কিছু মেয়ের চাকচিক্যময় জীবনঃ নেপথ্যের ঘটনা

লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ২৯ নভেম্বর, ২০১৫, ১১:১১:৩৮ সকাল

বিভিন্ন ভার্সিটি সহ দেশের শীর্ষ স্থানীয় কিছু বিদ্যাপীঠে দেখা যায় কিছু মেয়ের মাত্রাতিরিক্ত বিলাশ বহুল জীবন। (আমার বিবেচনায়) এতটা অশ্লীল পোষাকে তারা সজ্জিত হয় যে সেদিকে তাকানোও অনেকের পক্ষে সম্ভবপর হয়না। ‘আমার বিবেচনায়’ কথাটা এজন্য বললাম- কারন, অশ্লীলতার কোন সংগা নাই। ছোট টি-শার্ট, টাইট জিন্স, বিভিন্ন রকমের উন্নত প্রসাধনী সহ চুলের বিভিন্ন কাটিং দিয়ে গায়ে কড়া ফ্লেভারের বডি স্প্রে তারা ব্যবহার করে। উন্নত ও ব্যয়বহুল রেস্টুরেন্টে তাদের যাতায়াত নিয়মিত। চলাফেরা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা এত বেশি খরচ করে যে তা অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষন করে। বাধ্য হয়ে এ বিষয়টি নিয়ে আমি গভীরভাবে চিন্তা করি।

-তাদের ফ্যামিলি কি এভাবে বিলাশ বহুল উশৃংখল জীবনের জন্য তাদের ছেড়ে দিয়েছে??

- এতো টাকা তারা জোগাড় করে কিভাবে??

- এমন ছেলে খুব কম-ই দেখা যায়। তাহলে কি আমার বাপের মত মধ্যবিত্তদের ঘরেই পুত্র সন্তানের জন্ম হয় আর উচ্চ বিত্তদের ঘরে শুধু মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়??

- এভাবে চলাফেরা যেকোন ভদ্র রূচীর মানুষের কাছেই বেমানান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখন পর্যন্ত এভাবে চলাফেরা সামাজিকভাবে নিন্দনীয়। কিভাবে তারা সমাজকে ট্যাকেল দেয়??

উল্লিখিত বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার পর আমার সামনে এর দুইটি জবাব আসে।

-কিছু বাবা মা’ও এমন। তারা অবৈধ মালেও মালায়িত। তাই তারা চায় তাদের সন্তানও এমন হোক। তবে সম্ভবত এ সংখ্যাটা কম।

আর দ্বিতীয় বিষয়টি-

সরাসরি কোন মন্তব্য না করে একটি ঘটনা বলছি।

মেয়েটি দেশের খ্যাতনামা একটি প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমার ব্যক্তিগত নাম্বারের বাহিরে অন্য একটি নাম্বার থেকে তাকে ফোন দিলাম।

-হ্যালো (খুব সুন্দর ও আবেদয়ময়ী কন্ঠে)

- আমি ওমুক (এমটা নাম বললাম)। আগামী ৪ তারিখ অস্ট্রিয়া থেকে আমাদের একজন বিজনেস পার্টনার আসবেন। তাকে কি সময় দিতে পারবেন??

- আপনার পরিচয়??

-বানিয়ে একটা পরিচয় বললাম।

- আপনি বিশ মিনিট পর ফোন দেন।

বুঝলাম সে হয়তো রিক্সার মধ্যে ছিলো। কিছুক্ষন পর আবার ফোন দিলাম।

-জ্বি, কোথায় সময় দিতে হবে?

-হোটেল ------ এ (নামী দামী একটা ভি এই পি পাঁচ তারকা হোটেলের নাম বললাম)

- আমি আসলে ফ্ল্যাটেই সময় বেশি দেই। সারাদিন ফ্ল্যাটেই থাকি। তাই ঐ জায়গাটা সম্পূর্ন নিউ এনভার্নমেন্ট।

ও ইংলিশে খুব ভালো ছিলো। তাই আমি বললাম, এটা আমাদের একটা বিজনেস স্ট্রাজি। আমাদের পার্টনারকে যদি আপনি সেটিস্ফাই করতে পারেন তবে তা আমাদের জন্য ভালো হবে। তাই তাকে সেটিস্ফাই করতে পারলে আপনাকেও আপনার চাহিদা অনুযায়ী সেটিস্ফাই করতে আমাদের প্রবলেম নেই। আমাদের এমন একজন দরকার যে ইংলিশে টুকিটাকি কথা বলতে পারে। এভাবে তার সাথে কথা বলার পর দরকষাকষির মাধ্যমে তাকে এক রাতের জন্য ঠিক করলাম ১৫০০০ টাকার বিনিময়ে। ও আমাকে একটু পরে কনফার্ম করবে বলে ফোন রাখলো। কিছুক্ষন পর আমাকে মেসেজ দিলো-

Hellow, I am agree with your deal. But you have to give me the payment in advance. And must have to pick me up from ----------- (তার বাসার ঠিকানা) and drop at the morning. If it is okay with you, then we may proceed. Let me know about your decision please.

উল্লেখ্য এ মেয়েটিকে দেখলে এবং তার সংগে কথা বললে কেউ হয়তো এটা কল্পনাও করতে পারবেন না। এতোটা কিউট ও অবেদনময়ী মেয়ে--------!

যাই হোক, আমি ভাবলাম তার কাছে একটা দাওয়াহ পৌঁছে দিয়ে আমি আমার কাজ শেষ করবো। তাই আমি তার মোবাইলে মেসেজ দিলাম-

After talking with you, I thought you a gentle girl. I think this way is not for you. I request you to return in nomar life. Allah is very kind. So, if you return to the way of Allah with tawbah, then Allah must help you.

ও আমার এ দাওয়াহটা একসেপ্ট করলো না। তবে আমাকে চিনতে পেরেছে কিনা তা জানিনা। পরে জানলাম, সে তার ফ্যামিলিতেও বড় ধরনের খরচ করে। তাই হয়তো ফ্যামিলিও তাকে মাথায় তুলে রাখে, তার কথার মূল্য দেয় এবং তাকে খুব স্নেহও করে। কিন্তু কিভাবে সে টাকা কামায়, তা তার ফ্যামিলি জানে কিনা?- তা আমি বলতে পারছিনা।

আরো দু একটা স্যাম্পল নিয়ে গবেষনা করার ইচ্ছা থাকলেও ঈমানী দূর্বলাতার কারনে আর সাহস করলাম না।

কেউ কেউ হয়তোবা ফ্যামিলিকে বলে- পড়াশুনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করে। তাই বাসার সবাই তার প্রতি খুশি থাকে। কিন্তু এ পার্ট টাইম জবটা কি??

আমার এক ফ্রেন্ড মাস্টার্সের পরেও দীর্ঘদিন ছিলো বেকার। এরপর আলহামদুলিল্লাহ তার একটা চাকুরী জুটলো। সে বললো- যখন বেকার ছিলো, তখন ফ্যামিলির সবাই এমনকি বাবা-মা’ও ছিলো তার প্রতি বিরাগভাজন, আর চাকুরী পাবার সাথে সাথে এখন সে সকলের মাথার মণি। অর্থাৎ ফ্যামিলিতে ফিনান্সিয়ালি অবদান রাখতে পারলে পরিবারের সবাই তার মর্যাদা দেয়। তাই সে কি করে না করে তার ব্যাপারে অনেক পরিবারেই আর কোন খবর রাখা হয়না।

যাই হোক, এসব নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা না। আমার মাথা ব্যথা হলো- আমার দ্বিনী ভাইদের নিয়ে। যারা আকৃষ্ট হয়ে পড়ে বাহ্যিক চাকচিক্যে। যা তাদের পরবর্তী জীবনকে বিষিয়ে তোলে। এবং এভাবে তাদের সন্তানদেরও পারেনা পূর্ব পরিকল্পনামত গড়ে তুলতে।

আশা করি, যা বুঝাবার বুঝাতে পেরেছি।

মহান আল্লাহ আমাকে এবং আমার সকল দ্বিনী ভাইবোনকে হেফাজত করুন- আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৭০৫ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

351958
২৯ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৪
রফিক ফয়েজী লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৯ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৪১
292226
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ, ভাই
351975
২৯ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৩৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : বছর দশেক আগে গুলশান ১ নাম্বার এ এক সহপাঠিনির অফিসে যাচ্ছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল তার বিয়ের দাওয়াত খেতে পারিনি তাই স্বামি সহ সে অামাকে খাওয়াবে। নাভানা টাওয়ার এর ঠিক নিচে দেখা হলো আরেক সহপাঠিনির সাথে যে এইচএসসিতে বোর্ড মেধা তালিকায় ছিল। প্রায় ৩ বছর পর তার সাথে দেখা। একটু অবাক হয়েছিলাম তার উগ্র মেকআপ দেখে যেখানে সে খুবই ভদ্র ছিল আগে। একসময় খুব বন্ধুত্ব থাকলেও সে আমার সাথে সামান্য কুশল বিনিময় করেই চলে যেতে চাইল। আমি যেখানে যাচ্ছিলাম সেখানে যাওয়ার কথা বললে সে জানাল তার সময় নাই। এমনকি সে আমাকে কন্টাক নম্বর টাও না দিয়ে রাস্তা পার হয়ে গেল। আমি কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেলাম দাওয়াত দেওয়া সহপাঠিনিটির অফিসে। স্বাভাবিক ভাবেই আমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কুশল বিনিময় এর পর এই মাত্র ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা বলতেই সে একটু বিব্রত হলো। ইতঃমধ্যে তার স্বামি এসে যাওয়া আর কথা হয়নি এই বিষয়ে। রাতের বেলা সেই সহপাঠিনি আমাকে ফোন দেয়। এরপর সে যা জানায় তা হলো সেই মেয়েটি এখন ঢাকার নামকরা সোসাইটি গার্ল। ইংরেজি খুব ভাল জানত মেয়েটি এবং সে সময় আইএলটিএস এ ৬ স্কোর করেছিল। ঢাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বোর্ড স্ট্যান্ড হিসেবে বিনামুল্যে পড়ার সুযোগ পেয়েছিল। সেখান থেকে এখন তার এই অবস্থা।
২৯ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৪২
292227
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : ভয়ংকর অপ্রিয় সত্য
351990
২৯ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৩
আবু জান্নাত লিখেছেন : পত্রপত্রিকার খবর থেকে জাতি জানতে পেরেছে, সেই পার্ট টাইম জবটি কি? নীতি নৈতিকতার অভাব হলে যা হয় আরকি। এসব নোংরামী করে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে তারা নাকি নিজের পায়ে দাড়ায়, তারা নাকি দেশের মান রক্ষা করে।

সুন্দর বিশ্লেষণ মূলক পোষ্টির জন্য শুকরিয়া।
২৯ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৪২
292228
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই। সে উচ্চ শিক্ষা আসলে কুশিক্ষা
352007
২৯ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৫৫
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

মহান আল্লাহ আমাকে এবং আমার সকল দ্বিনী ভাইবোনকে হেফাজত করুন- আমিন।


আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
১২ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৪
293626
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ Happy
352039
২৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:০৯
সাইফুল ঈদগাহ কক্স লিখেছেন : দেহ প্রদর্শন দেহ বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন।
১২ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৪
293627
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : হুম
352614
০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০১:০৮
মুসা বিন মোস্তফা লিখেছেন : মহান আল্লাহ আমাকে এবং আমার সকল দ্বিনী ভাইবোনকে হেফাজত করুন- আমিন
১২ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৪
293628
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আমিন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File