সরকারের নীতি নির্ধারকরা সরকারী বাড়ি ব্যবহার করি সরকারী গাড়ি ব্যবহার করি;কিন্তু সরকারী হসপিটাল ব্যবহার করি না !
লিখেছেন লিখেছেন মামুন আব্দুল্লাহ ২৬ অক্টোবর, ২০১৬, ০৭:২২:১৭ সন্ধ্যা
সরকারের কোনো এমপি মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি এমনকি প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং অসুস্থ্য হলেই ওনারা স্কয়ার হসপিটাল অথবা এ্যাপোলোতে চলে যান !
না হয় অন্য কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে ! ওনারা মূলত: উন্নত সেবা ও উন্নত চিকিত্সার জন্যই প্রাইভেট হসপিটালগুলোতে দৌড়ান ! অথচ ওনারা চাইলে স্কয়ার ও এ্যাপোলো হসপিটালের মতোই সরকারী হসপিটালগুলোর সেবার মান ও উন্নত চিকিত্সার ব্যবস্থা করতে পারেন শুধু প্রয়োজন কিছু নিয়ম নীতি !
যতোদিন একজন এমপি মন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চিকিত্সা সরকারী হসপিটালে না হবে ততোদিন মনে হয় না ওনারা এসব ব্যাপারে নজর দিবেন ! ওনারা একটু অসুস্থ্য হলে প্রাইভেট হসপিটাল খুজেন অথবা বিদেশে পাড়ি দেন অথচ চাইলে আমাদের দেশেই সেবা ও চিকিত্সার মান উন্নত করে নিজ দেশেই চিকিত্সা করাতে পারতেন !
সিংগাপুরের প্রধানমন্ত্রী তো বাংলাদেশে চিকিত্সার জন্য আসেন না বা বৃটেন থেকেও কেউ আসে না তবে কেন আমরা এ খাতে উন্নত সেবা ও উন্নত চিকিত্সা দিতে পারি না !
যতোদিন প্রতারণা ধোকাবাজি বন্ধ না হবে ততোদিন এ খাতে উন্নত সেবা পাওয়া সম্ভব নয় "!
স্বাস্থ্য সেবা খাতে সেবার মান ও চিকিত্সার খরচ সরকারের উচিত উন্নত দেশগুলোকে অনুসরণ করা !
আমাদের দেশের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে উচু স্তরের যাদের অঢেল পয়সা তারা উন্নত সেবা ও উন্নত চিকিত্সার জন্য কখনও সিংগাপুর আবার কখনও থাইল্যান্ড কখনওবা ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন ! যাদের পয়সা নেই বা সরকারীভাবে সুযোগ নেই তারা কি করবেন ?
"আমরা যারা সরকারের নীতি নির্ধারক তারা সরকারী বাড়ি ব্যবহার করি সরকারী গাড়ি ব্যবহার করি;কিন্তু সরকারী হসপিটাল ব্যবহার করি না ! "
"বাড়ি গাড়ি এগুলো নিজের মতো করে ব্যক্তিগতভাবে উন্নত ও পরিবেশগতভাবে সেবার মান নিজেরা তৈরি করে ব্যবহার করছি এবং সরকারী এসব সুবিধাগুলোও ব্যক্তিগতভাবে আমরা গ্রহন করছি অথচ হসপিটালগুলো পাবলিক সেবা ও পাবলিক সেবাকেন্দ্র হওয়ার কারনে এবং সেবার মান উন্নত না হওয়ার কারনেই আমরা এসব সুবিধাগুলো নিতে চাই না ! "
সেজন্যই অতিরিক্ত পয়সা খরচ করে সরকারী খরচে বিদেশ তথা প্রাইভেট চিকিত্সা সেবা গ্রহন করি । এ ধরনের উন্নত সেবা ও সকল শ্রেনীর মানুষের প্রয়োজন ! উন্নত দেশগুলো সকল শ্রেনীকে উন্নত সেবাই দেয়ার চেষ্টা করেন !
ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়ির ক্ষেত্রে যেমন নিজেদের জন্য উন্নত বাসস্থান ব্যবস্থা করি তেমনি সরকারী স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও তেমনটি হওয়া খুবই জরুরী তাহলেই সবাই উন্নতসেবা পাবে !
সরকারী হসপিটালগুলোতে চিকিত্সা সেবা দিন দিন খুব নিন্মমানের দিকেই ধাবিত হচ্ছে । এতে করে প্রাইভেট হসপিটালগুলো মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্তদের চুষে খাচ্ছে ! রোগীদের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা কখনই দেখেন না ডাক্তার ও হসপিটালগুলো !
এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় টেলিভিশনে রির্পোট করেও কাজ হচ্ছে না ! সাধারণ মানুষের রক্তচোষা সরকারী ডাক্তাররা প্রাইভেট হসপিটালে গিয়েও উন্নত সেবার নামে মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্তদের রক্তচোষে খাচ্ছে ! অথচ সারা দেশের প্রতিটি উপজেলাতে একটি বা একাধিক সরকারী হসপিটাল ও কমিউনিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাজার হাজার সরকারী ডাক্তার থাকার পরও মধ্যবিত্ত ও নিন্ম বিত্ত শ্রেনীর মানুষরা হসপিটাল ও সরকারী ডাক্তারদের কাছ চিকিত্সা সেবা পায় না !
অথচ প্রতি বছর সরকারী মেডিক্যাল কলেজগুলো থেকে শত শত ডাক্তাররা (বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে ) সরকারী হসপিটালগুলোতে নিয়োগ পাচ্ছেন ! সরকারী হসপিটালগুলোতে যতটুকু চিকিত্সা হয় তা সর্ম্পণ দায়সারা !
কোনো রকম চিকিত্সা সেবা দিয়েই একজন রোগীকে প্রাইভেট হসপিটাল ও ক্লিনিকগুলোতে সরকারী হসপিটালের ডাক্তাররা রেফার করে দিচ্ছেন ! অথচ এসব ডাক্তাররাই আবার লাকজারিয়াস প্রাইভেট হসপিটালের চেম্বারে বসে ভিন্ন কৌশলে এসব রোগীদের কাছ থেকে চিকিত্সার নামে মোটা অংকের টাকা আদায় করে দিচ্ছেন ।
শত শত হসপিটাল আর হাজার হাজার সরকারী ডাক্তার দেশে থেকেও মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্তরা উন্নত চিকিত্সা পাচ্ছেন না । অথচ সরকার এসব ডাক্তারদের মাসে মাসে প্রচুর পরিমানে বেতনও দিচ্ছেন তারপরও এসব সরকারী ডাক্তাররা অতিরিক্তি মাত্রায় টাকা উপার্জনের জন্য সরকারী হসপিটালের চিকিত্সায় অবহেলা করে প্রাইভেট ক্লিনিক ও হসপিটালগুলোতেই সময় দিচ্ছেন !
সাধারণ জনগণের টাকাতেই সরকারী মেডিক্যালে পড়ে আবার সরকারী হসপিটালে ডাক্তারী করে সরকার আবার এসব ডাক্তারদের জনগণের টাকা দিয়েই তাদের বেতন দিচ্ছেন ! সেই সাধারণ জনগণই চিকিত্সা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ! এ ফাকে উন্নত সেবার নামে প্রাইভেট হসপিটালগুলো মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্তদের জিম্মি করে কৌশলে অর্থ আদায় করে নিচ্ছেন !
কে দেখবে এসব আজকাল যারা এসব তদারকি করবেন তারাই মূলত: এসব হসপিটাল ব্যবসাগুলোর সাথে জড়িত ! তাছাড়া বর্তমানে অনেক সরকারী হসপিটালের ডাক্তাররা যৌথভাবে প্রাইভেট হসপিটালগুলো পরিচালনা করেন,আর ডায়গোনেষ্টিক সেন্টারগুলোর কথা কি বলবো এসবের সাথেও সরকারী বেসরকারী ও প্রাইভেট চেম্বারের ডাক্তারা সরাসরিই জড়িত এবং ডায়গোনেষ্টিক সেন্টারগুলোও এসব ডাক্তারদেরই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ! হয়তো কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে !
এছাড়া বর্তমানে তো হসপিটালগুলোর আরেক রমরমা নতুন কৌশলী ব্যবসা হচ্ছে সন্তান প্রসব মানেই সিজার ! এটাও নারীদের সাথে ডাক্তার হসপিটালগুলোর একটা চরম প্রতারণাই !
কৌশলে নারীদের ভীতি দেখিয়ে নারীদের সিজারে বাধ্য করা একটা নতুন ব্যবসা নতুন প্রতারণা ! কোথায় যাবে সাধারণ মানুষ ? কোথায় পাবে স্বাস্থ্য সেবা ? কিভাবে বাচবেন চিকিত্সার নামে এসব প্রতারক ডাক্তার ও হসপিটালগুলোর ফাদ থেকে !
______এম.এ.মামুন
বিষয়: বিবিধ
১১৩২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি যান সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ এ ।
দেশে যেটার চিকিৎসা সম্ভব সেটা দেশে না করে উনাদের মত জনদরদী নেতারা দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানো মানে উনারা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উপর আস্থা রাখেন না ।
অথচ চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আস্থার স্থল বানানোর দায়িত্ব জনগন তাদেরকেই দিয়েছিল। উনারা দেশেই নিজেদের চিকিৎসা করিয়ে দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত রাখতে পারেন - উনারা যে দেশের জন্য রক্ত দিতেও প্রস্তুত ! তাহলে সাধারণ মানুষেরাও আর বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করাবে না যেটার চিকিৎসা দেশেই সম্ভব।
এখনকার অনেক মেয়েরা এবং মেয়ের মায়েরা চায় না লেবার পেইন নিতে । আজকালকার আধুনিক মেয়েরা ফিগার কনসাসও ।
তাই বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীনি নিজেই সিজার করাতে চায় । সিজারের বাচ্চা হয়ে যায় ফার্মের মুরগীর মত।
সত্য/ ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ / পিলাচ
মন্তব্য করতে লগইন করুন