আমার ছোট বেলার রোজা !
লিখেছেন লিখেছেন মামুন আব্দুল্লাহ ০৭ জুন, ২০১৬, ০৯:১০:৫১ রাত
রোজা নিয়ে অনেকেরই অনেক মজার স্মৃতি আছে । কারন ছোট বেলার রোজাগুলো একটু অন্যরকম ! কেউ সেহেরী খেতেন ঠিকই;কিন্তু কয়েক ঘন্টা রোজা রাখার পর ভেঙ্গে ফেলতেন আবার অনেকেই বারোটা একটা আবার অনেকই ইফতারীর খুব কাছাকাছি গিয়েও আর রোজা রাখতে পারতেন না ! তবে এই যে সকাল সকাল রোজা ভেঙ্গে ফেলা বা বারোটা একটা পর্যন্ত রোজা রাখা এ ধরনের রোজাগুলো বিশেষ করে ছোট বেলায় আমরা অনেকেই রাখতাম । আবার আমরা অনেকেই প্রতিদিন বারোটা একটা পর্যন্ত রেখে পরদিন আবার একই সময় পর্যন্ত রেখে একটা রোজা পূর্ণ করতাম । তবে কেউ এভাবে রেখেছে কিনা জানি না,তবে আমার ছোট বেলার প্রথম দিকের রোজাগুলো এভাবেই রাখতাম ।যদিও তখনকার ঐ ভাঙ্গা রোজাগুলো শুধুই শখে আনন্দে রাখতাম । বড়োরা সবাই রোজা রাখতেন তাদের সাথে একসাথে সেহেরী খাওয়া ও ইফতার করার জন্যেই মূলত: এভাবে রোজা রাখতাম । আসলে তখন বয়স কম হওয়ার কারনে আম্মা রোজা রাখতে দিতেন না ! অনেক সময় সেহেরীর সময় সজাগ পেতোম না ! যদিও প্রতিদিনই আম্মাকে বলে রাখতাম;কিন্তু আম্মা বেশীর ভাগ সময়ই সেহেরী খাওয়া শেষ হলে আমাকে জাগিয়ে দিতেন ! উঠে যখন দেখতাম সবার সেহেরী খাওয়া শেষ বা অনেকেই পানি খাচ্ছেন বা ফজরের আযান দিচ্ছেন তখন মন খুব খারাপ হয়ে যেতো । মাঝে মাঝে কান্নাও করতাম সেহেরী খাওয়ার জন্যে কেন ঠিক সময়ে আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়া হলো না । এ নিয়ে আমার মনও প্রায় দিনই খারাপ হয়ে যেতো । বিশেষ করে আম্মা জানতো যে যদি আমি ওনাদের সাথে সেহেরী খাই তাহলে সারাদিন শত চেষ্টা করলেও আমি রোজা ভাঙ্গবোনা তাই অনেক সময় আম্মা ইচ্ছা করেই সেহেরীর সময় শেষ হওয়ার পর জাগাতেন ! আবার অনেক সময় সেহেরীর সময় হাড়িপাতিলের বা কথার আওয়াজ পেয়ে জেগে যেতাম তখন আম্মা আমাকে দেখে একটা হাসি দিয়ে বলতো কিরে উঠে গেছোস ! আমিও চোখ ডলে ডলে একটা হাসি দিয়ে সেহেরী খাওয়ার জন্যে বসে পরতাম,আর এভাবেই আম্মার অনইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ছোট বেলা রোজা রাখতাম। মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট হতো খিধায় পেটে জ্বালাপোড়া শুরু হতো তারপরও রোজা ভাঙ্গতাম না । তারপর থেকে একটা দুইটা করে রোজা রাখা শুরু হলো । আলহামদুলিল্লাহ মাধ্যমিকে উঠার পর আর রোজা ভাঙ্গা হয়নি, আর এখন তো বেশ কয়েক বছর ধরে ইউরোপে থাকায় অনেক লম্বা সময় ধরে রোজা রাখছি ! মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে এতো বড়ো লম্বা দিনেও শত ব্যস্ততায় কাজেও রোজা রেখে যাচ্ছি প্রায় প্রতিদিন ১৮/১৯ ঘন্টা রোজা রাখতে হয় ইউরোপে ।তবে হয়তো অফিসিয়াল জব করার কারনে রোজা রাখতে কোনো সমস্যা হয় না । ইনশাআল্লাহ এবারও যেনো আল্লাহ তায়ালা রমজানের সবগুলো রোজা রাখার তৌফিক দেন । আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন । আমীন !
________এম.এ.মামুন
বিষয়: বিবিধ
১৫৩১ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন । আমীন !
হি হি হি
ছোট বেলার রোজা গুলো এমন ই,
অনেক সময় সেহেরী না খেয়ে ও রাখার চেষ্টা করতাম
মন্তব্য করতে লগইন করুন