প্রসঙ্গঃ ফেইস বুক বন্ধ
লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ১১:০২:০২ সকাল
সব দিক বিবেচনা করে এক কথায় বলতে গেলে ভালোই হয়েছে। ফেইস বুক ছিলো নেশার মত। অনেক চেষ্টা করেও এ নেশা থেকে রেহাই পাওয়া ছিলো দুষ্কর। এক সময় বাংলা ব্লগে অনেক প্রতিভাবান ব্লগারদের পদচারনা ছিলো। কিন্তু অধিকতর জনপ্রিয় হওয়ায় ব্লগ ছেড়ে ওনারা যোগ দেন ফেইস বুকে। ব্লগগুলো হয়ে পড়ে অবহেলিত। ফেইস বুকের ইফেক্ট সাময়িক, কিন্তু ব্লগের ইফেক্ট ফেইস বুকের চেয়ে অনেক বেশি। একটি তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট আপনি ব্লগে দিলে তা গুগল সার্চে খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু ফেইস বুকের আইডি থেকে পোস্ট করলে তা গুগল সার্চে খুঁজে পাওয়া যায়না। ফেইস বুকের চরম বিরক্তিকর একটি জিনিস সেলফী ও মাত্রাতিরিক্ত ছবি আপলোড। পরিচিতির জন্য মাঝে মধ্যে দু একটি ছবি আপলোড করা যেতে পারে, কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত আত্মপ্রচারনামূলক ছবি সত্যিই বিরক্তিকর। ফেইস বুকে ছাগলামী স্ট্যাটাস দেয়া যায়। যেমন- ফিমেল কিছু আইডি থেকে মাঝে মধ্যে এমন কিছু পোস্টও দেখা যেতো- ভালো লাগছে না। আজ তোরা আমার সাথে যা করলি---!! ইত্যাদি টাইপের। এগুলো প্রচন্ড বিরক্তিকর। কেউ কেউ আবার অশ্লীলতা বন্ধ করার চেষ্টায় ফেইস বুকে অশ্লীলতার প্রসার ঘটাতো। টাইমের সময় নষ্টের এক বড় কারন ছিলো ফেইস বুক। গাড়িতে উঠে বসার পরও মোবাইলে ফেইস বুকে না ঢুকলে কারো কারো মন ভরতো না। রাতে শুয়ে শুয়ে ফেইস বুক চালাতে গিয়ে বউয়ের সাথে গ্যাঞ্জামের কথাও কেউ কেউ আকারে ইংগিতে আবার ফেবু পোস্টেই উল্লেখ করেছেন। বউয়ের ঝাড়ি খেয়েও ফেইস বুক ছাড়েন নি। কিছুদিন পর দেখা গেলো বউও ফেইস বুক নেশায় মত্ত। এরপর স্বামী আবার দুঃখে কাতর হয়ে স্ট্যাটাস দিতেন ফেইস বুকেই।
তবে এ ফেইস বুক জাতীয় অঙ্গনে রেখেছে অসামান্য অবদান। কিছু লোক যেমন এটাকে নিয়েছে আত্মপ্রচারনার কেন্দ্র হিসেবে, তেমনি কিছু লোক এটাকে বানিয়েছে দাওয়াহ’র কাজের জন্য এক উপযোগী মাধ্যম। কিছু ভাইয়ের সাহসী ভূমিকার কারণে ফেইস বুক হয়ে পড়েছে জালেমের ভয়ের কারন।
- এই ফেইস বুকের কল্যানেই বিশ্ব জানলো ফেলানী হত্যার নির্মমতা
- এই ফেইস বুকের কল্যানেই ঘুষ দিয়ে পুলিশের হাত থেকে বাঁচলেও জনতার হাত থেকে বাঁচতে পারেনি রাজনের খুনিরা
- এই ফেইস বুকের কল্যানেই অবৈধ দায়িত্বশীলদের দিলের জ্বালা বেড়ে গেলো বহুগুনে
- এই ফেইস বুকের কল্যানেই মায়ের পেটে গুলি খাওয়া শিশু পেলো সুচিকিৎসা
-এই ফেইস বুকের কল্যানেই হলুদ মিডিয়ার ভন্ডামী হয়ে গিয়েছিলো ফাঁস
- এই ফেইস বুকের কল্যানেই বেরিয়ে গেছে থলের কালো বিড়াল
- এই ফেইস বুকের কল্যানেই আমার মত সাধারন লোকের পরিচয় হয়েছে অনেক জ্ঞানী লোকদের সাথে
- এই ফেইস বুকের কল্যানে নলেজের প্রসার ঘটেছে অনেকের
- ফেইস বুকের কল্যানেই বিদয়াত ছেড়ে সহীহ ইসলামের পথে ফিরে এসেছেন আমাদের অনেক ভাই
- ফেইস বুকের বিভিন্ন গ্রুফ ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষামূলক কাজে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
-ফেইস বুক ছিলো অনেক দায়িদের দাওয়াতী কাজের অন্যতম মাধ্যম
- ফেইস বুকের কল্যানে মানুষের রূচীবোধের প্রমান পাওয়া সম্ভব হয়েছিলো
- ফেইস বুকের কল্যানে হাজার হাজার মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে
শেষ কথাঃ ফেইস বুকটা ছিলো ছুরির মত। আপনি চাইলে ফলও কাটতে পারতেন আবার মানুষও মারতে পারতেন। তবে আমার বিবেচনায় যেটাই করার ট্রাই করতেন, আপনাকে কিছু সময় অযথা নষ্ট করতেই হতো আজে বাজে বিভিন্ন পোস্টের কারণে। আপনি না চাইলেও কিছু নোংরা সাজেস্টেড পেইজ ভেসে আসতো আপনার সামনে। ফেইস বুকের এ অপকারী দিকগুলোর অনেক কিছুই বল্গে নেই। বরং ব্লগ অনেক দিক দিয়ে উপকারী। আম জনতার কাছে ফেইস বুকের মত ব্লগকে জনপ্রিয় করা সম্ভব হলে তা অনেক পজেটিভ ইফেক্ট ফেলতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যথার্থ বলেছেন, সহমত
ধন্যবাদ ভাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন