মুসলমানদের দুরাবস্থা ও আমাদের শাসক গোষ্ঠী।
লিখেছেন লিখেছেন ফখরুল ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০১:০৬:৫৭ দুপুর
বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে মুসলমানরা। ২০০৯-এ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে বিশ্বে মোট জনসংখ্যার প্রায় চার ভাগের এক ভাগ মুসলমান। এ গবেষণা অনুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৬৮০ কোটি যার মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ১৫৭ কোটি, অর্থাৎ বর্তমান বিশ্বে মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৩ শতাংশ মুসলমান। বিশ্বের ৩৫টি দেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ২৯টি দেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু হলেও অত্যন্ত প্রভাবশালী। বিশ্বের ২৮টি দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। মিশর, কুয়েত, ইরাক, মরক্কো, পাকিস্তান ও সৌদি আরব এসব দেশের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু আজ মুসলিম জাতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অত্যাচার জুলুম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অনবরত এর অন্যতম কারন হচ্ছে মুসলমানদের অনৈক্য। বিশ্ব মুসলমান শাশকদের কাঁধে ভর করেছে ইয়াহুদি ও ইসলাম বিদ্বেষী শক্তি। যাদের কাজ হচ্ছে মুসলমান মুসলমানদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করা। ছোট বেলায় একটা গল্প শুনেছিলাম। এক গ্রামে একটি জমিদার বাড়ী ছিল, জমিদার প্রথা চলে যাবার পরেও জমিদারের বংশদররা এখন আছে প্রভাব নিয়ে, শোষণের মনমানসিকতা নিয়ে। জমিদার বাড়ীর সামনের দিকে একটি বড় দীঘির অপর পাড়ে বাস করত ২ জন কৃষক। জমিদার প্রথা শেষ হবার পর কৃষকের পূর্বপুরুষেরা জমিদার বংশের লোকদের কাছ থেকে খরিদ করে নেয় এক খণ্ড জমিন। সেই থেকে বংশ পরমপরায় বাস করে যাচ্ছে কৃষক পরিবার। কৃষক একে অপরের বন্ধু ছিল। এক জন আরেক জনের সুখে দুঃখের অংশীদার হতেন। বিপদে আপদে এগিয়ে আসতেন। ভূগোলিক সীমানা অনুযায়ী কৃষকের বাড়ীটি ছিল জমিদার বাড়ীর একটি অংশ। জমিদার বাড়ীর অন্য লোকজন শহরে থাকতেন। গ্রামের দিকে তাদের এখন আর কোন আগ্রহ নেই। জমিদার বাড়ীর রক্ষক কে সবাই গ্রামের মোড়ল হিসেবে মানত। মানুষ হিসেবে মোড়ল ছিল অনেক লোভী। কৌশলে তার স্বার্থ উদ্ধার করে নিত চোখের অগোচরে। এক পর্যায়ে মোড়লের চোখ পড়ল তার বাড়ীর সামনের কৃষকের বাড়ীর দিকে। ফন্দী করতে থাকলো কি ভাবে সে কৃষকের বাড়ীটি তার করে নিবে। জোর জবরদস্তিতে কোন কাজ হবে না। একটা কৌশল করতে হবে। রাত দিন ভাবতে থাকে মোড়ল কি ভাবে এদের এই জমিন থেকে বিতাড়িত করা যায়। বুদ্ধি এলো মাথায় এদের ২ পরিবারের মধ্যে বিভেধ সৃষ্টির মাধ্যমে এটা সম্ভব। কাজ শুরু করল মোড়ল। প্রথমেই সে ২ কৃষকের সাথে নিজের ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলল। পরমাত্মীয়ের মত তাদের সুখে দুখে তাদের সাত দেওয়া শুরু করল। ২ পরিবারেরই খুব বিশ্বস্ত হয়ে উঠলো মোড়ল। এবার তার কূট চাল দিয়ে তাদের বিভেধ লাগিয়ে দিল। এক পর্যায়ে মোড়ল ঢোলের ২ দিকেই বাড়ি যাচ্ছিলো। এবার মোড়ল দুর্বল কৃষকের পক্ষ নিলো এবং নানা পরামর্শ দিতে লাগলো। তাকে বলল আদালতে মামলা করতে, কৃষক বলল আমি মামলা কি ভাবে চালাবো? মোড়ল বলল আমি আছি না? এই বলে তাকে সাহস দিয়ে আদালতে মামলা করায় কৃষক কে দিয়ে। মামলা চলতে থাকে কিন্তু কোন নিস্পত্তি হচ্ছে না। এবার জমিদার মামলা চালাতে অক্ষমতা প্রকাশ করল। আর প্রতি দিন ঝগড়া কলহ লেগেই রইলো ২ পরিবারের মধ্যে। অন্যদিকে মোড়ল গ্রাম বাসীকে ক্ষেপীয়ে তুলল ২ কৃষকের বিরুদ্ধে। গ্রামের জনগন ক্ষেপে গিয়ে এক দিন পঞ্চায়েত ডাকল। পঞ্চায়েতে সিদ্ধান্ত হল ২ পরিবারের কারনে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, এদের গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হবে। অবশেষে তাই হল গ্রাম ছাড়া হল ২ পরিবার। গ্রামের মোড়ল কৃষকের বাড়ী দখলে নিয়ে নেয়।
কৃষক বুঝতে পারেনি লোভী মোড়লের কৌশল, সুঁই হয়ে এসে কুড়াল হয়ে বের হয়ে গেছে মোড়ল। এটা গল্পের কথা আর বাস্তবতা কি? বাস্তবতা কি আসলেই ভিন্ন? না সে নিরীহ জনগন এখন ও আছে সেই তীর্থের কাকেরা এখনও আছে। তারা শুধু সুযোগ খোজে কি ভাবে একে অপরের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করা যায়।
আজকে মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকালেই উপরের গল্পের সরূপ দেখতে পাই। কি ভাবে লোভী মোড়লেরা নিরীহদের সরলতার সুযোগ নিয়ে অবলীলায় খেলা করে যাচ্ছে। আর মুসলিম বিশ্বের নেতারা প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হচ্ছে ইয়াহুদিবাদি ইসলাম বিদ্ধেষী শক্তির কাছে।
বিষয়: সাহিত্য
৩৪৪৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খোদায়ী বিধানের প্রতি সীমাহীন অবহেলা মুসলিম জাতির দুর্দশার কারণ!
আল্লাহ হেফাযত করুন,আমিন!
আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। সুম্মা আমিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন