অভিজাত শ্রেনীর কাছে বিচ্ছেদ একটি সাধারণ ঘটনা ওরা বিচ্ছেদকে হাত বদল মনে করেন !
লিখেছেন লিখেছেন মামুন আব্দুল্লাহ ২০ জুলাই, ২০১৭, ১০:৫৩:৫৬ রাত
এখানে অভিজাত বলতে তাদেরকেই বুঝানো হয়েছে যে দম্পতি জন্ম থেকেই বড় হয়েছে অভিজাত ফ্যামিলিতে । অর্থ্যাত যাদের জীবনে অর্থনৈতিক কোনো টানপোড়ন ছিল না যারা জন্মের পর থেকেই নিজের চাহিদাগুলো নিজের মতো করে পুরন করেছেন । সে যে কেউই হতে পারেন ! এখানে মন্ত্রী এমপি ব্যবসায়ী চাকুরীজীবি ক্রিকেটার অথবা যেকোনো গায়ক -গায়িকা ও অভিনেতা অভিনেত্রীও হতে পারে । যারা জন্মগতভাবেই অঢেল অর্থের অংশীদার ।
যাদের নিজেকে ম্যানটেইন করার মতো অর্থনৈতিক ক্ষমতা আছে । বিচ্ছেদ বা সেপারেশন ডিভোর্স বা তালাক আমরা যেটাই বলি না কেন এটাতে তাদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না;বরং বিচ্ছেদ হলে আরো নিজেদের অন্যভাবে উপস্থাপন করেন অথবা এসব শ্রেনীর দম্পতি বা ছেলে-মেয়েরা খুব দ্রুত নিজেদের সামলিয়ে নিতে পারে।
অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি তাদের সামাজিক নিরাপত্তাও তারা পেয়ে যান । আবার বর্তমানে এমন কিছু নারী-পুরুষও আছে যে এক সময় কিছুই ছিল না ;কিন্তু এখন তারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত সামাজিকতা ও নিজের বর্তমান ক্লাস মেইনটেন করতে গিয়ে বিচ্ছেদের পথ বেচে নেয় । আগের স্ত্রীকে বা স্বামীকে অর্থের কারনেই হোক বা যেকোনো কারনেই হোক ডিভোর্স দিতে চায় ! স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী আবার স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামী আলাদা হয়ে যায় ।
এতে করে অনেক সময় ছেলে ও মেয়ে অর্থ্যাত স্বামী অথবা স্ত্রী দুজনের যেকোনো একজন সামাজিকভাবে অথবা অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়,কারন এ ধরনের দম্পতিরা প্রথাগতভাবে কখনই অভিজাত শ্রেনীর ছিলেন না হয়তো নিজেদের মেধা যোগ্যতা দিয়ে একটা ভালো অবস্থান তৈরি করেছেন । এ ধরনের দম্পতিদের বিচ্ছেদ হলে দুজনের মধ্যে যার অর্থনৈতিক ক্ষমতা নেই সে তখন সামজিকভাবে নিজেকে নিরাপদ মনে করে না,আর যাদের অভিজাত্য নেই টাকা পয়সা নেই তাদের কথা বলার অপেক্ষা রাখে না ।
এক্ষেত্রে বিশেষ করে নারীরা বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন । তখন তাদের অর্থনৈতিক পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকার কারনে হয় তাদেরকে বাবার বাড়িতে নচেত্ ভাইদের নথুবা কোনো আত্নীয়-স্বজনদের সাহায্য বা আশ্রয় নিতে হয় । আর্থিক সহযোগিতা ও বাবার বাড়ির কোনো সহযোগিতা না পেলে বিশেষ করে একজন নারীকে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়,আর যদি সাথে সন্তান থাকে যা স্বামী গ্রহন করতে রাজি নয় তাদের সামাজিক অবস্থা খুবই করুন ।
তবে একজন অভিনেতা অভিনেত্রীদের কাছে বিচ্ছেদ বা ডির্ভোস কোনো ব্যাপারই নয় ! এটাকে ওরা হাত বদল মনে করেন । কারন তাদের বিচ্ছেদটা খুবই সাময়িক । অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তারা নতুন সঙ্গী ম্যানেজ করে নেন । একজন সাধারণ নারী-পুরুষদের দ্বারা সম্ভব হয় না । একজন পুরুষ হয় তো পারেন;কিন্তু একজন সাধারণ নারী ?
একজন সাধারণ নারীর কাছে বিচ্ছেদ হাত বদলের মতো নয় । বিচ্ছেদ বা ডির্ভোসের কারনে এদের জীবন তছনছ হয়ে যায়।
২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে সমোযতার মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৬৫ হাজার,আর সমোযতা ছাড়া বিচ্ছেদ ঘটনা আশংকাজনক হারেই বাড়ছে । তবে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল এ পর্যন্ত সমযোতার মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটনা কত তা হয়তো সরকারী হিসেবে রয়েছে । তবে সামাজিকভাবে দায়বদ্ধতা কমে যাওয়ার কারনেই বাড়ছে বিচ্ছেদের পরিমাণ । তাছাড়া সঙ্গীকে ভালো না লাগা,সাংসারিক অন্তকলহ ছাড়াও পারিবারিক ও ব্যক্তিগত মানসিক কারনেও হতে পারে ! তবে বর্তমানে মোবাইল ফেইসবুক সোস্যাল মিডিয়ার উপর অতিমাত্রায় ঝুকে পরা ও পরোকিয়া এর অন্যতম কারন হতে পারে ।
এছাড়াও সব কিছু আগের তুলনায় সচরাচর হাতের নাগালে হয়ে যাওয়ার কারনে অনেক দম্পতি বা ছেলে-মেয়েরা নিজেদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ অপছন্দ করেন এটাও বিচ্ছেদের কারন । বিচ্ছেদের কারনে মূলত: নারীরাই সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। একজন নারী অনেক সময় চাইলেও সমাজ সংসার ও সন্তানদের কারনে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন না আবার বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে একজন ডিভোর্সী নারীকে একজন পুরুষ বিয়ে করতে চাইনা (হয় তো দুইএক জন ব্যতিক্রম থাকতে পারে ) । অনেকেই একজন বিচ্ছেদপ্রাপ্ত বা ডিভোর্সীকে নারীকে বাকা চোখে দেখেন । হয়তো যাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আছে তাদের জীবন যেকোনোভাবে অতিবাহিত হয়ে যায়;কিন্তু যাদের থাকার মতো জায়গা নেই অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নেই তাদের কি অবস্থা আমাদের সমাজে একবার চিন্তা করলে আসলেই গা আতকে উঠে ।
এ ধরনের নারীদের জন্য সরকার ও বিভিন্ন এনজিও কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করতে পারেন । তাহলে এ ধরনের নারীরা নিজেদের স্বাভলম্বী করে তুলতে পাবরেন ।
____এম এ মামুন
বিষয়: বিবিধ
১১৯৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন