রমজানে ব্যবসায়ীদের উচিত দ্রব্যমূল্যের দাম আরো সহনীয় পর্যায়ে রাখা !

লিখেছেন লিখেছেন মামুন আব্দুল্লাহ ১০ জুন, ২০১৬, ০৬:০২:৫০ সকাল

আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা কিছু দিবসকে কেন্দ্র করে দ্রব্যসামগ্রী থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম ন্যায্য মূল্যের চেয়ে কয়েক গুণ বাড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা শুরু করেন ।

বিশেষ করে আমাদের দেশে রমযান মাসে শাকশবজি থেকে শুরু করে ভোয্যতেল পেয়াজ কাচা মরিচ টমেটো ধনেপাতা বেগুন ও রমযানে রোযাদারদের প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি রমযানের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় ঈদকে ঘিরে ঈদের বাজারে সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধির হিড়িক !

পোশাক সামগ্রীর শপিং মলগুলোতে মেয়েদের বিভিন্ন ফ্যাশনের পোশাক থেকে শুরু করে ছোট ছোট বাচ্চাদের পোশাক বিতানেও একই অবস্থা লক্ষ্য করা যায় ।

বিশেষ করে মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্তদের পড়তে হয় মহা বিপত্তিতে ! রোযার ঈদ ও কোরবানীর ঈদকে ঘিরে দেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাজার ব্যবস্থায় চরম অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়ে আসছে ! একমাত্র বাংলাদেশেই বিভিন্ন উতসবকে কেন্দ্র করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ও পোশাক বিপণী বিতানগুলোতে অন্যন্যা মাস ও দিনের চেয়ে বেশী চড়া দামে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে দেখা যায় ।

বিপণী বিতানগুলোতে এমন অবস্থা যে,ক্রেতা বেধে পোশাকের দামও কয়েকগুণ বেড়ে যায় ! বিশেষ করে একজন বিক্রেতা বা দোকানী যখন দেখে যে,একজন ক্রেতা চলনে বলনে কথাবার্তায় স্মার্ট ও পয়সাওয়ালা তাদের কাছে বিক্রেতা সুযোগে বেশ চড়া মূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করেন । তাছাড়া যদি কোনো কাস্টমারের কোনো একটি বিশেষ ফ্যাশনের পোশাক পছন্দ হয়ে যায়,তাহলে বিক্রেতা কখনোই ঐ পোশাকের দাম কমাতে চায় না তখন বাধ্য হয়েই ক্রেতাকে চড়া দামে পোশাক সামগ্রী কিনে নিতে হয়। ঈদের আগের দিন সব কিছুর দাম থাকে অন্য দিনগুলোর চেয়ে আরো বেশী মূল্য । বাসে ট্রেনে গাড়ীতে ও অন্যন্যা যানবাহনেও এসব উতসবকে কেন্দ্র করে সব কিছুর দাম হুহু করে বেড়ে যায় !

যেখানে বিভিন্ন উতসবগুলোতে সবকিছু জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা উচিত কারন সবাই যেন এসব উতসবগুলোতে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করতে পারেন অথচ আমাদের দেশে রমযান মাস কোরবানী ঈদ ও অন্যন্যা উতসবগুলোকে ঘিরে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম অসহনীয় মাত্রায় বাড়িয়ে দেয়া হয় ।

মোফাস্শল শহর থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকা ও অন্যন্যা বিভাগীয় শহরগুলোতেও একই অবস্থা ! অথচ উন্নত দেশগুলোতে কোনো উতসবে কোনো দিবস বা কোনো বিশেষ মাসকে কেন্দ্র করে জিনিসপত্রের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার কোনো নজির নেই ! একমাত্র আমাদের বাংলাদেশেই এ অবস্থা দেখা যায় ! এর কারন বাজার ব্যবস্থার ওপর কোনোক্রমেই সরকারের প্রশাসনের নিয়ন্ত্রন নেই এবং নিয়মতিভাবে এগুলোর সঠিক ও পরিকল্পনা মাফিক তদারকি না করাই অপরিকল্পিতভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারন । আমরা জানি উন্নত দেশগুলোতে ক্রিসমাস ডের পর দিন এদের জন্যে একটি বিশেষ দিন রাখা হয় যা হচ্ছে বক্সিনডে । এ দিনে উন্নত দেশে শুধু কেনা কেটার জন্যে বন্ধ থাকে । এ দিনে সরকারী ছুটি থাকে এবং শপিংমলগুলো থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী পোশাকসামগ্রী সব কিছুতেই বিশেষ বিশেষ মূল্যছাড় দিয়ে ক্রেতাদের কেনাকেটায় উতসাহিত করা হয়,যাতে এ দিনটিতে সবাই নিজেদের প্রয়োজনীয় কেনাকেটা করতে পারেন ! সব পণ্যদ্রব্যের দাম অর্ধেক কখনোবা তার চেয়ে অনেক কমে বিক্রির সুযোগ দেয়া হয় ! যেখানে আমাদের দেশে কোনো উতসবকে কেন্দ্র করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয় অথচ উন্নত দেশে বিশেষ করে ব্রিটেনের বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উতসাহিত করা হয় বক্সিন ডেতে,এদিন শুধু মানুষ কেনাকেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকে ব্যবসায়ারাও ক্রেতাদের সুযোগ তৈরি করে দেন,আর আমাদের দেশেতো আমরা দেখি যে,বিভিন্ন উতসবগুলোকে ঘিরে কিভাবে সবকিছুর দাম ও যানবাহনে এবং ট্রান্সপোর্টে কিভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় ! এসব নিয়ন্ত্রনে সরকারের সুনিদির্ষ্ট নীতিমালা ও আইন প্রয়োগ না থাকার কারনেই অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাদের যোগসুত্রে দিনের পর দিন বছরের পর বছর আমাদের দেশে বিভিন্ন উতসবকে কেন্দ্র করে আবহমান কাল থেকেই এ সংস্কৃতি চলে আসছে ।

আমরা আশা করবো রমযান মাস ও আসছে ঈদে যাতে বাজার ব্যবস্থা দ্রব্যমূল্য এবং উতসবকে কেন্দ্র করে যে দাম বাড়ানোর প্রতারণা জালিয়াতি করা হয় তা যেন বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় ! এব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করছি ।

এছাড়া প্রিন্ট মিডিয়া ইলেক্ট্রনিট মিডিয়া রেডিও টেলিভিশন রিপোর্টাররা যদি একটু সচেতন হয়ে এসব বিষয়গুলো তুলে ধরেন তাহলে হয়তো রোধ করা সম্ভব। রমযান মাস সকলের জন্যে কল্যান সম্প্রীতি ও সংযম বয়ে আনুক সেই প্রত্যাশা আমাদের ! সকলের জীবন সুন্দর হোক সকলের আগামী দিনগুলো আরো কর্মময় ও সাফল্যময় হয়ে উঠুক ।

______এম.এ.মামুন

বিষয়: বিবিধ

১১৮৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

371595
১০ জুন ২০১৬ সকাল ০৬:২০
শেখের পোলা লিখেছেন : সরকারে যারা আছেন তাদের আমদানী চতুর্মূখী। দানম বাড়ায় তাদের কিছু আসে যায় না। তারা ঠাণ্ডা ঘরে বসেই সব কিছু ঠাণ্ডাই দেখেন। কষ্ট যা তা সাধারণ জণগনের। সাধারণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই কারণ বেলট ব্যবস্থা উঠে গেছে। সেই সাথে আছে চরিত্রহীন মুসলীম নামধারী ব্যবসায়ী,মজুদার আর ফড়িয়া। উৎসব মানেই এদের কাছে,'ঝড়ে পড়েছে কলা--'।অথচ কানাডায় রমজান মাস আসলেই অনেক স্টোরে বিভিন্ন ভাষায় স্বাগতম মাহে রমজানের পোষ্টার লাগায়। রোজায় ব্যবহৃত খাদ্য সামগ্রীর উপর মূল্য ছাড় দেওয়া হয়। মজার ব্যাপার ব্যবসায়ীরা মুসলীম নয়।আফসোস আমার দেশের ব্যবস্থাপনার উপর। ধন্যবাদ।
০৩ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৪
310219
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের অনেক ধন্যবাদ । ভালো থাকুন।
371600
১০ জুন ২০১৬ সকাল ০৬:৪৬
ফারদিন ইসলাম লিখেছেন : পোষ্ট স্টিটি করার মতো কারন রমজানকে ঘিরে ব্যবসায়ী চক্র সব কিছুর দাম অহেতুকভাবেই কয়েকগুণ বাড়িয়ে বিক্রি করেন ।
০৩ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৮
310220
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : ধন্যবাদ । অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
371603
১০ জুন ২০১৬ সকাল ১০:৪২
হতভাগা লিখেছেন : সারা বছরে এই একটা মাসেই তো আমাদের ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভের মুখ দেখে - এটাও বন্ধ করে দিলে তো কেউই আর ব্যবসা করতে আগ্রহী হবে না ।
০৩ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৮
310221
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : ধন্যবাদ । ভালো থাকুন ।
371776
১২ জুন ২০১৬ দুপুর ০১:১৪
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : মন্তব্যটি পোস্ট রিলেটেড নয়। রমাদান নিয়ে ব্লগে আয়োজন চলছে। অংশ নিতে পারেন আপনিও। বিস্তারিত জানতে-

Click this link
০৩ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৪:৩২
310218
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : ধন্যবাদ । ভালো থাকুন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File