যেমন বুনো ওল তেমন বাঘা তেতুল! গাল ধরলে তবেই না তেতুলের মজেজা বুঝবে! সাব্বাস শফী সাহেব
লিখেছেন লিখেছেন রোজবাড ১৫ জুলাই, ২০১৩, ০১:৫৫:৪১ দুপুর
সম্প্রতি ‘তেতুল’ শব্দটি বোধ হয় বাংলাদেশের মিডিয়াতে সবচেয়ে আলোচিত একটি শব্দ।
পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনে মহাজোটের লজ্জাজনক পরাজয়ের পর আওয়ামীলীগ ও বাম ঘরানার বড়, পাতি নেতা থেকে শুরু করে তাদের বংশবদ বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, মানবাধিকার কর্মীদের মুখে এখন তেতুল তেতুল রব উঠেছে। ছোটবেলায় বুনো ওল খেয়ে প্রচন্ড গাল ধরার পর মুখটা হা করে মায়ের কাছে এমন খুনশুটিই করতাম। কেন সে গাল ধরে এমন ওল রান্না করেছে? মা তখন কিছু তেতুল হাতে ধরে দিয়ে বলতেন আব্বু এটুকু খেয়ে ফেল দেখবে গাল ধরা এমনিতেই সেরে গেছে। খাওয়ার পর দেখতাম সত্যিই তেতুল তো ভালোই কাজ করে গাল ধরা তাড়াতে।
আওয়ামীলীগ ও বামরা রেডিও, টেলিভিশন ও পেপার পত্রিকায় এখন তেতুল তেতুল করে যে গলা খেঁকড়ি দিয়ে যাচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে তারা রীতিমত আফ্রিকার জঙ্গল থেকে উৎপন্ন কোন বুনো ওল খেয়েছেন। অবশ্য জনগনের গণরায় যদি গাল ধরার কারন হয়েই থাকে তবে তেতুলের সন্ধন তো করবেই। এটাই স্বাভাবিক।
ঘটনার সূত্রপাত অনেকদিন আগের আল্লামা শফীর একটা বয়ানে নারীদেরকে তেতুলের সাথে তুলনা করা নিয়ে। যদিও এই ভিডিওটির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক আছে। আল্লামা শফি সাহেব যখন বয়ানটি দিয়েছিলেন তখন অবশ্য হেফাজতের উত্থান হয়নি। রাজনীতি বিষয়ে চির ঘুমন্ত এই কওমী গোষ্ঠীটির তখন ঘুমিয়েই ছিল। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে গঠিত শাহবাগের গণজাগরন মঞ্চ তখনও হেফাজতের ঘুম ভাঙ্গায় নাই। তাই ভিডিওটি এতদিন তাদের গাল ধরার কারণ হয়নি। এটাকে বলা যেতে পারে আওয়ামীলীগের জন্য বুনো ওল গলাধঃকরণ করার আগের পর্্যায়। গাল ধরলে না তেতুলের ডাক পড়বে!
কিন্তু এখন এদের শুধু গালই ধরেনি বরং নিজেদের বিপক্ষে জনমতের মহাপ্লাবনের যে পূর্বভাস সৃষ্টি হয়েছে তাতে রীতিমত আদর্শিক বদহজম শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে হেফাজতের উত্থানই যে আওয়ামীলীগের অন্তরাত্মায় সমূহ পরাজয়ের কাঁপুনি সৃষ্টি করে দিয়েছে এটা বুঝতে আর রাজনৈতিক বিশষজ্ঞ হওয়া লাগেনা। তবে যেটা বুঝার জন্য কিছুটা দূরদর্শিতা লাগে সেটা হলো এই ঝাপটা ঠেকাতে তারা এখন যে তেতুলের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে তার মাধ্যমে আদৌ কী তারা পারবে নিজেদের বিপক্ষে চলে যাওয়া এই জনমতকে ধরে রাখতে? শফী সাহেবের কুরানের প্রকৃত জ্ঞান নেই, শফী সাহেব নারীকে ভয়ঙ্করভাবে অপমানিত করেছে, শফী সাহেবের শাস্তি চাই, শফী সাহেবের এই বক্তব্য ইংরেজী করে বিদেশীদের দরবারে ছড়িয়ে দিতে হবে ইত্যাদি বুলি আওড়িয়ে তারা কী আদৌ পারবে মতিঝিলের সেই ভয়ঙ্কর রাতের দুঃসহ স্মৃতিকে জনগণের মন থেকে মুছে দিতে? পারবে কী জীবনের শেষ বিকেলে এসে লাখো ধর্মপ্রান মানুষের মনিকোঠায় স্থান করে নেওয়া শফী সাহেবকে জনপ্রিয়তায় নিজেদের ন্যায় ভাটার বেলাভূমিতে নামিয়ে আনতে? এটা যে সম্ভব না সেটা বোঝার জন্য বাম ও আওয়ামী ঘরানার লোকদের মধ্যে দূরদর্শিতা সম্পন্ন লোকজনের আসলেই যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। আর এজন্যই অনেকদিন আগের একটা বক্তব্যের তেতুল উপমা নিয়ে তাদের এ অনর্থক চেচামেচি।
বিষয়: বিবিধ
৩৪৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন