যুবক ও যৌবনঃ পর্ব-১

লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০১:১৭:৫৪ দুপুর

প্রিয় যুবক ভাইয়েরা, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ!

কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের জবাব দেয়া ছাড়া আমরা এক চুলও নড়তে পারবো না। আমাদের কি জানা আছে সে পাঁচটি প্রশ্ন কি??? জানা না থাকলে এখন জেনে নেই-

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ)হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ)বলেছেনঃ ''(কিয়ামতের দিন) আদম সন্তানের পা (স্ব স্থান থেকে) একটু নড়াতে পারবে না যতক্ষণ না পাঁচটি ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাব করা হবে। প্রশ্নগুলো হলোঃ

১. তার জীবনকাল (বয়স) কি কাজে শেষ (ব্যয়) করেছে।

২. তার যৌবনকাল কি কাজে নিয়োজিত রেখেছে।

৩. তার ধন-সম্পদ কোন উৎস থেকে উপার্জন করেছে।

৪. কোন কাজে তা ব্যয় করেছে এবং

৫. সে অর্জিত জ্ঞানানুযায়ী কতটুকু আমল করেছে।'' (সুনানে তিরমিযী, হাদীস-২৪২০; সুনানে দারেমী, হাদীস-৫৩৯)

প্রথম প্রশ্নের মধ্যে যৌবনও অন্তর্ভূক্ত। তারপরও বিশেষভাবে যৌবনের ব্যাপারে আরেকটি প্রশ্ন করা হবে। এ থেকেই জীবনের এ সময়টির গূরুত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠে। জীবনের এ সময়টি এতই মূল্যবান যে কিয়ামতের দিন যখন মহান আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, তখন সাত শ্রেনীর ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় দিবেন।

হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ (কিয়ামত দিবসে) তাঁর (আরশের) ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোন ছায়া থাকবে না।

(১) ন্যায়পরায়ণ শাসক,

(২) ঐ যুবক যে আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে বড় হয়েছে,

(৩) ঐ ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে লেগে আছে (জামায়াতের প্রতি যে উম্মুখ থাকে),

(৪) ঐ দু’ ব্যক্তি যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অন্যকে ভালবেসেছে এবং তাতে অবিচল রয়েছে, কিংবা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ( তাও আল্লাহর উদ্দেশ্যে),

(৫) ঐ ব্যক্তি যাকে কোন অভিজাত শ্রেনীর সুন্দরী মহিলা (ব্যাভিচারের দিকে) আহবান করে আর (তদুত্তরে) সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি,

(৬) ঐ ব্যক্তি যে কিছু দান করল এবং তা এতটা গোপনভাবে করল যে, তার বাম হাত জানতে পারল না তার ডান হাত কি দান করেছে,

(৭) ঐ ব্যক্তি যে একাকী বসে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার চোখ দু’টো (আল্লাহর ভয়ে) অশ্রুপাত করে।

(বুখারী, ২য় খন্ড, যাকাত অধ্যায়, হাদীস নং- ৫০৪) ।

আমরা দেখতে পাচ্ছি এ সাত শ্রেনীর মধ্যে ২ নাম্বারটি পুরোই যৌবনের সাথে সম্পর্কিত। আর ৫ম টিও অনেকাংশে যৌবনের সাথে সম্পর্কিত। কারন এপ্রয়োজনটি ব্যাপক আকারে দেখা দেয় যৌবনের আগমন ঘটলেই। আর যৌবন শেষ হবার সাথে সাথে এ প্রয়োজনও আস্তে আস্তে ফুরিয়ে যায়।

জীবনের এ মহামূল্যবান সময় শেষ হয়ে গেলে আর ফিরে আসবে না। আমরা এ কথা জানি। কিন্তু তারপরও বারংবার লাইনচ্যুত হই। করে ফেলি অন্যায়। যার মূল কারন আমাদের পরিবেশ। এ পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ।

আবার দিন যতই যাবে, পরিবেশ ততই খারাপ হবে- ভবিষ্যতবানী করে গেছেন আমাদের নেতা (সাঃ)-

“যত বছর বা যত দিন অতিবাহিত হবে তার তুলনায় আগামী বছর ও দিন হবে আরো মন্দতর” (আহমদ, বুখারী, ইবনে মাজাহ, সহীহুল জামে ৭৫৭৬ নং)

পশ্চিম দিক থেকে আগত জরায়ু স্বাধীনতার ঝড়, অবাধ যৌনাচারের ঝড়, ধর্মনিরপেক্ষতা তথা ধর্মহীনতার ঝড় আমাদের পরিবেশকে আরো খারাপ থেকে খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিবেশে মুসলিম হিসেবে একজন যুবকের বেঁচে থাকা এক মহা চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এ পরিবেশে নিজেকে মুসলিম হিসেবে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হবে অতি সতর্কতার সাথে। কিন্তু পদক্ষেপ কোথায় ফেলবো??? কারন পা ধুয়ে যেখানটায় ফেলবো সেখানটাও কাদাময় !!!! পা ধুয়ে যদি কাদামাটিতেই আবার পা ফেলতে হয়, তবে পা ধুয়ে লাভ কি? টকের ভয়ে দেশ ছাড়লাম, আর এখন দেখি তেঁতুল তলায় বাসা, বিষয়টা অনেকাংশে এমন।

প্রিয় যুবক ভাইয়েরা, এ চরম অবস্থার মধ্যেও আমাদেরকে পথ খুঁজে বের করতে হবে। একেবারে পিচ্ছিল কর্দমাক্ত পথের মধ্য দিয়ে ধবধবে সাদা পোষাক ও চপ্পল পরেই আমাদের এমনভাবে হাঁটতে হবে যাতে কাপড়ে কোন কাদা না লাগে। যত কষ্টই হোক আমাদের এভাবেই চলতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন হিকমাহ। প্রয়োজন ইসলামের যথাযথ জ্ঞান। প্রয়োজন ইসলামিক স্কলারদের সান্নিধ্য। প্রয়োজন ফরজ ইবাদাতের পাশাপাশি পর্যপ্ত নফল ইবাদাত।

তবে যত কিছুই করি এ কাজ সহজ নয়। হাতের মুঠোয় আগুনের আঙ্গার রাখা যত কঠিন, একাজ ততই কঠিন।

“এমন দিন আগামীতে আসছে যে, ধৈর্যের সাথে দ্বীন বাঁচিয়ে রাখতে ঠিক ততটা কষ্টকর মনে হবে, যতটা কষ্টকর মনে হয় হাতের মুঠোয় আগুনের আঙ্গার রাখা” (তিরমিযী, সহীহুল জামে’ ৮০০২ নং)

তবে এ কঠিন কাজটিও আমাদের সামাল দিতে হবে, কারন আমাদের যে জান্নাতে যেতেই হবে------!

এ কঠিন কাজকে যারা সম্ভব করে তুলতে পারবে তাদের ব্যাপারে মহা পুরষ্কারের ঘোষনা দেয়া হয়েছে- তাদের প্রত্যেকে ৫০ জন শহীদ সাহাবীর সমপরিমান সওয়াব লাভ করবে। (ত্বাবারানী, সহীহুল জামে’ ২২৩৪ নং)

সম্পূর্ন আমার নিজের স্বার্থে, নিজের জন্য, যৌবনকালে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যাবলী সংক্রান্ত ব্যক্তিগত ও বন্ধু-বান্ধবের অভিজ্ঞতা এবং তার সমাধানের বাস্তবসম্মত উপায় সম্পর্কে কিছু লেখার পরিকল্পনা করলাম। হয়তোবা আমার কোন যুবক ভাই এ থেকে উপকার পেলেও পেতে পারে। আবার হয়তোবা এ লেখা পড়ে শ্রদ্ধেয় মুরব্বীদের কারো পরামর্শ আমাদের চিন্তাভাবনাকে আরো স্বচ্ছ করে তুলবে। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন- আমিন।

যৌবনে পদার্পন করার সাথে সাথে যৌন চিন্তা প্রানী জগতের এক প্রকৃতিগত ব্যাপার। তখন মন চায় কিছু ভাবতে, কিছু কল্পনা করতে, আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখতে। সফল কোন ডাক্তার দেখলে, মন তখন যেনো ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখা শুরু করে। আবার কিছুক্ষন পরেই যখন সফল কোন ইঞ্জিনিয়ারের কথা শুনে, মন তখন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। মন তখন কাউকে কাছে পেতে চায়। বিপরীত লিংগের কারো উপর চোখ পড়লে তখন তাকে নিয়ে সে রচনা করে নিজের সুখ স্বপ্ন। মন হারিয়ে যায় আকাশ-কুসুম কল্পনায়। প্রিয়শীর টানা টানা চোখ, কাজল কালো চুল, সুন্দর ভ্রূ, নাকে থাকেনা ফুল, তবে কানে থাকে দুল- সব কিছুকে একসঙ্গে যেনো মনে হয় পদ্মফুল। মন তখন তাকে কাছে পেতে চায়। তার সঙ্গে নিজের সুখ দুঃখ শেয়ার করতে চায়। উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে, খাবার খেতে এমনকি নামাজের মধ্যেও তাকেই শুধু মনে হয়। তার সব কিছুই যেনো ভালো লাগে। স্বপ্নেও তাকে দেখে। মন তখন কোন শৃংখলা মানতে চায়না। মন চায় সকল প্রকার লাগাম অতিক্রম করতে।

কিন্তু বন্ধু, না!

পিপিলিকা আগুন দেখে আকৃষ্ট হয়। কিন্তু সে আগুনের কাছে গেলে তার মৃত্যু অনিবার্জ। ইসলাম তাই যুবকের জন্য এঁকে দিয়েছে সীমাবদ্ধতার দেয়াল। এদেয়াল অতিক্রম করলে সে এমন এক গর্তের মধ্যে পড়বে, যা তার সমগ্র জীবনকেই ধ্বংসে পরিনত করতে পারে। যে এ দেয়ালের ভিতর গিয়ে আশ্রয় নিবে, সে মুক্তি পাবে পশ্চিমা ঝড়ের কবল থেকে। নূহের নৌকার মত আকাশ্চুম্বি তুফানকেও এদেয়াল বাধা দিয়ে তার ভিতর আশ্রয় নেয়া যুবকদের হেফাজত করবে।

কিন্তু বর্তমান পরিবেশ এমন, দেয়ালের ভিতর অবস্থান করা মহা মুশকিলের বিষয়। সময় আসার পূর্বেই যুবকের যৌবন বেশামাল গতিতে এসে উপস্থিত হয়। কারন আগে থেকেই সে বুঝে যায়-প্রেম কি জিনিস! কিভাবে বিপরীত শ্রেনীকে ধরে চুম্বন করে ও চোখ বন্ধ করে তার স্বাধ আস্বাধন করতে হয়! ফলশ্রুতিতে আগুনে পেট্রোল ঢালার মত অবস্থার সম্মুখীন তাকে হতে হয়। বেচারা আর ঐ দেয়ালের ভিতর ঢুকে আশ্রয় নেবে কিভাবে???? দেয়ালের কাছেই সে ঘেঁষতে পারেনা। আর কোন ক্রমে জুম’আর দিন ঐ দেয়ালের ভিতর ঢুকলেও পশ্চিমাদের থেকে আসা এক চুম্বক তাকে টেনে বের করে নিয়ে আসতে চায়। পশ্চিমাদের থেকে আসা এ চুম্বক খুবই শক্তিশালী। এ চুম্বকের বন্ধু মনের কুপ্রবৃত্তি। তাই দেয়ালের ভিতর থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো- মনের সুপ্রবৃত্তিকে, কুপ্রবৃত্তি এবং পশ্চিমা চুম্বকের মিশ্রিত শক্তির চেয়েও শক্তিশালী করা, যা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এজন্য প্রয়োজন কঠিন সাধনা।

কারন এমনিতেই যুবক বয়সে মনের মধ্যে কুপ্রভৃত্তির আগুন জ্বলে। সুপ্রবৃত্তির বিশুদ্ধ ঠাণ্ডা পানি সে আগুনকে নিঃশ্বেষ করে দেয়। বাহিরের পরিবেশ সুপ্রভৃত্তির অনুকূলে হলে ভালো থাকা যুবকের জন্য সহজতর হয়। আর বাহিরে পরিবেশ কুপ্রবৃত্তির অনুকূলে হলে মনের আগুনে পেট্রোল ঢালার মত অবস্থা হয়।

বর্তমান পরিস্থিতি মনের আগুনে পেট্রোল ঢালে। বাড়ির বাহিরে, রাস্তাঘাটে, হাটে বাজারে, বাসে ট্রেনে যুবতীর সৌন্দর্য অনেকাংশে চোখে পড়ে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও দেহের সাথে দেহের স্পর্ষ হয়। মিষ্টি পারফিউমের স্নিন্ধ সৌরভে নেচে উঠে যুবকের মন। টিভিতে যা প্রচারিত হয়, তার ব্যাপারে সবারই জানা। শুধু খবর দেখবো- তাতেও সম্ভব হয়না পর্দা রক্ষা করার। আমাদের দেশে এমন একটি টিভি চ্যনেলও নেই, যা যুবকদের সুপ্রবৃত্তিকে বিকশিত করবে। একটি সাবান কিনতে গেলেও যুবককে ঈমানের পরীক্ষা দিতে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে সুচিন্তায় নিজের মনকে ধরে রাখা একজন যুবকের জন্য মহা মুসিবতের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারবার তাওবা করে কুচিন্তা থেকে ফিরে এলেও তার গতি এতটা প্রবল যে কিছুতেই তাকে নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভবপর হচ্ছেনা।

প্রিয় ভাই ও বন্ধুরা! এমন পরিস্থিতিতে আমাদেরকে হতে হবে পাথরের মত শক্ত। পাথরের উপর যেমন বৃষ্টির পানি বেশিক্ষন থাকতে পারেনা, তেমনি আমাদের মনেও কুচিন্তাকে এক মুহূর্তের বেশি ঠাঁই দেয়া যাবেনা। বৃষ্টির পানি পাথরে পড়ার সাথে সাথে যেমন তা মাটিতে গড়িয়ে পড়ে, তেমনি আমাদের মনেও কুচিন্তা এসে প্রবেশের মাত্রই তাকে ঝেড়ে ফেলতে হবে মন থেকে- কিছুতেই তাকে মনের ভিতর বাসা বাঁধার সুযোগ দেয়া যাবেনা।

চলার পথে কেউ যদি কখনো কামনার সূত্রপাত করেই ফেলে, তবে নির্জনে সেই কামনার সুতো দিয়ে জাল বুনতে যাওয়া কখনো আমাদের উচিৎ হবে না। কারন জাল যতই দীর্ঘ হবে, মনের আগুন ততই তীব্র হবে। এভাবেই সৃষ্টি হয় ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা, ভালোবাসা থেকে প্রেম। এবং তারপর আরো গভীর থেকে গভীরে------!

প্রিয় বন্ধুরা আমার! গ্রহনযোগ্য বয়সের কোন গায়ের মাহাররাম নারী যদি আমাদের জন্য মজাদার খাবারের পসরা সাজিয়ে বসে থাকে, তাহলে সে খাবার আমাদের চক্ষুকে করবে শীতল, জিবকে করবে রসালো। কিন্তু সে খাবার খেতে গেলে আমাদের অবস্থা হবে বড়সীর মাছের মত। বড়সীর এ কাঁটা থেকে অনেক সময় আর রক্ষাই পাওয়া যায়না। আর রক্ষা পাওয়া গেলেও বড়শীর আঘাতের ঘা নিয়েই চরম কষ্টে বাঁচতে হয়।

আমাদের মনের কল্পনা এক উড়ন্ত পাখির মত। তার খাঁচা খুলে দিলে সে তার উড়ার জায়গা পরিষ্কার করবে। আর যদি তাকে আমার আয়ত্তাধীন করে রাখি, তাহলে আমার নির্দেশের বাহিরে সে কিছুই করতে পারবেনা !

অতএব, মনের মধ্যে কোন মন্দ কল্পনা আসলে, প্রথমেই তা দূর করে ফেলতে হবে। যদি দূর করা না হয়, তবে তা চিন্তায় পরিনত হবে। চিন্তায় যদি পরিনত হয়েই যায়, তবে সে চিন্তাকে বেশিক্ষন মনের মাঝে স্থান দেয়া যাবেনা। মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে সে চিন্তা। তা করতে ব্যর্থ হলে, এ চিন্তা কামনায় কনভার্ট হবে। এভাবেই মন্দ কল্পনাকে পরাভূত করতে না পারলে কামনা থেকে তা দৃঢ় সংকল্পে পরিনত হবে। এ অবস্থায় পৌঁছার পরও যদি কোন হতভাগা তা মন থেকে দূর করতে না পারে, তবে সে দৃঢ় সংকল্প আর মনের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। তা বেরিয়ে যায় মন থেকে। সে দৃঢ় সংকল্প তখন কাজে পরিনত হয়। এ কাজকেও যদি প্রতিহত করা না যায়, তবে তা অভ্যাসে পরিনত হয়। আর কোন কিছু একবার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে তা দূর করা কঠিন। কল্পনার চারাগাছ হাত দিয়েই টেনে তুলে ফেলা যায়। কিন্তু তা যখন সুবিশাল বটবৃক্ষে পরিনত হয়, তখন ক্রেন দিয়েও তাকে তোলা যায় না!

ইসলামিক স্কলারগন আমাদের মত তাজা যুবকদের মনে যখনই মন্দ চিন্তা আসে, তখন তা দূর করার জন্য আল্লাহকে স্মরন করতে বলেছেন। মন যদি তাতে শান্ত হতে না চায় তবে সৎ ও চরিত্রবান আল্লাহ ভীরুদের জীবনী স্মরন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাতেও মন ক্ষান্ত না হলে ভাবতে হবে- এভাবেই এ চিন্তা ধীরে ধীরে কাজে পরিনত হবে। আর কাজ থেকে তা অভ্যাসে পরিনত হবে। তখন সমাজ আমাকে খারাপ জানবে। পরিবার ও বংশের দূর্নাম হবে। তাই সমাজে নিকৃষ্ট হওয়া থেকে বাঁচতে হলে আমাকে এখনই এ মন্দ চিন্তা দূর করতে হবে। কিন্তু পার্থিব অপমানের ভয়ও যদি মনে না আসে, তাহলে বুঝতে হবে- সে মন আর মানুষের মন নেই, তা পশুবৃত্তিতে পরিনত হয়েছে।

(ইনশাআল্লাহ- চলবে)

বিষয়: বিবিধ

২২৭০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

290928
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:১০
ভিশু লিখেছেন : খুব ভালো লাগ্লো...Happy Good Luck
জাযাকাল্লাহ খাইর।
০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
234786
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
290934
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:১২
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : অনেক অনেক ভালো লাগলো । খুব important একটা post. অনেক ধন্যবাদ ভাই। Thumbs Up Thumbs Up
০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
234787
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : এ বিষয়ে আরো কিছু লেখার প্লান আছে। দোয়া করবেন।
290939
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:২৩
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : মাশাল্লাহ, অনেক সুন্দর ও শিক্ষণীয় আলোচনা। আল্লাহ আমাদের যৌবনকে তাঁর পথে কবুল করুন।
০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
234788
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আমিন
290951
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:২১
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
234789
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ, ভাই
290965
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৯
আফরা লিখেছেন : জীবনের যৌবনকালই আসল জীবন । যৌবনের আগ পর্যন্ত ও মানুষ থাকে পরনির্ভরশীল যৌবনের শেষে ও মানুষ আবার পরনির্ভরশীল হয়ে পরে ।তাই প্রতিটা মানুষের জীবনে যৌবনকাল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই যৌবনকালকে সঠিকভাবে সঠিক পথে কাজে লাগানোর তৌফিক দান করুন ।যাতে কিয়ামতের ময়দানে সঠিক জবাব দিয়ে আমরা সামনে এয়িয়ে যেতে পারি । আমীন ।

অনেক গুরুত্ব পূর্ণ হাদীস নিয়ে সুন্দর আলোচনা করেছেন । আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাতে এর উত্তম প্রতিদান দান করুন ।আমীন ।
০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
234790
শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন লিখেছেন : আমিন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File