পীরের হাতে বাইয়াত

লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ২৩ নভেম্বর, ২০১৫, ১১:১৪:৩০ সকাল

বাংলাদেশ- ভারত-পাকিস্থানে যারা কবর-মাজার পূজা করে তাদের বাহ্যিক রূপ প্রচন্ড চাকচিক্যময়। তারা তাদের নাম দিয়েছে আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত। বাহ্যিক চাকচিক্য দেখে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ মানুষরা তাদের খানকায় আশ্রয় নেয় পরকালীন মুক্তির আশায়। এভাবে তারা পরিচিত হয় আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত- নামটির সাথে। আমার জানামতে সাহাবাদের আমলে এ নামটি ব্যবহৃত হতো যারা কুরআন-সুন্নাহ’র অনুসারী তাদের জন্য। কিন্তু বর্তমানে বহু জায়গায় এ নামটি ব্যবহৃত হচ্ছে কবর পূজারীদের দল বুঝাতে। কবর পূজারীদের মতে যারা এ দলে আছে তারা সূন্নী, আর বাকিরা ওয়াহাবী। বাংলাদেশ- ভারত-পাকিস্থানে তারা এ বিষয়টির প্রচার এমনভাবে করেছে যে অনেক সরলমনা মুসলিমের মনেও এ বিষয়টি পেরেকের মত গেঁথে গিয়েছে। এ পবিত্র নামটি তাই হয়ে পড়েছে বিতর্কিত। সম্ভবত এজন্য বিভিন্ন হক্ব পন্থি আলেম নিজেদের সাথে আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত নামটি ব্যবহার না করে এর সমার্থক অন্য শব্দ ব্যবহার করছেন। কবর পূজারীরা মানুষকে বোকা বানাচ্ছে যেসব জিনিসের মাধ্যমে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাইয়াত। এটাই তাদের ব্যবসার মূল পুঁজি। এছাড়াও আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত, সুন্নী প্রভৃতি শব্দও তাদের ব্যবসার সাইড পুঁজি। সাথে বাহ্যিক চাকচিক্যতো আছেই। এসব দেখে সাধারণত সহজ সরল ও ধর্মপ্রান কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ মানুষরা তাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। আর ওখানে গিয়ে তারা শুনে- পীরের বাইয়াত নেয়া ফরজ। বাইয়াত বিহীন মৃত্যু জাহেলিয়াতের মৃত্যু। এ বাইয়াতকে তারা তুলনা করে হুদায়বিয়ার বাইয়াতে রিদওয়ানের সাথে। বাইয়াতে রিদওয়ান সম্পর্কিত কুরআন-হাদীসের বাণীগুলোকে তারা এ সময় তাদের ভক্তদের সামনে উপস্থাপন করে। আর অজ্ঞ ভক্তরা তখন পীরের মুরীদ হওয়াকে নিজের জন্য বাধ্যতামূলক মনে করে। চশমার উপর রঙ্গিন কাঁচ থাকলে যেমন সব কিছুকেই রংগিন মনে হয়, ঠিক তেমনিভাবে অজ্ঞ মানুষগুলোর চোখের সামনেও তখন এক রকম কাঁচের সৃষ্টি হয়, তাই তাদের পক্ষে আসল জিনিস দেখার ক্ষমতা আর তখন থাকেনা। ফলশ্রূতিতে বাইয়াতে রিদওয়ানের সাথে যে পীর মুরীদীর কোন সম্পর্ক নেই, বরং এটা যে ছিলো যুদ্ধের বাইয়াত- একথা তারা আর বুঝতে পারেনা।

এর পরের ঘটনাতো আরো ভয়াবহ। তখন মনে এ বিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে যায়- বিচারের মাঠে পীর সাহেব হেল্প করবেন। আমল কম হলেও পীর সাহেবের সুপারিশে তিনি জান্নাতে চলে যাবেন। (নাউযুবিল্লাহ)

শেষ কথা হচ্ছে- পীর ব্যবসার এ বড় পুঁজি ভেঙ্গে দেয়া প্রতিটি বিবেকবান মানুষের ঈমানী দায়িত্ব। এ পুঁজিটি নষ্ট করে দিতে পারলে হাজার হাজার মানুষ বিভ্রান্তির হাত থেকে রেহাই পাবে ইনশাআল্লাহ। সেজন্য, তথা কথিত পীর-মুরীদী বাইয়াতের বিরূদ্ধে জনসাধারনতকে সচেতন করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

বিষয়: বিবিধ

১৫৭৮ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

350981
২৩ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩১
মেঘবালক লিখেছেন : মনে এ বিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে যায়- বিচারের মাঠে পীর সাহেব হেল্প করবেন। আমল কম হলেও পীর সাহেবের সুপারিশে তিনি জান্নাতে চলে যাবেন। (নাউযুবিল্লাহ)

কেয়ামতের দিন কত কত নবী রাসুলগণ আল্লাহর সামনে হাজির হওয়ার সাহস হারাবেন আরতো সামান্য পীর। সচেতনতামূলক পোষ্ট। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
291366
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আপনাকেও আন্তরিক মোবারকবাদ Happy
350997
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৫১
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:০৬
291373
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ Happy
351022
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:১১
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : এগুল কিছু্ না, আমার পীরসাহেব জাহাজ নিয়ে সবাইকে কিয়ামতের মাঠে পার করে দিবেন বলে জিকির করেন। বিস্তারিত লিংকে দেখুন Click this link এই আহলে সুন্নাত নামের ব্রেলভি আর আমার পীর আহলে সুন্নাত নামে দেওবান্দি। ভাই ভাই কোন সমস্যা নেই। ওরা ধাক্কানী আমরা হক্কানী।
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২৫
291381
মুসলমান লিখেছেন : বাংলাদেশের হক্কানা পীরসাপদের নিয়ে এসব কথা বলতে আমনের ভয় লাগে না?
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২৫
291382
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : :Thinking :Thinking
২৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১০:১৯
291431
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : না লাগে না।
351027
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২৫
মুসলমান লিখেছেন : পৃথিবীর সকল পীর হক্কানা।
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৩০
291384
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : MOney Eyes MOney Eyes
351115
২৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১২:১১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পির ব্যবসা ধরতে চান??
ব্লগার নজরুল ইসলাম টিপু ভাই এর অভিজ্ঞতাগুলি থেকে যেনে নিন!
২৪ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৪১
291510
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : বড্ড লাভের ব্যবসা, ভাই
357616
২৪ জানুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:৪৯
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আমার শ্বশুরমশায় এর কাছে শোনা। চর্মনাই এর মূল পীর এছহাক হুজুর ছিলেন আমার দাদাশ্বশুর এর ক্লাসমেট। এছহাক হুজুর পড়াশোনা খুব বেশি করেন নি। দাদাশ্বশুর দেওবন্দ হতে ফারেগ ছিলেন তবে গোঁড়া ছিলেন না, আমার শ্বশুড়ও কওমী আলেম হলেও অনেক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে বেশ প্রতিবাদমুখর। তো একদিন এছহাক হুজুর আমতলী(বরগুনা)ওয়াজ করতে গেলেন। হুজুরের মুরীদরা শ্রোতাদের কাছে বলছেন, “আপনার হুজুরের হাতে বাইয়াত নিতে আসুন। হাশরের ময়দানে দুই হাত ধরে পীরসাব আপনাদের পুলসিরাত পার করিয়ে দিবেন।” আমার দাদাশ্বশুড় লাঠি হাতে তেড়ে গিয়ে বললেন, “এই ভন্ড, তুই যে পুলসিরাত পার হতে পারবি এ গ্যারান্টি কৈ পাই লি?” পীরের মাহফিল পন্ড হলো এবং দাদাশ্বশুড় বেঁচে থাকতে আর এছহাক হুজুর ঐমুখো হন নি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File