নিজেকে খুঁজে ফিরি নিজেরই মাঝে......৫
লিখেছেন লিখেছেন আফরোজা হাসান ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:২৬:৪০ রাত
এক মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো জুম্মি। আকাশে আজ যেন মেলা বসেছে তারাদের। এমন তারায় তারায় খচিত আকাশ ভীষণ পছন্দ জুম্মির। মিটমিট করে জ্বলতে থাকা আকাশ কত কথা যে বলে যায় তাকে চুপিচুপি...! তার মনের ভাবনাগুলো যা সে বলতে পারে না কাউকে চুপিচুপি শুনিয়ে দেয় তারাদের। একটুও বিরক্ত না হয়ে মন দিয়ে তার সব কথা, সব ব্যথা, সব অভিযোগ শোনে তারারা। এমন একজন মানুষ পেতে খুব ইচ্ছে করে জুম্মির। যার কাছে মনের আপন কথা, গোপন কথা নিঃসংকোচে ও নির্ভয়ে বলা যাবে। যে তাকে বুঝবে কিন্তু কখনোই ভুল বুঝবে না। কাঁধে হাতের স্পর্শ পেয়ে ঘুরে তাকালো জুম্মি। হাসলো অধরাকে দেখে।
অধরাও হেসে বলল, এই ঠাণ্ডার মধ্যে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছো কেন? চলো ভেতরে যাই।
ম্যাম আপনার ভালো লাগে না এমন তারা ভরা রাত? এমন ঝিকিমিকি জ্বলতে থাকা আকাশ? জানেন আমি ছোটবেলায় ভাবতাম মানুষ মারা গিয়ে আকাশের তারা হয়ে যায়!
হাসলো অধরা। এমনটা মনেহয় বেশির ভাগ বাচ্চাদেরই ভাবনা থাকে।
আপনিও তাহলে এমনটা ভাবতেন ম্যাম?
উহু আমি ছোটবেলায় তারা হতে চাইতাম। সারাক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করতাম বাবার সাথে আমি তারা হতে চাই, আমি তারা হতে চাই। একদিন বাবা আমাকে কোলে নিয়ে বললেন, তুমি কেন তারা হতে চাও? আমি জবাব দিয়েছিলাম, আমি চাই আমারো আলো থাকবে। আমিও ঝিকিমিকি করবো। বাবা তখন হেসে বলেছিলেন, তাহলে সেজন্য তোমাকে ভালো মানুষ হতে হবে। কারণ এই পৃথিবীর সব ভালো মানুষ ধরত্রীর বুকে এক একটি তারকা। তারাও ঝিকিমিকি করে জ্বলে মানুষের মনে, মিটিমিটি আলো দেয় পথহারা মানুষের অন্ধকার মনোজগতে।
জুম্মি হেসে বলল, আঙ্কেলের কাছেই বুঝি আপনি এত সুন্দর করে কথা বলা শিখেছেন ম্যাম?
হেসে, জানো বাবার কাছেই আমি জেনেছিলাম কথারও পুষ্টিগুণ আছে। কথার প্রভাবে দূর হতে পারে রাতকানা রোগ। ভ্যাকসিন হিসেবেও দেয়া যায় কথাকে। আবার অনেক বড় বড় রোগে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে যায় কথা। তাছাড়া কুরআনেও কিন্তু বলা হয়েছে যে, “সদুপদেশের তুলনা হচেছ উৎকৃষ্ট বৃক্ষের ন্যায়, যার শিকড় দৃঢ়ভাবে মাটিতে প্রোথিত এবং শাখা প্রশাখা আকাশে [পৌছায়]”। আর আমার কি মনেহয় জানো? নিজেই নিজের আশ্রয় হবার জন্য সুন্দর ভাবে কথা বলতে পারাটা বেশ জরুরি। অবুঝ মনকে বোঝাতে সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডার আবশ্যক। ঐ তারাদের মতো ঝিকিমিকি করে জ্বলে যেই শব্দরা।
আমিও তারাদের মত ঝিকমিক করে জ্বলতে চাই ম্যাম। সেজন্য আমাকেও তাহলে অনেক ভালো মানুষ হতে হবে তাই না? আমার ইচ্ছাও আছে প্রচণ্ড কিন্তু মাঝে মাঝে কেন জানি না আগ্রহ হারিয়ে ফেলি সবকিছু থেকে।
জীবনের প্রতি অনাগ্রহ কেন আসে জানো জুম্মি? আমার মনেহয় অনাগ্রহ আসে নিজের প্রাপ্তির প্রতি অসন্তোষ থেকে। ভাগ্যকে মেনে নেবার অনীহা থেকে মনে জন্ম নেয় অনাগ্রহ। আমরা মুখে বলি ভাগ্যে আমাদের বিশ্বাস শত ভাগ। যা হয়েছে আমাদের মঙ্গলের জন্যই হয়েছে। এতেই নিহিত আছে আমাদের কল্যাণ। কিন্তু আমাদের মন সেটা মেনে নেয় না বা নিতে পারে না বলেই জীবনকে ঘিরে তৈরি হয় হতাশা, নিরাশা, দুরাশা, অতৃপ্তি। যা ধীরে ধীরে আমাদের মনকে গ্রাস করে ফেলে। যার ফলে মন দেখে যে তারচেয়ে হতভাগ্য দুনিয়াতে আর কেউ নেই। এরফলে কিছু মনে জন্ম হয় অনীহা, কিছু মনে জন্ম হয় পরশ্রীকাতরতা, কিছু মন হয়ে উঠে প্রতিহিংসাপরায়ণ। কারো ভালো দেখলেই যে মনে ধিকিধিকি জ্বলতে শুরু করে তুষের আগুণ। জুম্মি আমরা যদি মানুষের দুঃখ-কষ্ট ও অপ্রাপ্তির দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারতাম তাহলে নিজেদের দুঃখ-কষ্ট-অপ্রাপ্তি গুলোকে অর্থহীন মনেহতো। কিন্তু আমরা নিজেদেরকে নিয়ে এতই মগ্ন থাকি যে অন্যের দিকে তাকানোরই ফুরসত থাকে না। আমাদের ফ্রীজ ভর্তি খাবার থাকে তাই ইচ্ছে করছে না বলে খাবারের প্লেট ঠেলে অবলীলায় উঠে যেতে পারি। কিন্তু যাদের দিনের শুরু হয় এই ভাবনা দিয়ে আজ কি খাবার মত কিছু জুটবে আদৌ ভাগ্যে? তাদের কারো পক্ষে মনেহয় অনাগ্রহ করার কোন অবকাশ থাকে না। তাই তো ডাস্টবিনেও খাবারের সন্ধানে ঘুরতে দেখা যায় অনেক মানুষকে। জীবন তাদের সামনে কোন অপশন রাখে না। তাদের তাই কোন চয়েজ থাকে না। সেজন্য অনাগ্রহেরও অবকাশ থাকে না।
আমি সত্যি এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি ম্যাম।
তাহলে চিন্তা করে দেখো তোমাকে ঘিরে তোমার প্রভুর নিয়ামত সমূহের কথা। কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে ভেবে ভেবে হয়রান হয়ে যেতে হবে তোমাকে। আমরা আমাদেরকে দেয়া নিয়ামতের কথা ভাবি না বলেই জীবনকে ঘিরে অনাগ্রহের জন্ম হয়। অথচ আমার কি আছে, কি কি পেয়েছি সেটা সন্ধান করলে বেড়ে যেতে পারে জীবনকে ঘিরে আগ্রহ। তাই দৃষ্টিকে নিজেতে আবদ্ধ রেখো না। চোখ মেলে বাইরে তাকাও। তোমার চারপাশে থাকা প্রতিটি মানুষ, তোমাকে ঘিরে ঘটা প্রতিটি ঘটনার মাঝে লুকায়িত আছে শিক্ষা, লুকায়িত আছে সামনে এগিয়ে যাবার পথের নীল নকশা।
আমি বুঝতে পেরেছি ম্যাম।
আর একটা কথা মনে রেখো এই পৃথিবীতে কারো জন্য কিছু ঘটে না। প্রতিটা ঘটনা ঘটার পেছনে নির্দিষ্ট কারণ থাকে। ঘটনাটি ঘটে সেই কারণকে বাস্তবতায় রূপ দেয়। তাই কখনো ভাববে না যে তোমার কারণে কারো ক্ষতি হয়েছে, বা তোমার কারণে কারো অকল্যাণ সাধিত হয়েছে কিংবা তোমার দ্বারা বদলে গিয়েছে কারো জীবনের গতি পথ। যদি আপাত দৃষ্টিতে এমন মনেও হয়, দৃঢ় বিশ্বাস রাখবে রাখতে এটাই আল্লাহর আল্লাহর পরিকল্পনা ছিলো। এবং এতেই নিহিত সমূদয় কল্যাণ।
ইনশাআল্লাহ আমি এখন থেকে এভাবেই চিন্তা করতে চেষ্টা করবো ম্যাম।
হাত বাড়িয়ে জুম্মিকে মৃদু আলিঙ্গনে টেনে নিলো অধরা। তারপর হেসে বলল, ভেতরে গিয়ে দেখো ফ্রাইড রাইসের কি অবস্থা করেছে মুন্নি। একটু ভুল হলেই তো আবার ঠোঁট ফুলিয়ে বলবে আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।
হেসে ফেললো জুম্মি বেশ শব্দ করে।
অধরাও হেসে বলল, আমার ধারণা মানুষের কখনো ফান করেও নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা করা ঠিক না। একটা তথ্য ক্রমাগত পেতে পেতে একসময় মন সেটাকেই সত্য বলে গ্রহণ করে নেয়। আর একবার যদি মন মেনে নেয় যে তাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। এরপর তাকে দিয়ে কিছু করানোটা সত্যিই অনেক কঠিন হয়ে যায়। একই ভাবে অভিভাবকদেরও কখনোই উচিত না মজার ছলে গাধা, অপদার্থ, বুদ্ধু এই শব্দগুলো ছোটদেরকে বলা। এই মজাটাকেই একসময় মন সত্য বলে মেনে নিতে শেখে। এবং ভাবে যে সে আসলেই গাধা, অপদার্থ, বুদ্ধু ।
এটা তো অনেক ভয়াবহ ব্যাপার ম্যাম।
হুমম...ভয়াবহ তো বটেই। যাইহোক আমি কথা বলবো মুন্নির সাথে এই ব্যাপারে। তুমি যাও কিচেনে আমি আসছি কিছুক্ষণ পর।
জুম্মি চলে যাবার পর বারান্দার আরেক পাশে সরে এলো অধরা। জুম্মির সাথে কথা বলার সময়ই খেয়াল করেছে ছোট ভাই সাদাত নীচে বাগানে পায়চারী করছে। অধরা বলল, কিরে সাদাত তুই এমন কেন করছিস?
নীচ থেকে উপড়ে বোনের দিকে তাকিয়ে সাদাত বলল, কেমন?
এই যে একবার ডানে যাচ্ছিস, আরেকবার বামে যাচ্ছিস। আবার আগ-পিছ করছিস। দেখে মনেহচ্ছে তোর ব্রেকফেল হয়ে গিয়েছে।
আপ্পি কি যে সব বলো না তুমি! মানুষের আবার ব্রেক আছে নাকি? যাইহোক, তোমার সাথে আমার কথা আছে আপ্পি। আমি কি বাসায় আসতে পারি কিছুক্ষণের জন্য।
অবশ্যই আসতে পারিস না। আমার বাসায় দুইটা অবিবাহিত কুমারী মেয়ে আছে। এবং বাসায় কোন পুরুষ নেই। এই মুহুর্তে তোর প্রবেশাধিকার সম্পূর্ন রূপে নিষিদ্ধ।
তুমি থাকলে আবার কোন পুরুষ মানুষের দরকার আছে নাকি?
হেসে, তোর কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু রুল ইজ রুল। তবে আমি স্কাইপে বসছি তুই আয়।
ওকে আমি বসছি স্কাইপে। তুমি জলদি আসো। আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখো না আমাকে।
ভাইয়ের ব্রেকফেলের কারণ জানার জন্য হাসতে হাসতে রুমের দিকে পা বাড়ালো অধরা।
বিষয়: বিবিধ
১৬৩১ বার পঠিত, ৪৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কী-বোর্ডের মাধ্যমে আঙ্গুল দিয়ে টাইপ করে তারপর লিখে
আমি প্রচুর পড়ি তো সেজন্য হতে পারে। পড়তে পড়তে লিখতেও চেষ্টা করছি।
অনেক অনেক শুকরিয়া আপনাকে।
রেডি মন্তব্য সেট করে নেই, তারপরেই কমেন্ট করবো
কমান্ড বাট যে বাচ্চা জাল ভাগিয়ে মাছ মারে এনালগ না ডাইরেক্ট খাঁটি দুষ্টু।
আমি এখনো ডিজিটাল হইনি, তবে ২০৪১ সালের মধ্যেই ডিজি টাল হয়ে যাবো বলে আশা করা যাচ্ছে
UP রোজা আফা, কাশি বেশিক্ষণ উপরে রাখা ঠিক নাহ আরুকে দিয়ে নিচে নামিয়ে আনুন
সরি
মামাটা কেমন আছে?
পর মনে হচ্ছে
আলহামদুলিল্লাহ সবকিছু ঘটনা রটনার পিছনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিশ্চয়ই কল্যাণ রেখে দিয়েছেন।
চমত্কার হচ্ছে ওস্তাদজি।
মানুষ তারসাথেই মনের সব কথা অকপটে স্বীকার করতে পারে, যে তাকে বোঝে ও বোঝাতে পারে। আর যে কোন সম্পর্কের মাঝেই এমন কারো অস্তিত্ব থাকতে পারে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমরা উপলব্ধি করি না। কিচ্ছু উপলব্ধি করি না। জানিই না কিভাবে উপলব্ধি করতে হয়। প্রার্থনা করি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে নিজ নিজ নেয়ামত সমূহকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা দান করুন, আমীন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ইনশাআল্লাহ আমিও এখন থেকে এভাবেই চিন্তা করতে চেষ্টা করবো ।
জাজাকাল্লাহু খাইরান আপুমণি
অনেক ভালোবাসা তোমার জন্য।
এই মেয়ে তুমি এত্তো সুন্দর করে লিখো কিভাবে বলো তো!!! আমি কয়েন পারি না
তোমার জন্য....
ফুলের জন্য শুকরিয়া বুবুজান। এতোগুলা ভালোবাসা রইলো।
আচ্ছা ফ্রাইড রাইসে ডিম ঝুরি করে দেয়ার কথা মন ছিল ম্যাম আর শিষ্যাদের! :
ভালো লেগেছে লিখাটি আপুজ্বি!
লাভ ইউ আপুনি।
ইয়াহু, আমি সফল! একটু টেনশ্যানে ছিলাম তাই একটু আদর পাবার জন্য ব্লগেও কয়েক দিন মন খ্রাপ করে থাকছিলাম পেয়েগেছি আপনার আর আওণের পক্ষথেকে। এত্তোগুলা ধন্যা+আদর আপনাদের দু'জন কে
আর ব্রেকফেল-সাদাতটার কি অইসে?
শব্দকে পরশ পাথরও বলা যায়। কারণ শব্দের ছোঁয়ার বদলে দেয়া যায় মানুষের মন ও মননকে।
বিশেষ করে মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রে কথা অনেক পাওয়ারফুল মেডিসিন। এমন অনেক কেস আছে যেখানে সব ঔষধ যখন ব্যর্থ, তখন কথার দ্বারা রোগীর মনে জাগিয়ে তোলা হয়েছে আশা।
হুমম...আসছে ব্রেকফেল সাদাতের কথা, ইনশাআল্লাহ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার পছন্দের নামের তালিকায় এই জুম্মি নামটি যুক্ত করে নিলাম।
বারবার পড়তে পড়তে এ নামটি পছন্দ হয়ে গেলো।
আচ্ছা আপু জুম্মি অর্থ কি? জমজম, জুমুআ? এরকম কোন শব্দ থেকে এসেছে?
আমি আমার নেক আমলের ব্যাপারে সবসময়ই সন্তুষ্ট। যেমন নামাজ ফরজ পড়লেই সন্তুষ্ট কিন্তু প্রশ্ন নামাজ ঠিক করতে কেমন সময় দেই বা নামাজের পরিপূর্ণতা আনার জন্য কেমন চেষ্টা করি? বা নফল তাহাজ্জুদ এর এহতেমাম করি? না আমি করিনা। কিন্তু আমার উচিৎ আমার নামাজটা যেনো ঠিক হয় নামাজে মনোযোগী যেনো হতে পারি। কিন্তু কেনো চেষ্টা করিনা? অথচ আল্লাহ পাক নামাজের দ্বারা দুনিয়ার এবং আখিরাতের সমস্ত সমস্যা ঠিক করে দিবেন। কিন্তু নামাজ তো সেরকম হওয়া প্রয়োজন। নিজের কাছে প্রশ্ন থাকে আমি আমার নামাজের দ্বারা ছোট থেকে ছোট ফায়সালা করতে পারিনা তো আমার এরকম গাফলতির নামাজের দ্বারা কবর, হাশরের মত বড় ফায়সালা কিভাবে পূরণ করবো। ও আমার রব ক্ষমা করে দিন।
সমস্ত আমালেই এই দশা আর জাহলিয়াতের কারনে কত যে গুণাহ করছি আমার আল্লাহই ভালো জানেন।
কিন্তু আমার ফ্রিজ ভর্তি খাবার দেখেও মন ভরে না।
একটা বাড়িতে মন ভরেনা আরো চাই নতুন গাড়ি চাই চাওয়ার তো শেষ হবে পেটে কবরের মাটি পড়ার পর। ইয়া আল্লাহ অল্পে সন্তুষ্ট করে দাও । এ মনটা প্রশান্তিতে ভরে দাও।
আল্লামা সাদি (রহ,) এর বইতে পড়েছিলাম একজন রাজা একটা রাজত্ব পাওয়ার পর আরেকটার জন্য যুদ্ধ করে। আর একজন দরবেশ একটা রুটি পেয়ে আধাটি খেয়ে আধাটি বিলিয়ে দেয়। বলুন কে ধনি? ?
সত্যি আপু যখন সকাল বেলা কাজে যাই তখন ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষগুলোকে দেখে মনের অজান্তেই দিল থেকে আমার রবের করুনার প্রতি শুকরিয়া চলে আসে। যে আমার রব আমাকে কত ভালোবাসেন কত শান্তিতে রেখেছেন আমায় তা না হলে এতদিনে আমিতো ধ্বংস হয়ে যেতাম।
আসলে সত্যিই আপু আমি এখনও জানিনা আমার প্রিয় রং কি?
আমি দু দিন আগে বুঝতে পেড়েছি আমার প্রিয় সবজি মটরশুটি ।
অভিমান বুঝতে চেষ্টা করছি।
অনেকে আমাকে বলে অদ্ভুত অনেকে বলে সিধা অনেকে বলে বোকা আবার অনেকে বলে সহজ সরল। আসলে আমি যে কি তা নিজেই জানিনা । তবে
তবে এটা বেশ মজবুত ভাবে বলতে পারি আমার রব আমার হৃদয়টাকে একপ্রকার প্রশান্তিতে সিক্ত করে দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ শেষের দিকটায় খুউব মজা পেলুম
আপু আমার জন্য কোন সাজেশন?? প্লিজ অপেক্ষায় রইলাম।
যেহেতু ভালো ও মন্দ কাজের হিসাব আল্লাহর পর ব্যক্তি নিজেই সবচেয়ে বেশি জানে, তাই আমলের ব্যাপারে নিজেই নিজের আয়না হওয়া উচিত।
নিজের অবস্থানে যে সর্বাবস্থায় খুশি থাকতে পারে তারচেয়ে বড় সৌভাগ্যবান আসলে কেউ নেই। কিন্তু নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারি না বিধায়ই নিজের নিয়ামত সমূহকে দেখতে ও কাজে লাগাতে পারি না আমরা। আর আল্লাহর না শোকরিও তাই পিছু ছাড়ে না আমাদের...
নিজেকে জানাটা আসলে এইজন্যই দরকার কারণ নিজেকে জানলে অন্যকে বুঝতে সুবিধা হয়। নিজের পছন্দ-অপছন্দ জানা না থাকলে, অন্যের পছন্দ-অপছন্দের মূল্য দিতে পারে না মানুষ। কারণ সে সেটার মর্ম অনুধাবন করতে পারে না।
ঠিকই একই ভাবে নিজে যদি অভিমানের জ্বালা না বোঝে, অন্যের অভিমানের পেছনে যুক্তি খুঁজে পায় না মানুষ। যারফলে নিজের অজান্তেই অন্যের মর্মবেদনার কারণ হয়ে যায়।
নিজেকে জানার চেষ্টা করুন। তাহলে নিজেকে গড়তে সহজ হবে। আর নিজেকে গড়বো অতঃপর জগতাকে...তাই না?
সাজেশন না অনেক অনেক দোয়া রইলো আপুর তরফ থেকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন