নিজেকে খুঁজে ফিরি নিজেরই মাঝে......শেষ পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন আফরোজা হাসান ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৩২:৫০ রাত
রান্না শেষ করে স্টাডি রুমে উঁকি দিয়ে অধরাকে কথা বলতে দেখে বিরক্ত না করে মুন্নি ও জুম্মি ড্রইংরুমে গিয়ে বসলো। মুগ্ধ চোখে দেয়ালে ঝুলানো ওয়ালমেট গুলো দেখতে দেখতে মুন্নি বলল, আমার আম্মুও অনেক সুন্দর সেলাইয়ের কাজ জানেন জানো! আমিও অনেক কিছু শিখেছিলাম কিন্তু এখন মনেহয় ভুলে গিয়েছি না করতে করতে।
জুম্মি হেসে বলল, আমিও ছোটবেলায় আম্মুর কাছ থেকে অনেক ধরণের সেলাইয়ের কাজ শিখেছিলাম। আসলে আমাদের আম্মুরা যেমনটা গুণী আমরা তেমনটা হতে পারিনি। বিশাল বড় সংসার, অনেক গুলো সন্তান দেখা শোনার পরও কত ধরণের শৌখিন কাজ করতেন উনারা। আর আমরা পড়াশোনা করতেই হিমশিম খাই।
এর কারণ আপনারা কোন কিছু করতেই চান না। পড়াশোনা করেই মনে করেন বিশাল কিছু করে ফেলেছেন। আপনাদের কাছে পড়াশোনা মাটি কাটা কিংবা ইটের বোঝা টানার মতই পরিশ্রমের কাজ। এটা করার পর তাই ফেসবুক, ব্লগ আর বিভিন্ন ওয়েব সাইটে ঘুরঘুর করা ছাড়া আর কিছুই শেখার বা করার মত শক্তি অবশিষ্ট থাকে না।
অধরার কথা শুনে মুন্নি ও জুম্মি দুজনই হেসে ফেললো।
অধরাও হাসলো। সরি অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখলাম তোমাদেরকে। ক্ষুধা লেগেছে নিশ্চয়ই তোমাদের? চলো খেয়েনি।
জুম্মি বলল, না ম্যাম তেমন ক্ষুধা লাগেনি। আরেকটু পরে খাবো। এইসব শোপিস আর ওয়ালমেট আপনার বানানো?
অধরা হেসে বলল, তোমাদের আম্মুদের মতো আমার মামণিও বিরাট গুণী মহিলা ছিলেন। মাশাআল্লাহ অবশ্য এখনো আছেন। আমি খুব অবাক হতাম মামণিকে দেখে। এত বড় একটা সংসার, এত গুলো ছেলে-মেয়ে সামলানোর পরও নিজ হাতে আমাদের বোনদের ড্রেসে নানা ধরণের হাতের কাজ করতেন, কুসিকাঁটা দিয়ে লেস লাগিয়ে দিতেন, নিজ হাতে আমাদের জন্য মাফলার বুনতেন, ঘর সাজানোর জন্য ওয়ালমেট ও শোপিস বানাতেন। মামণি ইংরেজি সাহিত্যের স্টুডেন্ট ছিলেন। চমৎকার সব গল্প-কবিতাও লিখতেন। আর মামণির মজাদার রান্না তো তোমরাও খেয়েছো। এছাড়াও সমাজসেবা মূলক কাজ এবং আরো কত কিছু যে করতেন। মামণিকে আমার মনেহতো অলরাউন্ডার। একদিন জানতে চেয়েছিলাম যে, কিভাবে করো এত কাজ একসাথে? মামণি হেসে জবাব দিয়েছিলেন, পারি কারণ এসব করতে আমাকে কেউ বাধ্য করেনি। আমি সবকিছু মনের আনন্দে করি। নিজেকে ব্যস্ত ও ভালো রাখার জন্য করি। অহেতুক অবসর মানুষকে অকর্মণ্য বানানোর সাথে সাথে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে মাথা ঘামানো শেখায়। যারফলে সংসারেও তৈরি হয় নানা ঝামেলা। কিন্তু কাজের মধ্যে থাকলে ছোটখাট বিষয় নিয়ে ঝামেলা বাঁধার সুযোগ থাকে না। আমি তখন থেকে মামণির মত হতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু মামণির মত অলরাউন্ডার হতে পারিনি। আমি হয়েছি সকল কাজের অকাজী। মানে হচ্ছে সব কাজই টুকটাক শিখেছি এবং ঐ শেখা পর্যন্তই।
মুন্নি বলল, আপনি যা যা শিখেছেন আমাদেরকে সবকিছু শেখাতে হবে। জুম্মিও মুন্নির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলালো।
অধরা হেসে বলল, ইনশাআল্লাহ অবশ্যই শেখাবো তোমাদেরকে। অন্তত হাতের কাজ তো অবশ্যই শেখাবো তোমাদেরকে। কেন জানো? তাহলে আর মনের ছিঁড়া অংশ গুলোতে এমব্রয়ডারি করানোর জন্য অন্যের কাছে যেতে হবে না। সুঁই আর সুতোর বুননে মনের মধুরী মিশিয়ে নিজেই ফুটিয়ে তুলবে ছোট ছোট নকশি কাঁথা। মনের ফেটে যাওয়া অংশগুলোতে কুসিকাঁটার ছোঁয়ায় লাগিয়ে দিতে পারবে সুন্দর সুন্দর লেস।
মুন্নি হেসে বলল, আপনার কথা শুনলে সত্যি মন অন্যরকম হয়ে যায় ম্যাম। আপনি আমাদের সাথে থাকলে আমরা অবশ্যই এমনটা পারবো, ইনশাআল্লাহ।
মুন্নি পৃথিবীতে কোন মানুষকে আমরা সবসময় সাথে পাবো এর কোন নিশ্চয়তা নেই। যে কোন মুহুর্তে আসা যে কোন ঝড়ে আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যেতে পারে সেই প্রিয় মানুষটা, যাকে আমরা নিজের অবলম্বন মনে করে স্বর্বস্ব দিয়ে আঁকড়ে ধরেছিলাম। তাই আমাদেকে শুধুমাত্র আল্লাহর উপর নির্ভর করতে হবে সবসময় ও সর্বাবস্থায়। কারণ পৃথিবীর একটি মানুষও যখন আমাদের কাছে থাকবে না, তখনও আল্লাহ আমাদের সাথে থাকবেন। আর আল্লাহর পর নিজের উপর ভরসা করতে হবে। কারণ যেই পর্যন্ত ব্যক্তি নিজে জাগতে না চায় শত প্রেরণার বাণীও তাকে জাগাতে পারে না।
জুম্মি বলল, কিন্তু আমাদেরকে কেউ এভাবে চিন্তা করতে শেখায়নি কখনো।
দেখো দুনিয়াতে সবাই নিয়ম মাফিক শিখে বড় হয় না। বেশির ভাগ মানুষই প্রয়োজনে শিখে, কেউ বা ঠেকে শিখে। বাবা-মা কিংবা পরিবারের সদস্যদেরকে দোষারোপ করা তাই ঠিক না। তারা নিজেরাই হয়তো জানতেন না তাই শেখাতে পারেননি। তোমাদেরকে আল্লাহ এখন জানার সুযোগ করে দিয়েছেন। সুতরাং, এটাকে কাজে লাগাও। যতটুকু সম্ভব গড়ে তোল নিজেদেরকে। তাতে অন্তত শুদ্ধ একটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন দেখার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে। বীজ থেকে চারা বের হয়ে ফুল-ফল দিতে কিন্তু অনেক সময় লেগে যায়। আমরা আজ যে স্বপ্নের বীজ বুনবো তার ফুল-ফল দেখে না যাবার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু সেজন্য যদি আমরা স্বপ্নের বীজগুলোকে মুঠোর মধ্যেই রেখে দেই তাহলে ভুবন বাগিচা কিন্তু শূন্য পড়ে থাকবে না। অন্যকেউ তাতে বুনে দেবে দুঃস্বপ্নের বীজ। আর এরজন্য আমরাই দায়ী থাকবো।
মুন্নি বলল, আমাদেরকে তাহলে এখন কি করতে হবে ম্যাম?
সেটা তো আগেই বলেছি। নিজেকে জানতে হবে। তোমাদের নিজ নিজ জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে জানতে হবে, গন্তব্য কোথায় সেটা জানতে হবে। আমি জানি মানুষের মনে মাঝে মাঝে এমন ঝড় বয়ে যায়, তা যদি প্রকৃতি দেখতো স্তম্ভিত হয়ে যেত। বন্যা, ঘুর্নিঝড়, জলোচ্ছ্বাস হয় মনের মাঝেও। সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তছনছ হয়ে যায় মনের বাগিচা, ঝরে যায় সব ফুল, প্রজাপতিরা ভুলে যায় ডানা মেলতে, ভ্রমর করে না গুঞ্জন, আকাশ জোড়া থাকে না রংধনু। কিন্তু আমরা যদি জানি যে এইসবই আমাদের জন্য পরীক্ষা তাহলে এই কঠিন সময়গুলো পার হওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়। দেখো সমস্যা কার জীবনে নেই বলো? বিভিন্ন ক্লাসের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যেমন বিভিন্ন রকম, প্রতিজন মানুষেও প্রশ্নপত্রও তেমন আলাদা আলাদা। কিন্তু আমরা সবাই প্রতিমুহুর্তে দিয়ে যাচ্ছি নিজ নিজ পরীক্ষা। আমার ক্লাসের পরীক্ষায় ভালো করার জন্য কত কিছু করো তোমরা ভেবে দেখো তো! আমার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ রাখো, আমার দেয়া নোটস মনযোগ দিয়ে পড়ো, আমার বকাঝকা হাসিমুখে মেনে নাও। আল্লাহর পরীক্ষায় পাশ করার জন্য কি এসব করো? আল্লাহর সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম নামাজ। কতটুকু মনযোগী তোমরা নামাজে? নোট আকারে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে কুরআনে। কিভাবে উত্তর লিখতে হবে সেটাও দেখিয়ে দেয়া হয়েছে হাদীসে। তারপরও কেন জীবনকে ঘিরে এত অভিযোগ বলতে পারবে?
জুম্মি বলল, আমরা সত্যিই অনেক অকৃতজ্ঞ ম্যাম।
হ্যা আমরা অনেক অকৃতজ্ঞ। কারণ আমরা জানিই না কত নেয়ামত ঘিরে আছে আমাদেরকে। আর এটা জানার জন্যই তো নিজেকে জানা দরকার। নিজের মাঝে ডুব দিয়ে খুঁজে দেখা দরকার প্রাপ্তি সমূহকে। আসলে মানুষের মধ্যে যদি চৈতন্যবোধ সৃষ্টি না হয় তাহলে সে আত্মত্রুটি নির্ণয় করে তা বর্জন করতে পারে না। আর একমাত্র জ্ঞানই সৃষ্টি করতে পারে চৈতন্যবোধ। আত্মশুদ্ধির জন্য তাই জ্ঞানার্জনের কোন বিকল্প নেই। এজন্যই হয়তো বান্দার উদ্দেশ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রথম শব্দ ছিল, ‘ইকরা’ অর্থাৎ পড়। আসলে একমাত্র জ্ঞানের আলোতেই উন্মোচিত হয় জীবনের প্রসারিত দুয়ার। জ্ঞানই দূর করে মনের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকা সমস্ত অকৃতজ্ঞতা, অজ্ঞতার আঁধার। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, জ্ঞান যদি ভিত্তিহীন ও অপ্রতুল হয় তাহলে কিন্তু আমাদের চলার পথ নির্ভুল হবে না। তাই অর্জিত জ্ঞানকে অবশ্যই শরীয়তের আলোকে যাচাই করে নিতে হবে।
মুন্নি ও জুম্মি একসাথে বলল, আমরা বুঝতে পেরেছি ম্যাম।
হেসে, বুঝতে পারলে তো খুবই ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। আচ্ছা এখন চলো খেতে যাই আমরা।
খাবার পর মুন্নি ও জুম্মিকে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিতে বলে নিজের রুমে গেলো অধরা। বাবা-মামণি ও বাচ্চাদের সাথে ফোনে কথা বললো কিছুক্ষণ। শোয়েবকে ফোনে না পেয়ে ম্যাসেজ দিয়ে রাখলো। তারপর বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। তারায় তারায় খচিত আকাশ ঢাকা পড়ে গিয়েছে কুয়াশার ঘন চাদরে। ঘুমিয়ে পড়েছে পুরো শহর। সবসময়ই এমন নিস্তব্ধতার আঁধারে ঘেরা নীরব প্রকৃতি অধরার মনকে নিমগ্নতায় অথৈ জলে ডুবিয়ে দেয়। সমুদ্রের ফেনার মতো তখন ভেসে আসে রাশি রাশি বর্ণমালা। অনুভূতিরা তরঙ্গ জোয়ারে উদ্বেলিত হয়, সুখ-দুঃখ মনের খোরাক যোগায় নিঃসঙ্গতায়, হৃদয়কে আন্দোলিত করা স্বপ্ন-আশা-ভালোবাসা, একাকীত্বের সঙ্গতায় জেগে থাকে বিলাসিতায়। আশারা মেঘ হয়ে জমতে থাকে মনের আকাশে, কখনো জোছনা কখনো অমাবস্যার আবেশে, অচেনা-অজ্ঞাত উপলব্ধি ছাড়িয়ে মনের আকাশে, অসীম শূন্যতার মাঝে আপন সত্ত্বা নিজ অস্তিত্ব জানান দিয়ে যায় হঠাৎ প্রকাশে। নিজেকে জানা-বোঝা ও চেনার জন্য আসলে নিজের সাথে একাকী কিছুটা সময় কাটানো খুব দরকার। দরকার নিজের সাথে একান্ত বোঝাপড়ার।
পাশে রুম থেকে মুন্নি ও জুম্মির হাসির শব্দ ভেসে এলো। আপন মনে হাসলো অধরাও। খুব বেশিদিন হয়নি ওদের সাথে পরিচয়ের। কিন্তু মেয়ে দুটিকে খুব আপন মনেহয়। ওদের মনে জমে থাকা সব ম্লানতাকে ঘষে ঘষে তুলে ফেলে, স্বিগ্ধতার রঙে রাঙিয়ে দিতে ইচ্ছে করে ওদের মনোজগত। বুঝতে পারছে না মুন্নি ও জুম্মিকে বুঝিয়ে বলতে সক্ষম হয়েছে কিনা যে, জীবনটা আল্লাহর দেয়া এক আমানত আমাদের জন্য। এটাকে তাই অজ্ঞতা-অসন্তোষ ও আত্ম-অত্যাচারের দ্বারা নষ্ট করার কোন অধিকার আমাদের নেই। আর একমাত্র জ্ঞানার্জনের দ্বারাই মনে এই বোধের জন্ম হওয়া সম্ভব। কেননা মন ও মনন যদি সঠিক জ্ঞানের আলোতে আলোকিত না হয় তাহলে নিজেকে ঠিকভাবে দেখতে পারে না মানুষ। বুঝতে পারে না তার করণীয় ও বর্জনীয়। যারফলে তারমধ্যে যে জোনাকির মত একবিন্দু আলো আছে সেটাকে ছড়িয়ে দিতে পারে না দূর থেকে বহুদূর.....................
(সমাপ্ত)
বিষয়: বিবিধ
২৬১৩ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গল্পটা অনেক ভালো লেগেছে।
এতো সুন্দর শিক্ষনীয় গল্পের জন্য
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
শিক্ষনীয় আত্মগঠন মূলক পোস্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
অনেক অনেক শুকরিয়া আপুনিটাকে।
বারাকাল্লাহু ফিক।
নিজেকে জানার মাঝে বিবেক হবে প্রসারিত ।
বয়ে আসুক আত্মার সফলতা।
তবে সার্থক নিরলস এই প্রচেষ্টা ।
চমৎকার এবং বরাবরের মত শিক্ষণীয় ছিল এই সিরিজটা । জাজাকাল্লাহু খাইরান আপুমণি ।
সুন্দর লেখার জন্য এই সজীব উপহার । আমাদের ভিতরটা এই ভাবে সজীবতায় ভরে উঠুক দোয়া করবেন আপু ।
আপনার নেক্সট সিরিজ এর অপেক্ষায়......
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২, সবার অল-রাউন্ডার হওয়া উচিৎ ও নয়। তবে কেউ কেউ হতে পারে। এটাই ভারসাম্যতা।
তবে টুকিটাকি শিখে রাখাটা ভালো যাতে প্রয়োজনে কাজে লাগানো যায়। কিন্তু এতটাই অলস বলার বাহিরে।
৩, শেষ পর্বটির বেশির ভাগ অংশ মাথার উপরে দিয়ে গেছে আমার কেনো জানিনা।
তবে....
শিক্ষাঃ
নিজেকে সময় দিতে হবে যেটাকে বলে মোহাসাবা।
জ্ঞান অর্জন করতে হবে ।
সময় অপচয় করা যাবেনা।
বড় কাজের সাথে লেগে থাকলে ছোট খারাপ লাগা বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা যায়।
সিরিজগুলোর জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমি এই পর্বটি আবার আবার পড়ে ইনশাআল্লাহ মন্তব্য করে যাবো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন