স্বাধীনতার ৪৫ বছরঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন রোজবাড ২৬ মার্চ, ২০১৫, ০৯:০৫:০৩ রাত
১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ। দিনটি ছিল বাঙালি জাতির জীবনের এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন আর ৬৯ এর গণ-অভুত্থ্যানের মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত স্বাধীনতা পিয়াসী বাঙালি জাতি এই দিনটিতে পেয়েছিল চূড়ান্ত মুক্তির মহাবার্তা। পাকিস্তানী শাসন ও শোষণের শৃঙ্খলকে চিরতরে গুড়িয়ে দেওয়ার এক ঐতিহাসিক আহবানের মধ্য দিয়ে আজকের এই দিনেই ভাস্বর হয়েছিল মুক্তিকামী লাখো কোটি বাঙালির দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। যারই ফলশ্রুতিতে সমগ্র জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির সংগ্রামে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, লখো শহীদের রক্ত, সহস্র মা বোনের সম্ভ্রমহানি আর অসংখ্য যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার চিরপঙ্গুত্বের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। মুক্তির চেতনায় তাড়িত সকল বাঙালির স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে আনার সম্মিলিত দৃঢ় প্রত্যয়ের এই দিনটিকে তাই আমরা স্মরণ করি আমাদের স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস রূপে। দিনটি আমাদের জন্য পরম আনন্দের ও গর্বের।
প্রতি বছরই ঘুরে ফিরে দিনটি আমাদের মাঝে এসে উঁকি মেরে যায়। সবাইকে স্মরণ করিয়ে যায় স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন এই পরম সত্যটিকে। স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অবশিষ্ট কাজগুলোকে সম্পন্ন করার দায়িত্ববোধকে জাগ্রত করে জানান দিয়ে যায় স্বাধীনতার সংগ্রাম এখনো শেষ হয়ে যায়নি। নতুন প্রজন্মকে ভাবতে শেখায় দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে, স্বাধীনতার মহাত্ম সম্পর্কে। ঠিক এমনই কিছু বার্তা নিয়ে সেই দিনটি আজ আবার ফিরে এসেছে আমাদের মাঝে। তাই স্বভাবতই এই দিনটিতে স্বাধীনতা পরবর্তী আমাদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, স্বাধীনতার প্রধান প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আমাদের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে একটু আলোনা ও বিশ্লেষণের দাবি রাখে। যার ধারাবাহিকতায় আমাদের এই আয়োজন।
আমাদের মাঝে স্বাধীনতার বীজ গ্রথিত হয়েছিল শুধুমাত্র আলাদা কোন ভূসত্বার দাবিতে নয়। বরং এর সাথে জড়িত ছিল প্রতিটি মানুষের নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার। যেখানে থাকবে রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি, সংস্কৃতিক স্বকীয়তা, কথা বলার অধিকার, এবং শোষণ, নিপীড়ন ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী সমাজ ব্যবস্থা। আমাদের স্বপ্ন ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা সহ প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক, ও সামাজিক অবকাঠামোগত বৈপ্লবিক উন্নতি সাধনের মাধ্যমে নারী-পুরুষ, ধনী-গরীব, গ্রাম-শহর প্রভৃতির ব্যবধান ঘুঁচিয়ে গড়ে তোলা এক সোনার বাংলাদেশ। স্বাধীনতা পরবর্তী ৪৪ বছরে আমরা কতটুকু পেরেছি স্বাধীনতার সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোকে বাস্তবায়ন করতে সেটিই এখন বিবেচ্য।
স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিচারে অনেকটা নবীন হলেও পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ এখন আর বিচ্ছিন্ন গুরুত্বহীন কোন দেশ নয়। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলায় সকল ধরণের সমন্বিত উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। কমনওয়েলথ, সার্ক, ওআইসি, বিমসটেক, ন্যাম প্রভৃতি সংগঠনে বাংলাদেশের ভূমিকা উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা আজ পৃথিবীব্যাপী। এখন থেকে চুয়াল্লিশ বছর আগে যে জাতি অন্যায়, আর শোষণের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল, শোষণ, বঞ্চনা আর পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীন সত্তা রূপে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করেছিল সেই জাতিই আজ পৃথিবীর সমস্যাসঙ্কুল দেশে
দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে সেনা পাঠাচ্ছে। ১৯৮৮ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ এই মিশনে সেনা পাঠানো দেশগুলোর মধ্যে নেতৃত্বস্থানীয় পজিশন দখল করে আছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের লক্ষাধিক সেনা সদস্য বিশ্বের ৩৯ টি দেশে ৫৪ টি মিশনে সক্রিয় অংশগ্রহন করেছে । স্বাধীন বাংলাদেশের অকুতোভয়ী সেনারা সেখানে কাজ করছে শিক্ষা-স্বাস্থ্য উন্নয়নে, দারিদ্র্য দুরীকরণে, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত জনপদের সামাজিক অবকাঠামো পুনর্গঠনে। স্বাধীনতার মাত্র পঁয়তাল্লিশ বছরে এসে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের যে অর্জন সেটি নিঃসন্দেহে গর্ব করার মত। এই অর্জন আমাদেরকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক সুখ্যাতি, পৃথিবীব্যাপী উন্মোচিত করেছে শান্তিপ্রিয় এক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
স্বাধীনতার পর থেকে উৎপাদন ও রপ্তানিশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি যথেষ্ঠ আশাব্যঞ্জক। স্বাধীনতার পর পোশাক, চামড়া, ও ঔষুধ শিল্প আমাদের অর্থনীতিতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। বিগত দুই দশক ধরে রেডিমেড পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সফলতা আমাদের অর্থনীতিতে এই শিল্প যোগ করেছে নতুন মাত্রা। দেশের পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানি শিল্প বর্তমানে বিলিয়ন ডলারের বাজার দখল করে আছে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকল্পে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে এ শিল্পের অবস্থান শীর্ষে। এর পরই আছে ঔষুধ শিল্প। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩০০ টির মতো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি রয়েছে। আমাদের চাহিদার মাত্র ৩% ঔষুধ বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় আর বাকি ৯৭%-ই আসে স্থানীয় কোম্পানি থেকে । শুধু তাই নয়, ঔষুধ শিল্পের অভূতপূর্ব উন্নতি আমাদের দেশকে বিশ্ববাজারে ঔষুধ রপ্তানি করার মতো সক্ষমতা দান করেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে ফার্মা সেক্টর বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি স্বল্প আয়তনের বিপুল জনগোষ্ঠির এই দেশটির অর্থনীতিতে এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
বিগত এক দশকে মানব সম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ সাড়া জাগানো উন্নতি করেছে। জাতিসংঘের ইউএনডিপি’র রিপোর্ট ২০১৩ অনুযায়ী বাংলাদেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে দক্ষিন এশিয়ার রাইজিং স্টার হিসাবে যা কিনা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে আমাদের পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে। দারিদ্র বিমোচনে, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে, নারী শিক্ষা উন্নয়নে, সিডর, নার্গিসের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে । বিশ্বায়ন, মুক্তবাজার অর্থনীতি আর প্রযুক্তিখাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে সমান তালে। দেশের মোবাইল ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যাপক বিস্তৃতি দেশের লক্ষ কোটি মানুষের জীবনকে আমূলে বদলে দিয়েছে। ব্যংক, বীমা, সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের ডিজিটালাইজেশনের ফলে সেবাখাতগুলো মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে গেছে। আজ পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএইচসি’র মতো বড়ো বড়ো পাবলিক পরীক্ষা গুলোর সাথেও সম্পৃক্ত হয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। ঘরে বসেই ছাত্রছাত্রীরা পেয়ে যাচ্ছে তাদের ফলাফল। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে এসে বাংলাদেশের এই অর্জনকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। প্রতিটি অর্জনের মধ্যেই নিহিত আছে স্বাধীনতার সুফল।
একটা জাতির সার্বিক উন্নয়নে যে জিনিসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেটি হলো শিক্ষা। শিক্ষার অনুপস্থিত মানব হৃদয় আলো বিহীন নিকশ কালো অন্ধকারের সমতূল্য। স্বাধীনতার উদ্দেশ্য যদি হয় পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে উন্নয়নের সোপান বেয়ে বেয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া তবে শিক্ষার ভূমিকা হলো সেক্ষেত্রে আলোকবর্তীকা হয়ে প্রতিটি পদক্ষেপকে সেপথ চিনিয়ে দেওয়া। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে শিক্ষার অভাবিত উন্নতি সাধিত হয়েছে। পাকিস্থান শাসনামলে বাঙালিরা যেখানে শিক্ষা, চাকরি সহ বিভিন্ন পেশা ক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে হতো বৈষম্যের শিকার হতো, আজ সেখানে এদেশের নতুন প্রজন্ম পাচ্ছে স্বাধীনতার সুফল। হাতে গোনা কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হলেও আজ উচ্চশিক্ষার দ্বার দেশের বড়ো বড়ো শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। বাংলার চিরাচরিত সাধারণ এক নিভৃত পল্লী এনায়েতপুরে অবস্থিত আমাদের এই খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়টিই সেটার বাস্তব প্রমাণ। বর্তমানে দেশে ৩৫ টি সরকারী ও ৭৯ টির মতো বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে । স্বাস্থ্যখাতেও শিক্ষার বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। আমাদের দেশের মেধাবী তরুনরা উচ্চশিক্ষিত হয়ে সারা বিশ্বে এখন তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে। সারা পৃথিবীতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সেবাদানকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও তাঁদের কর্মতৎপরতা উল্লেখযোগ্য। নারী শিক্ষার ব্যাপক অগ্রগতি সহ দেশের সার্বিক শিক্ষার হার বৃদ্ধি আমাদের স্বাধীনতা অর্জনেরই সুফল।
এবার অপ্রাপ্তির দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বিশ্লেষণ করি তবে দেখতে পাই স্বা্ধীনতার পূর্ণ সুফল পেতে আমাদের এখনো ঢের বাকি। আমাদের প্রায় সমসাময়িক যুগে স্বাধীনতা প্রাপ্ত দুইটি দেশ, মালায়েশিয়া ও সিংগাপুর এর দিকে যদি আমরা একটু দৃষ্টিপাত করি তাহলে আমাদের অপ্রাপ্তি বোধটা আরও স্পষ্ট হবে। ষাট ও সত্তোর দশকে যেখানে এসব দেশের শ্রমিকরা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে গেছে, তারাই আজ উন্নতির শিখরে পৌছে অন্য দেশের দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরী করছে। নিস্ফলা উষঢ় সিংগাপুর আজ বৈশ্বিক ব্যবসা বাণিজ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অথচ অনেক সম্ভাবনা নিয়ে অগ্রযাত্রা করলেও আমরা স্বাধীন বাংলাদেশকে এখনো সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী দুর্বল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজের সর্বস্তরে ঘাতক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি, অপসংস্কৃতির আগ্রাসন, আর দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার চিরবৈরী সম্পর্ক আমাদের অগ্রযাত্রার অনেক সম্ভাবনাকে ব্যাহত করেছে। দেশের বৃহত্তর অর্থনৈতিক খাতগুলোর স্থিতিশীলতা, জনসংখ্যা্র নিয়ন্ত্রণ, নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, সাহায্যের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার হ্রাস, দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি, বেসরকারী সেবাখাতগুলোর প্রসারতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমরা উল্লেখযোগ্য সফলতা পেলেও রাষ্ট্র পরিচালনার মুল চালিকা শক্তিরূপে একটি পরিশুদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত অপরাধ, দুর্নীতি, আইনের অপপ্রয়োগ, বাক স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ, দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি, প্রভৃতি আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং করছে। এখনও দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর মীমাংসার ক্ষেত্রে আমরা নিজ নিজ দলীয় সংকীর্ণ চেতনার উর্ধ্বে উঠে সম্মিলিত কোন পদক্ষেপ নিতে পারিনা। স্বাধীনতার মূল চেতনার পরিপন্থী এসব সমস্যা থেকে যদি বেরিয়ে আসতে না পারি তাহলে আগামী দিনগুলোতে আমরা বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবোনা।
সুতরাং সফলতা ব্যার্থতার চুলচেরা বিশ্লেষণে প্রত্যেককে ভাবতে হবে দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের মহান শহিদ্দের রক্তের ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতা থেকে দেশের কল্যানে আমরা কে কতটুকু আত্মনিয়োগ করতে পারছি। স্বাধীনতার এই দিনে- “বিভেদ নয়, ঐক্য; বৈষম্য নয়, সমতা; অসহিষ্ণুতা নয়, বন্ধুত্ব”- এই স্লোগানের ভিত্তিতে বিদ্যমান সকল সমস্যাগুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নিজেদের সকল সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে; এর মাধ্যমে আগামী দিনে বাংলদেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। তাই আসুন পারস্পারিক সংকীর্ণ স্বার্থের উর্দ্ধে উঠে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নবীন প্রবীন সকলের সমন্বিত প্রয়াসে নতুন করে গড়ে তুলি দেশকে। অর্জিত স্বাধীনতাকে আরো সমুন্নত করে তুলে ধরি বিশ্ব দরবারে। এই হোক এবারে আমাদের স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার।
বিষয়: বিবিধ
২১৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন