মতিঝিলের জনপ্লাবন আর নাস্তিক ব্লগার, নেতা সর্বস্ব বাম, ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফেরীওয়ালা ঘাদানিকদের আবেশে আড়ষ্ট আওয়ামীলীগের অসার উপলব্ধিবোধ। কোন্‌ দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন লিখেছেন রোজবাড ০৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:১৪:৫৩ দুপুর

সরকার যদি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আবেগ অনুভূতিকে বুঝতে ব্যর্থ হয় তবে শীঘ্রই গণসমর্থণ হারিয়ে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। মহাজোটে আওয়ামীলীগের সবচেয়ে বড়ো শরীক হলো জাতীয় পার্টি। সেই জাতীয় পার্টির মধ্যেও প্রকৃত উপলব্ধিবোধ এসে গেছে। তারা এখন হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে আগত লাখো জনতাকে পানি ও শুকনা খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করছে।

কিন্তু সরকার এখন যাদের দেখানো পথে হাটছে তারা হলো জনবিচ্ছিন্ন কিছু বাম নেতা এবং দেশের সম্প্রতি গজিয়ে উঠা কিছু হলুদ মিডিয়ার আশীর্বাদে সিক্ত মুক্তি যুদ্ধের চেতনা, মানবাধীকার কর্মী, তরুন প্রজন্ম এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মুখোশ পরা কতিপয় চিহ্নিত মুখ। এরা সকলে মিলে সুশীল (?) নামের বিমূর্ত প্রতিচ্ছবি দিয়ে আওয়ামীলীগকে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে। আর আওয়ামীলীগ ও মরুভূমিতে পানি খোঁজার নিমিত্তে নিরন্তন ছুটে চলছে এই চুশীল নামক মরীচিকার পেছনে।

মজার ব্যাপার হল আলাদা নির্বাচন করলে এই চুশীল ছায়াতলের আশ্রিত বাম নেতারা নিজেরাই নিয়মিত জামানত হারানোর নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এসব রাজনৈতিক নেতারা কখনো জনসর্থনের উপর ভর দিয়ে চলেননা। এরা চলে দূর্নীতিবাজ, কালোটাকার মালিক কিছু অসৎ ব্যক্তির রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক অশুভ স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত লাল, নীল ও হলুদ মিডিয়ার উপর ভর করে। টিভি স্ক্রিনে বা পেপার পত্রিকায় এদের দাম্ভোক্তি দেখে এটা ভাবার অবকাশ নেয় যে এরা লাখ লাখ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। যারা ভাবে তারা বর্তমান আওয়ামীলীগের মতোই বোকার স্বর্গে বসবাস করছে।

বোকারা সবসময়ই বিভ্রান্ত হয়। নিজেদের বর্তমান কর্মকান্ডের দ্বারা মানুষকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তাদের আগের কর্মকান্ড কতটা ভুল ও হাস্যকর ছিলো। তাইতো দেশের ১৬ কোটি জনগণ এখন দেখতে পাচ্ছে যে কর্মের (আসলে হবে অপকর্ম) জন্য একজন পেল দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ খেতাব আর সেই একই কর্মকান্ডের জন্য তার গুটি কয়েক সহকর্মীরা পেল জেলের ভাত।

লেখার স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদি চটকদার স্লোগান নিয়ে যেসব ব্লগাররা নিজেদেরকে নাস্তিক জাহিরি করতে গর্ব বোধ করতো, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের পবিত্র ধর্মীয় অনুভূতিতে বছরের পর বছর আঘাত দিয়ে লেখালেখির মাধ্যমে পরম আত্মতৃপ্তি উপভোগ করতো তাদেরই গুটিকয়েকের উপস্থিতিকে সরকার নিরাপত্তা দিয়ে, বিরিয়ানী সরবরাহ করে, মিডিয়ার কভারেজ দিয়ে শাহবাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দিনের পর দিন ধরে জামাই আদরে লালন করেছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের নায্য দাবীকে পুঁজি করে তারা সাধারণ মানুষকে তাদের ছায়াতলে ডেকে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ, ইসলামী অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অপব্যবহারের দ্বারা জনগণের মধ্যে বিভিক্তির দগদগে ক্ষত তৈরী করতে সচেষ্ট হয়। দেশের সাধারণ মানুষ দ্রুতই তাদের এই প্রতারণার কৌশল উপলব্ধি করতে পেরে তাদের ঐ তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চকে প্রকৃত গণবিচ্ছিন্ন মঞ্চে রূপান্তরিত করে দিয়েছে। আর তাই তাদের পৃষ্ঠপোষক সরকার এখন পায়ের তলার মাটি হারিয়ে সেই বিরিয়ানী খাওয়ানোদের কয়েকজনকে এখন জেলের ভাত খাওইয়াইয়ে জনগণকে বুঝাতে চাচ্ছে এখন তাদের কেতাবে আর খেতাব নেই। আর এভাবেই যুগে যুগে বোকাদের স্বরুপ উন্মোচিত হয়।



যাহোক হেফাজতে ইসলামের জনসমুদ্রের তোড়ে কিছুটা সম্বিৎ ফিরে পাওয়া আওয়ামীলীগ তাদের উগ্র ধর্মবিদ্বেষী মিত্রদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বর্তমানে নেওয়া এই ক্ষুদ্র পদক্ষেপ তৌহিদি জনতাকে সন্তুষ্ট করতে পারছেনা। তাদের বিবেচনাই এটা সরকারের এক ধরণের আইওয়াশ। দূরদর্শী জনগণের অনেকেই এটাকে দেখছে সাগরতীরের চোরাবালিতে ডুবন্ত মহাপ্রতারকের শেষবারের মতো বাঁচার এক অসহায় আর্তি হিসাবে। সরকারের প্রত্যক্ষ মদদপুষ্টদের ডাকে আহুত হরতাল ও বাঁধাকে উপেক্ষা করে মতিঝিলে উপস্থিত লক্ষ লক্ষ ইসলামপ্রিয় জনতা আজ সেটারই সত্যতা প্রমান করে দিচ্ছে।

এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পবিত্র ধর্মীয় অনুভূতি, দেশপ্রেম, এবং জাতীয় ঐক্যের দৃঢ় চেতনা যদি এখনো আওয়ামীলীগের শুভবুদ্ধির উদয়নে ব্যর্থ হয় তবে বলতে হয় সামনের দিনগুলিতে তাদের জন্য প্রকৃতভাবেই শোচনীয় অবস্থা অপেক্ষমান। অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার প্রবল আশঙ্কায় দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে সরকারের রক্তপিপাসু ভয়ঙ্কর ভ্যাম্পায়ারের স্বরুপে আবির্ভুত হওয়া এবং দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে অবৈধভাবে নিজের জনগণকে নিধনযজ্ঞে মেতে উঠার মাধ্যমেই তাদের পতনের উপসর্গ শুরু হয়ে গেছে। দেশের মাটি থেকে কয়েকদিনের ব্যবধানে হারিয়ে যাওয়া প্রায় দুইশতাধিক তাজা প্রাণ সেটারই ইঙ্গিত বহন করে বৈকি।

তাই সময় থাকতে আওয়ামীলীগকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা মতিঝিলের লাখ লাখ তৌহিদি জনতার পক্ষ নিবে না পুলিশ ও মিডিয়া বেষ্টিত জনবিচ্ছিন্ন ঐসব গুটিকয়েক মুখোশধারী চুশীলদের পক্ষ নিবে। আজকের মতিঝিলের লাখো জনতার প্রকম্পিত স্লোগানও যদি নেতা সর্বস্ব উগ্র বাম, স্বঘোষিত নাস্তিক ব্লগার ও বছরের পর বছর জুড়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরী করে বেড়ানো ঘাদানিক প্রভৃতিদের সম্মিলিত আবেশে আড়ষ্ট আওয়ামীলীগের অসার অনুভূতিকে জাগ্রত করে প্রকৃত গণজাগরণকে উপলব্ধি করার চেতনা তৈরীতে ব্যর্থ হয় তবে বর্তমানের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ইতিহাসের পূনরাবৃত্তির পথে মোড় নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। যা কিনা আমাদের মতো শান্তিপ্রিয় জনগণের কাছে মোটেই কাম্য নয়।

বিষয়: বিবিধ

১২৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File