আবেগ ও বাস্তবতা

লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ০৬ জুলাই, ২০১৫, ০৩:২৯:৪৮ দুপুর

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।আমার কোন ভুল হলে মেহেরবানী করে শুধরিয়ে দেবেন।

ধরূন আপনি অনেক বড় একজন অফিসার। খুব ভালো ও নিতীবান ব্যাক্তি। অজোপাড়াগায়ের কোন এক মূর্খ ও অশিক্ষিত ব্যক্তি বললো, আপনি খারাপ লোক। উল্লেখ্য, যে এ কথাটা বললো, সে আপনার সম্পর্কে খুব একটা জানেই না। তাছাড়াও সে মূর্খ, তার কোন শিক্ষা দীক্ষাও নেই। এমতাবস্থায় তার মত লোকের এ কথা্র প্রতিবাদ করা আপনার ও আপনার সমর্থকদের জন্য চরম আহম্মকি কাজ নয়কি??

মূল কথায় ৮০

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সম্মান পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান। আল্লাহর পরেই ওনার সম্মান। সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার পরে সবচেয়ে বেশি সম্মানের অধিকারি তিনি। কোন চ্যাংড়া প্যাংড়ার কথায় কি ওনার সম্মান কমে যায়??? অথচ এ চ্যাংড়া প্যাংড়ার কথাগুলোকে আমরা এতটাই গূরুত্ব দিচ্ছি যে আমাদের মাধ্যমেই তারা হয়ে যাচ্ছে সেলেব্রেটি।

কিছুদিন আগে আসিফ মহিউদ্দিনের কাবা ঘরের ছবিকে রংধনুর রঙ্গে সাজিয়ে ফেইস বুকে দেয়া একটা পোস্টের পর দেখলাম আমাদের অনেক ভাই স্ক্রীন শর্ট দিয়ে নিজেদের ওয়াল থেকে তার প্রচারের ব্যবস্থা করছেন। এ কাজটি আসিফ মহিউদ্দিনের উদ্দেশ্যকেই কি জয়ী করেনি?? তারতো উদ্দেশ্য ছিলো এটা প্রচার করা, আর এর প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন আপনি!!!

বুঝলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিষোদাগার করলে তার প্রতিবাদ করতে হবে। OK. কিন্তু এ প্রতিবাদের জন্য যারা মাঠে নামছে তাদের অনেকেই জানেনা কেন তারা আন্দোলন করছে। আপনাদের হয়তো মনে আছে- ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালায়।

প্রতিবাদের জন্যতো নিজেদের নূন্যতম যোগ্যতা থাকা দরকার। যে যোগ্যতা ছিলোনা বলে কয়েক লাখ লোকের সমাবেশও পন্ড হয়ে গেছে মাত্র কয়েক মিনিটের অপারেশনে।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যতগুলো যুদ্ধ করেছেন কোনটিতেকি খালি হাতে মাঠে নেমেছেন?? তারা আপনার সামনে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে আসে, আর আপনি খালি হাতে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা যদি এতটাই ভালো হতো, তাহলে কি আপনাকে রাজপথে নামতে হতো???

আপনারা দাবী জানাচ্ছেন, ধর্মবিদ্বেষীদের শাস্তির জন্য। কিন্তু কার কাছে দাবী জানাচ্ছেন??- যে বা যারা নিজেরাই ধর্ম বিদ্বেষী তাদের কাছে ধর্মবিদ্বেষীদের শাস্তির দাবী জানানো, আল্টিমেটাম দেয়া বোকামী নয়কি???

কুশপুত্তলিকা দাহ করার কাজও আবেগের জোয়ারে ভেসে করা যায়। কিন্তু এটা কি ইসলাম সম্মত কাজ??

যখনই ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ কোন বাজে কথা বলে, তখনই আমাদের ভাইয়েরা তাকে ব্যাপকভাবে পরিচিত করিয়ে দেন। আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে আগে কয়জনে চিন্তো?? কিন্তু এখন গোটা দেশবাসী তাকে চেনে। সে একটা কথা বলেছে। আমরা সে কথাটা মানলাম না। সেতো আর আমাদেরকে মানতে বাধ্য করেনি। আর তার এ ক্ষমতাও নাই। আমাদের উচিত নিজেদের লেখালেখি, বক্তৃতার মাধ্যমে তার এ বক্তব্যের অসারতা প্রমান করে দেয়া। গত কয়েক ঘন্টায় ফেইস বুকে প্রচুর পোস্ট দেখেছে তার এ বক্তৃতার বিষয়ে। কিন্তু একটি পোস্টেও তার বক্তব্যের অসারতা প্রমান করা হয়নি। ফলশ্রুতিতে আমরা অনেকের কাছেই পৌঁছে দিচ্ছি এ বক্তব্য, বক্তব্যের অসারতা প্রমান করা ব্যতিত-ই।– একাজটি আমাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর হবে, তা সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করার অনুরোধ জানাই।

এ ধরনের ফালতু লোকদের বিরুদ্ধে অযথা হৈ হুল্লোড় করে আমরা আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করছি।

তারা তো এটাই চায়-

-তারা কোন একটা কথা বলে মনের জ্বাল মেটাবে

-আমরা তাদের দেশব্যপি পরিচয় করিয়ে দেবো

-এতে করে ভি এই পি’র মত তাকে নিরাপত্তা দেয়া হবে।

-তাদের ইডিওলজি আমাদের মাধ্যমেই প্রচার পাবে।

-তাদের নিয়ে আমরা করবো মাতামাতি, আর এ সুযোগে তারা করবে নিরিবিলি জ্ঞান অর্জন।

শেষ কথাঃ আজ জ্ঞান বিজ্ঞানে আমরা বামদের চাইতে পিছিয়ে।

অর্থ সম্পদে আমরা বামদের চাইতে পিছিয়ে।

প্রভাব প্রতিপত্তিতে আমরা বামদের চাইতে পিছিয়ে।

সামাজিক স্ট্যাটাসেও আমরা বামদের চাইতে পিছিয়ে।

শুধুমাত্র গলার জোরে বামদের চাইতে এগিয়ে। আর এ অহেতুক গলাবাজিই উপরোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারন বলে আমি মনে করি। শুধু তাই নয়, এমন অহেতুক গলাবাজি অনেক ভাইকে জেলেও ঢুকিয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১৬০৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

328865
০৬ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৫:০৫
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, জাজাকাল্লাহুল খাইরান, সহমত পোষন করছি
328868
০৬ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৪
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : শুধুমাত্র গলার জোরে বামদের চাইতে এগিয়ে। আর এ অহেতুক গলাবাজিই উপরোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারন বলে আমি মনে করি। শুধু তাই নয়, এমন অহেতুক গলাবাজি অনেক ভাইকে জেলেও ঢুকিয়েছে।
328925
০৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:৩২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সমস্যাটা হচ্ছে একেবারে প্রতিবাদ না করলে এদের কথাই সত্য বলে অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে যাবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File