কুরআনের তাফসীর থেকে কিছু বাণী-১

লিখেছেন লিখেছেন আফরোজা হাসান ০৯ মে, ২০১৩, ০২:২৪:২০ রাত



১।যার মন আছে, যে দেখতে জানে সেই বুঝতে পারে সমগ্র সৃষ্টির মাঝে বিশ্ববিধাতার অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ, মঙ্গলময় হাতের স্পর্শ, সদয় তত্বাবধান বিদ্যমান।

২। আল্লাহ্‌র দেয়া সীমালংঘন করার প্রবণতা হচ্ছে একধরণের আধ্যাত্মিক ব্যাধি। এই ব্যাধি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে এসব ব্যাধিগ্রস্থ লোক অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র দিকে মুখ ফেরাতে অস্বীকার করে।

৩। সৃষ্টির আদিতে আত্মা থাকে পূত পবিত্র যার পবিত্রতা মানুষ নষ্ট করে পরস্পর বিরোধী বিশৃঙ্খল ও আত্মার অনুপযোগী চিন্তাধারা ও কর্মধারার মাধ্যমে।এই পরস্পর বিরোধী হওয়ার কারণ, তাদের আধ্যাত্মিক জীবনে পরস্পর বিরোধী বৈকল্য।

৪। পৃথিবীতে সীমালংঘনকারীদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা আল্লাহ্‌র প্রদত্ত নৈতিক মূল্যবোধকে পরিত্যাগ করে থাকে। ফলে তাদের কোনও আধ্যাত্মিক দায় দায়িত্ব থাকে না। এরা অবজ্ঞা ভরে আল্লাহ্‌র সত্যকে মিথ্যা বলার মত ধৃষ্টতা প্রদর্শন করে।

৫। পরিতৃপ্তি" - এর অর্থ হচ্ছে আত্মার প্রকৃত মুক্তিলাভ। আত্মার এই মুক্তিলাভকে ভাষায় প্রকাশ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার।আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভের পবিত্র অনুভূতি সীমাহীন তৃপ্তিতে হৃদয়কে আপ্লুত করে ফেলবে। আত্মার এই অনুভূতি ও মুক্তিই পারে মানুষকে স্বর্গীয় শান্তির পরশ দান করতে, যা হচ্ছে 'মুত্তাকীদের জন্য সাফল্য "।

৬।পৃথিবীতে আত্মার অভিব্যক্তি, ঘাত প্রতিঘাত, দুঃখ বেদনা,সফলতা, ব্যর্থতা, রোগ,শোক প্রভৃতি জীবনের বিভিন্ন ঘটনা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

৭। মানুষ তার গুণাবলীকে ধ্বংস করে নিজস্ব পাপ কাজের দরুন। মানুষ যখন আল্লাহ্‌ প্রদত্ত মানসিক দক্ষতাসমূহ পূণ্য কাজে ব্যয় না করে পাপ কাজে ব্যয় করে তখনই আত্মার উপরে প্রলেপ পড়ে, আত্মা ধীরে ধীরে মসীলিপ্ত হতে থাকে।

৮। যারা নিজ রীপুকে সংযত করতে অক্ষম তারাই এসব নেয়ামতের অপব্যবহার দ্বারা পাপের পথে পরিচালিত হয়। আল্লাহ্‌র নেয়ামত তাদের করে তোলে লোভী, দুর্নীতিপরায়ণ, উচ্ছৃঙ্খল। কারণ, যে পূণ্যের জন্য বা ভালোর জন্য সাধনা করে সে সৎপথের সন্ধান লাভ করে।

৯। মনে রাখতে হবে আল্লাহ্‌র এবাদতের পূর্ব শর্তই হচ্ছে সৎ জীবন যাপন করা।কারণ, যে পূণ্যের জন্য বা ভালোর জন্য সাধনা করে সে সৎপথের সন্ধান লাভ করে।

১০।যতদিন কোন জাতি তাদের সমাজ ব্যবস্থায় আল্লাহ্‌র বিধানের অর্থাৎ ন্যায় ও সত্যের প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছে, ততদিন তারা জ্ঞানে, সভ্যতায় উন্নতির শীর্ষে বিরাজ করেছে। যখনই তারা সেই বিধান থেকে বিচ্যুত হয়েছে তখনই তাদের পতন ঘটেছে।

১১। যারা সততা, আত্মত্যাগ, কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের জীবনে একবার অভ্যস্ত হতে পারেন আল্লাহ্‌ সে সব মহৎ বান্দার অন্তর্জগতে বিরাট বিপ্লব সাধন করেন। ধীরে ধীরে সে পৃথিবীর কলুষতার বন্ধন মুক্ত হয়ে অনন্ত মুক্তির জগতে প্রবেশের যোগ্যতা লাভ করে যা তাকে আনন্দলোকের সন্ধান দান করে।

১২। পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত 'শিক্ষানবীশকালে' যে "সীমিত স্বাধীনতার 'অপব্যবহার না করে আল্লাহ্‌ ইচ্ছার নিকট আত্মসমর্পন করে; আল্লাহ্‌র বিশ্বজনীন ইচ্ছার সাথে নিজেকে সমন্বিত করতে সক্ষম হয়, তবেই তাঁর মনুষ্য জীবন সার্থক।

১৩। যদি কেউ জীবনের দুরূহ পথকে অতিক্রম করতে চায় ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় ও পরিশ্রমের মাধ্যমে, তবে আল্লাহ আধ্যাত্মিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ভালোবাসাতে তাঁর অন্তর পূর্ণ করে দেবেন। আল্লাহ্‌ তাকে আধ্যাত্মিক ভাবে অভাব মুক্ত করবেন।

১৪। আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্খা হৃদয়ে স্থান লাভ করলে আল্লাহ্‌র হেদায়েতের আলো ব্যক্তিকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। বিবেকের আলোতে তাঁর যাত্রা পথ হবে ভাস্বর ও পবিত্র। পার্থিব জগতের চাওয়া পাওয়ার জন্য তার হৃদয় আচ্ছন্ন ও মোহবিশিষ্ট হয়ে পরবে না।

১৫। আল্লাহ্‌ তাঁর নেয়ামত বিভিন্ন বান্দার জন্য বিভিন্ন ভাবে বন্টন করে থাকেন। এ সব নেয়ামতের সুষ্ঠু ব্যবহারই হবে তার জন্য মহা পরীক্ষা। যিনি এসব দান করেন, কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা তারই।

সূত্রঃ কুরআন এন্ড তাফসীর ডট কম

বিষয়: বিবিধ

১৫৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File