হাইব্রিড গণতন্ত্র! ভয়ঙ্কর আগ্রাসী সরকার আর অসহায় দূর্বল বিরোধীদলই যার ফসল।
লিখেছেন লিখেছেন রোজবাড ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৮:৩২:১১ রাত
গত দশ বছরে গণতন্ত্রের মূলনীতির এক নীরব পরিবর্তন ঘটে গেছে! একবিংশ শতাব্দিতে এসে গণতন্ত্রের ব্যপক মিউটেশন হয়ে গেছে। বিশ্বের পরাশক্তি সমূহের সাম্রাজ্যবাদ নীতি অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ সমূহের গণতন্ত্রের কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে। গণতন্ত্র এখন তার আদি জাত হারিয়ে উন্নতজাতের মত ফলনে বর্ধিত হয়ে সাম্রাজ্যবাদিদের ব্যপক চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত।
এ গণতন্ত্রে এখন “ভোটের রাজনীতি” বা “মতপ্রকাশের সমান সুযোগ” “মানবাধিকারের রক্ষাকবচ” “পরমত সহিষ্ণুতা” জাতীয় উপাদানগুলোকে কেটে ফেলা হয়েছে। প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে “উন্নয়নের জন্য” “নিরাপত্তার জন্য” ইত্যাদি চটকদার মোড়কে পরাশক্তির চাহিদা উপযোগী ও তাদের ইশারায় চালিত খাটি স্বৈরাচারী জাত। ক্ষমতাসীনদের সুবিধা এখানে দ্বিগুন। একদিকে বিরোধীদল ও মতের উপর সহজেই দমন পীড়ন করা যায়; ইচ্ছা মাফিক গুম, খুন, গুপ্তহত্যা, বিনা বিচারে হত্যা করা যায় বা জেল, জুলুমে আটকে রাখা যায়। অপরদিকে নিজেদের লাগামহীন দূর্নীতিকে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল পর্যায়ের দলীয় প্রভাব দ্বারা হাওয়া করে দেওয়া যায়। নিশ্চিন্তে গড়া যায় অবৈধ সম্পদের পাহাড়। প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে নিস্তব্ধ করে দেওয়া যায় মানবাধিকার, ভোটাধিকার আর সমধিকারের পক্ষে উঠা দাবিসমূহকে।
যখন যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন এই ধরণের হাইব্রিড গণতন্ত্রের চূড়ান্ত প্রোডাক্ট হলো চরম অসহিষ্ণু আর ভয়ঙ্কর এক আগ্রাসী সরকার আর তার অধীনস্ত নির্যাতিত দূর্বল এক বিরোধীদল। এ যেনো শিকারি আর শিকারের বেঁচে থাকার নিরন্তর লড়াই। সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট। তবে আশার বিষয় এই লড়াইয়ে শিকার সবসময় এই ভূমিকায় থাকবেনা। সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রভূ রাষ্ট্রের খেয়ালের পরিবর্তন হলেই এই শিকার-ই আবার শিকারির ভূমিকায় চড়ে উঠতে পারে বর্তমান যারা ঝানু শিকারির ভূমিকায় আছে তাদের ঘাড়ে। সাম্রাজ্যবাদীদের নিরবিচ্ছিন্ন স্বার্থের যোগান দিতেই সময়ের বিবর্তনে শিকার আর শিকারির ভূমিকার পালাবদল অনস্বীকার্য এই হাইব্রিড গণতন্ত্রে।
বিষয়: বিবিধ
১১০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন