বাচ্চাদের সৃজনশীলতা
লিখেছেন লিখেছেন আফরোজা হাসান ১৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৩:৩৩:২৭ দুপুর
মানুষ স্বভাবগত ভাবে সৃজনশীল হলেও সবাই সমান মাপের হয়না। তবে চর্চার মাধ্যমে সৃজনশীলতা বিকাশ সম্ভব। আর শৈশবেই সৃজনশীলতার বিকাশ দ্রুত হয়। তবে এরজন্য প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণ উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং সঠিক গাইডেন্স। শিশুদের মধ্যের সৃজনশীলতাকে গতিশীল করার জন্য বা জাগিয়ে তোলার জন্য নানাভাবে তাদেরকে সহায়তা করতে হয়। আমাদের এখানকার স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের মধ্যের সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য অনেক রকম পদক্ষেপ নেয়া হয়। যেমন- ছড়া ও গল্প লেখা, নিজের ও পরিবার সম্পর্কে লেখা, পরিবারের কারো ইন্টারভিউ নেয়া, স্মরণীয় কোন ঘটনা লেখা ইত্যাদি। আমার ছেলে বিভিন্ন সময় এই কাজগুলো করে। ওর কাজ দেখে আমার মনেহয়েছে নিয়মিত যদি ওকে চর্চা করতে সহায়তা করতাম তাহলে হয়তো আরো ভালো করতে পারতো। ওর ভাষাতেই তুলে দিলাম এই মাসের লেখাগুলো-
গল্প
আমার গল্পের নাম ‘আয়না’। একদেশে ছিল একটা আয়না। একদিন হঠাৎ করে আয়নাটা ভেঙ্গে গেলো। আমার গল্প শেষ। (গল্প পড়ে তো আমি হিহিহি............)
কবিতা
আম্মু আমাকে খুব বকেছে
আমার সাথে রাগ করেছে
তুমি একটা দুষ্টু ছেলে
বলেছে আম্মু কান মলে
আম্মু আমি খুব সরি
প্লীজ থেকো না রাগ করি। (জীবনে কোনদিনও আমি দুষ্টু ছেলেটার কান মিলিনি)
স্মরণীয় ঘটনা
আমার বাবার একটা সাইকেল ছিল। সেটাতে করে বাবা কাজে যেতো। সাইকেলটা সিঁড়ির নীচে রাখা থাকতো। একদিন এক চোর সাইকেলটা চুরি করে নিয়ে যায়। (ঘটনা সত্যি)
ইন্টারভিউ
আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিলো। পাঁচটি প্রশ্ন করেছিলো আমাকে। ১. পছন্দের খাবার কি? ২. পছন্দের রং কি? ৩. প্রিয় খেলা কি? ৪. সবচেয়ে অপছন্দ কি? ৫. কি করতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে? আমার সমস্ত পছন্দ আমি বলার আগেই ওকে বলে দিতে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এবং বুঝতে পারলাম যে শিশুদের বোঝার ক্ষমতা বা দূরদৃষ্টি কত প্রখর। যেমন, যখন জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি করে জানলে আম্মু বেগুনী রং সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি? হেসে জবাব দিয়েছিলো, কারণ তুমি এই রংয়ের জিনিসপত্র বেশি ব্যবহার করো।
নিজের সম্পর্কে
আমি নাকীব। আমার শুধু বাবা আর আম্মু আছে। আমার কোন ভাই-বোন নেই। আমি কার্টুন দেখতে, গেমস খেলতে আর গল্পের বই পড়তে পছন্দ করি। বড় হয়ে আমি বিজ্ঞানী হতে চাই। (আরো অনেক কিছু লিখেছিলো)
আসলে শিশুদের কল্পনার জগতটি বৈচিত্র্যময় আর প্রতিভার একটি বড় অংশের স্ফুরণ ঘটে কল্পনার মাধ্যমে। শিশুরা কল্পনার পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে বিচরণ করে স্বপ্নপুরীর দেশ থেকে দেশান্তরে। ওদের চোখে থাকে দিগন্তজোড়া স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নে পাখা লাগানোর দায়িত্ব আমাদের। শিশুর চারপাশে যা কিছু আছে বা যা কিছু ঘটছে সবকিছুর ব্যাপারে শিশুর মনে ধারণার বীজ জমা হতে থাকে এবং সে অনুযায়ী বীজটির শাখা প্রশাখা বিস্তার ঘটে। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এমনটি ঘটতে থাকে তাই শিশুর কল্পনার রাজ্য সুশোভিত হয়ে যাতে সৃজনশীলতা পরিপুর্ন বিকাশ হতে পারে সেই ব্যবস্থা আমাদেরকেই করে দিতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন