দর রূপ ধারণ করে এসেছে আমাদের কাছে। সেই মানুষগুলোর এত ভালো হবার রহস্য কি? নারীদের মহিমা নিয়ে তো অনেক কাব্য, মহাকাব্য লেখা হয়েছে। আমরা একটু ভিন্ন কিছু লেখার চেষ্টা করে দেখি না নিজ নিজ অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থেকে।
খুঁজতে গিয়ে দেখলাম আমাদের সবার হাজবেন্ডদেরই কিছু বিষয় কমন। উনারা প্রত্যেকেই ভয়াবহ রকমের ব্যস্ত মানুষ। তবে পরিবারের জন্য যতটুকু সময় নির্ধারিত চেষ্টা করেন সেই সময়টুকুর সবটুকু দিতে। পারুক বা না পারুক নিজ নিজ স্ত্রীকে সাহায্য করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকেন উনারা। মেয়েদের রাগ হচ্ছে অনেকটা আগুনের মত। উনারা কখনোই আগুনে তেল বা বাতাস দেন না। বরং এমন পরিমাণ পানি ঢালেন যাতে ধোঁয়াও না বের হয়। নারী জাতি স্বভাবগত ভাবে বাঁকা। আর প্রচলিত আছে সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করতে হয়। কিন্তু উনারা আঙুল বাঁকা না করে এমন মাত্রায় উত্তাপ দেন যে ঘি গলে গিয়ে নিজ থেকেই বেড়িয়ে আসে। এমন আরো অনেককিছু আছে যা আসলে উদাহরণ ছাড়া ঠিক বোঝানো সম্ভব নয়।
তবে সিরিজটা আমি মজা করার জন্য লিখতে চাচ্ছি না। লিখতে চাচ্ছি কারণ জীবনের ভাঁজে ভাঁজে ছড়িয়ে থাকে ভালো থাকার নানা উপকরণ। কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে অনেক সময় আমরা সেসব দেখতে বা খুঁজে নিতে পারি না। অনেক সময় অন্যের অভিজ্ঞতা শুনে উপলব্ধি করি যে, আরে এমন অনেক মুহুর্ত তো আমার জীবনেও প্রায়ই আসে। এর মধ্যে যে এত আনন্দ ও সুখ থাকতে পারে সেটা তো জানাই ছিল না। হুমম...এই উপলব্ধিটুকুই মনে জাগিয়ে যেতে চাই গল্পে গল্পে। স্বাভাবিক বলে যে সুখ মানুষের নজরেই আসে না, অন্যের অভিজ্ঞতা শুনে বা জেনে তখন রঙতুলির ছোঁয়া লাগে ভাবনাতে। আবার অনেক সময় জানাই থাকে না যে স্যাক্রিফাইস কিভাবে করতে হয়। স্যাক্রিফাইস শব্দটা শুনলেই বিশাল কিছু ছাড় দেবার ইমেজ চলে আসে মনে। অথচ ছোট ছোট ত্যাগই জীবনকে করে তোলে স্বপ্নিল।
যাইহোক, অনেক লম্বা প্রাসঙ্গিক সূচনা দেয়া হয়ে গিয়েছে। আমি এখন বিশ্লেষণের দিকে যাই......
বিষয়: বিবিধ
১৯৭৪ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসলে সংসারে একেকজনের দায়িত্ব একেক রকম। সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে পারতো তাহলেই আর সংসার গুলো ভাঙ্গতো না।
সংসারে নারী ও পুরুষ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং পরিপূরক। যারাই এই কথাটি মনে রেখে মেনে চলেন, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাদের ঘরগুলো টিকে যায়।
আর ভালো ও খারাপ উভয় গুণই মানুষের ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত। পুরুষরাও যেহেতু মানুষ, তাই তারাও দোষ মুক্ত নয় নিশ্চয়ই।
তবে আমি আমার গল্পে কারো নিয়ে আলোচনা করতে চাইনা। আমি নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু উদাহরণ দিতে চাই সুখী সংসার গড়ার। সবার পছন্দ হবে না, ভালো লাগবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ কেউ হয়তো উপকৃতও হবেন, ইনশাআল্লাহ।
তাই আশা করবো উৎসাহ দিতে না পারলেও নিরুৎসাহিত করবেন না আমার লেখাকে।
অনেক শুকরিয়া।
অপেক্ষায় আছি......
"মেয়েদের রাগ হচ্ছে অনেকটা আগুনের মত। উনারা কখনোই আগুনে তেল বা বাতাস দেন না। বরং এমন পরিমাণ পানি ঢালেন যাতে ধোঁয়াও না বের হয়।"
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মহান আল্লাহ যেন আপনাকে বেশী বেশী লেখার তৌফিক দান করেন।
আমি মাসুদা সুলতানা রূমীর বইটি পড়িনি। দেশ থেকে আবার যখন বই আনাবো ইনশাআল্লাহ আনিয়ে নেবো। শুকরিয়া আপুজ্বী।
অনেক অনেক শুকরিয়া।
নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, , যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার।
আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।
অনেক অনেক শুকরিয়া।
আসলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। এতদিন শুধু শুনে এসেছি সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে। হ্যাঁ, তর্ক ছাড়াই স্বীকার করছি সংসার সুখের হবার পেছনে রমনীর ভূমিকা ব্যাপক তবে একজন পুরুষের ভূমিকাকেও ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।
আমরা সব সময় নিজের বা নিজেেদের প্রশংসা করতে বা শুনতেই ভালবাসি। আর তাই একচেটিয়া ভাবে রমনীর গুণেই সংসার সুখী হবার বিষয়টি বেশি প্রচারিত।
প্রকৃতপক্ষে, পুরুষের ত্যাগ বা ভূমিকা ছাড়া শুধুমাত্র একজন নারী কী সংসারকে সুখী করে তুলতে পারে? তাই যদি হয়, তাহলে এত নারী নির্যাতন হয় কেন? কেন এত নারীর সংসার ভেঙ্গে যায়?
সংসার সুখী হবার পেছনে অবশ্যই দু'জনেরই ভূমিকা আছে।
আমার মনে হয়, যদি পুরুষরা নারীর ভালো বিষয়গুলি শুধু দেখার চেষ্টা করে এবং সেটার প্রকৃত মূল্যায়ন করে এবং পাশাপাশি একজন পুরুষও যদি বিপরীতভাবে ঠিক একই কাজ করে তাহলে মনে হয় সকলেই সুখী হতে পারে।
আপনার লেখা পড়ে আমারও এ ব্যাপারে সিরিজ লেখার ইচ্ছা জাগছে।
ধন্যবাদ আপনাদের সকলকে কষ্ট করে এ লেখা পড়ার জন্য।
আপনি শুরু করে দিন না আপনার সিরিজটা। আমি নানা ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছা থাকার পরও শুরু করতে পারছি না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন