প্রিয় মুহুর্ত্বগুলো এখন আর প্রিয়তে নেই !

লিখেছেন লিখেছেন মামুন আব্দুল্লাহ ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৬:০৬:৫০ সন্ধ্যা

এক সময় আমাদের প্রিয় মুহুর্ত্বের কিছু প্রিয় ছবি( পিকচার) আমরা এ্যালবামে ফ্রেমবন্দি করে রাখতাম । আমাদের খুব কাছের মানুষগুলো ছাড়া ঐ প্রিয় মুহুর্ত্বের ছবিগুলো আর কেউই দেখতে পেতো না ! আমাদের বার্থডের পিকচার আমাদের বিবাহের পিকচার এছাড়া যদি আমরা কোথায় ঘুরতে যেতাম সে ছবিগুলোও স্থান পেতো আমাদের এ্যালবামে ! সেই প্রিয় ছবিগুলো চাইলেও পাড়া মহল্লার বকাটে ছেলেরা বা অপরিচিত লোকজনদের দেখার কোনোই সুযোগ ছিলো না ! আমাদের খুব কাছের আত্নীয়স্বজন ও প্রিয় বন্ধবান্ধবরাই আমাদের এ্যালবামের ছবিগুলো দেখার সুযোগ হতো । আর এখনতো এমন এক যুগ এমন এক সংস্কৃতি এসেছে যে,আমাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই । প্রতিদিন আমরা কি করছি কি খাচ্ছি কোথায় যাচ্ছি নিজের প্রিয় মানুষগুলোর সাথে কখন কি করলাম মুহুর্ত্বেই সব কিছু ছবি তুলে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিচ্ছি । এই যে এক সংস্কৃতি যা আমাদের ব্যক্তিত্বকে অন্য অপরিতিজনদের কাছে দিন দিন খুবই সহজলভ্য করে দিচ্ছে । হয়তো আমরা আমাদের আনন্দের প্রিয় মুহুর্ত্বগুলো খুব দ্রুত অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিলাম এতে করে নিজের একান্ত বলে আর কিছুই রইলো না ! আমার সন্তান আমার বোন আমার মা আমার স্ত্রী এসব প্রিয় মানুষগুলোর প্রিয় মুহুর্ত্বগুলো এখন আর ব্যক্তিগত পর্যায়ে নেই সেগুলো এখন সবাই দেখছে ! আমার প্রিয় মানুষগুলোর সাথে প্রিয় সময়গুলো এখন আর প্রিয় নেই । আমার প্রিয় জীবনসঙ্গী স্ত্রীর সাথে একান্তে উঠানো ছবিগুলোও চলে যাচ্ছে অতি সাধারণ লোকদের কাছে যা এক সময় আমাদের ওয়াডড্রপে আলমারীতে সোকেইসেই সাজানো থাকতো ! কালের পরিক্রমায় সেই প্রিয় ছবি প্রিয় মুহুর্ত্বগুলো অন্যলোকজন তাদের মোবাইলে সেইব করে নিচ্ছে ! আমরা খুব গর্বের সহিত নিজের প্রিয়জনদের ছবিগুলো অন্যদের দেখানোর জন্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় মেনে পড়েছি ! সুন্দর সুন্দর নতুন নতুন বাহারী পোশাকে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্যে আমরা আমাদের প্রিয়জনদেরকে অন্যদের কাছে আনন্দের সাথে গর্বের সাথে ছড়িয়ে দিচ্ছি ! এটা কি আমাদের এক ধরনের উদারতা নাকি হিনমন্যতা ? আমরা আজ গড্ডালিকা প্রবাহে নিজেদের গা ভাসিয়ে দিচ্ছি একবারও চিন্তা করিনা নিজের স্ত্রীকে নিয়ে যদি নিজের সোবার ঘরে গা জড়িয়ে বসে থাকি আর সেই মুহুর্ত্বে যদি কোনো অপরিচিত লোক আমার ঘরে ঢুকে পড়ে তখন কি আমরা ঐ অপরিচিত লোকটাকে ঘরে ঢুকতে দিবো ঐ সময় আমাদের প্রিয় মুহুর্ত্বগুলোতে আমাদের কাছে কেমন অস্বস্তি লাগবে ! যদি ঐ মুহুর্ত্বগুলো আমরা অন্যকে দেখতে না দেই তাহলে কেন হাতে হাত ধরে গা ঘেষাঘেষি করে বসে থাকা বা দাড়ানো ছবিগুলো আমরা আজ অনলাইনে ছেড়ে দিচ্ছি । প্রিয় মানুষের সাথে ভালোবাসা এটা নিজের একান্ত প্রিয় মুহুর্ত্ব অথচ সেই প্রিয় মুহুর্ত্বগুলো নিলজ্ব বেহায়ার মতো সবাই দেখাচ্ছেন ! নিজের স্ত্রীকে অন্যের সামনে সস্তা করে তুলছেন ! নিজের মেয়েকে অন্যের কাছে বিলিয়ে দিচ্ছেন ! নিজের বোনকে অন্যের সামনে ছেড়ে দিচ্ছেন ! এটাতো ভালোবাসা হতে পারে না ! এটা এক ধরনের নোংরামী আর বেহায়াপনা ! যদি আপনার আমার দেয়া ছবিগুলো মার্জিত হয় তাহলে ভিন্ন কথা;কিন্তু আজকাল আমরা নিজের গোচরে আর অজান্তে কি করছি প্রিয়মানুষগুলোর প্রিয় মুহুর্ত্বগুলো নিয়ে ? আমরা কি পারবো আমাদের ঘরে কোনো অপরিচিত লোককে বসিয়ে নিজের প্রিয় সময়গুলোর ছবি কাউকে দেখাতে ? তাহলে কেন মুহুর্ত্বেই ছেড়ে দিচ্ছি ফেইসবুকে টুইটারে ও অনলাইন মাধ্যমগুলোতে এসব মুহুত্বগুলো ! আজ আমরা আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হয়ে গেছি আর এটাই আমাদের জ্ঞান বুদ্ধিকে পশুসুলভ বানিয়ে দিচ্ছে । আধুনিকতা ভালো তবে বিকৃত আধুনিকতা ভালো না ! যা আমাদের প্রিয় ব্যক্তিত্বকে অন্যের কাছে কলোষিত করবে ।

__________এম.এ.মামুন

বিষয়: বিবিধ

১২৯৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

359621
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:২৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এটা তো ভাই আপনার ইচ্ছার উপরই নির্ভর করছে কোন ছবি দেবেন আর দেবেন না!
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২২
298361
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : আমি সবার কথা বলছি না যারা এ ধরনের ছবি খুব উতসাহের সহিত ফেইসবুক ও অন্যান্য মাধ্যমগুলো দিচেছ তাদের কথাই বলছি,অনেক ধন্যবাদ । রিদওয়ান ভাই । ভালো থাকুন ।
359835
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১১:০৪
তৌহিদ মাহমুদ লিখেছেন : ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ ।
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২২
298362
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : ধন্যবাদ । ভালো থাকুন
359838
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১১:৫৪
আফরা লিখেছেন : ভাল লাগল অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২৩
298363
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আপু । ভালো থাকুন । সুস্থ্য থাকুন ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File