আল্লামা শফি টার্গেট নয়ঃ টার্গেট হেফাজত থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করা
লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ১৪ জুলাই, ২০১৩, ১১:০৯:০৪ রাত
জনধিকৃত ব্লগার ‘থাবা বাবা’ যখন হেরা গুহাকে ইসলামের একজন অতীব গূরুত্বপূর্ন, সম্মানিতা নারীর যৌনাঙ্গের সাথে তুলনা করেছিল, তখন আমাদের তথাকথিত নারীনেতৃদের কোন চুলকানী ছিল না। বরং আত্মস্বীকৃত নাস্তিক হওয়া সত্ত্বেও তাকে ভূষিত করা হয়েছে ‘শহীদ’ উপাধিতে। ইসলামের প্রতি সরাসরি অত্যন্ত নির্লজ্জ্বভাবে কটাক্ষ করেছে যে, তার মৃত্যুর পর ৯০ শতাংশ মুসলিম দেশের মানুষের ট্যক্সের টাকায় কেনা গাড়িতে করে তার বাসায় গিয়ে তার পরিবারকে সান্তনা দিতে যাবার মত লোকেরও অভাব ছিলনা।
আর আজ, আল্লামা শফীর বহু আগের একটি ভিডিওকে বিকৃতভাবে প্রচার করে এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে যারা, তারা কোথায় ছিল, যখন ‘থাবা বাবা’ সম্মানিতা নারীদের নাম উল্লেখ করে কুরুচিপূর্ন কথা বলে যাচ্ছিল? এতেই কি প্রমানিত হয়না যে নারী অধিকার নয়, বরং আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে বিষোদাগারই মূল উদ্দ্যেশ্য?
হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে এ সংগঠনকে। যার প্রমান আমরা পেয়েছি হেফাজতের লং মার্চ, ঢাকা অবরোধ ও বিভিন্ন সিটি নির্বাচনে।
হেফাজতি ঝড়ের তান্ডবে যখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটছিল, তখন হেফাজত ঘোষনা দেয় ঈদের পর কঠোর কর্মসূচির। আর এর পরেই বহু আগের একটা ভিডিওকে নিয়ে তোলপাড় শুরু করে বিভিন্ন বাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদি মহল।
ভিডিওটা দেখে মনে হয় এ ওয়াজটা শীতকালে করা। তার মানে বহু দিন আগে। আল্লামা শফিতো আলোচানার শীর্ষবিন্দুতে বহু আগ থেকেই। তাহলে এত দিন কেন এ ভিডিওটা প্রচার করা হয়নি?
এতেও কি প্রমানিত হয়না যে নারী অধিকার নয়, বরং হেফাজত থেকে জনগনের দৃষ্টিকে সরিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকাকে ভাসিয়ে তোলাই এ নাটকের মূল উদ্দ্যেশ্য!
যাই হোক হুজুরের ঐ বক্তব্যকে আমিও সম্পূর্নরুপে সমর্থন করিনা। তবে আমি হজুরের প্রতি কোনরূপ বিষোদাগার করছি না। কারন হজুর যে বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন সে বিষয়ে উনার সামনে গিয়ে আমাদের দেশের কারোর বুক ফুলিয়ে দু একটা কথা বলার মত সাহস আছে বলে আমার মনে হয়না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমসাময়িক বিষয়ে কওমী মাদ্রাসার ছাত্রশিক্ষকরা একটু কম ওকাকিফহাল। যার ফলে নারীর পড়াশুনা, চাকুরী ইত্যাদিতে সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে নারীর প্রতি সমাজের বৈষম্যতে; যে বৈষম্য ইসলাম সৃষ্টি করেনি, সৃষ্টি করেছে সমাজ- তা অনেক সময় কওমিরা বুঝতে পারেনা। কোন সময় কেমন কথা বলা উচিৎ, কখন কী ধরনের কর্মসূচী দেয়া উচিৎ তাও তারা ঠিকভাবে আঁচ করতে পারেনা। শুধু তাই নয়, সমসাময়িক বিষয়ে কম ওয়াকিফহাল থাকার কারনে তারা জালেমের মিথ্যা আশ্বাসও বিশ্বাস করে।
আমাদের দেশের অনেক আলেমদেরকেই দেখা যায় ওয়াজ করার সময় এত অধিক পরিমাণ রসিকতা করতে যে তাতে মূল কথার গাম্ভীর্য নষ্ট হয়ে যায়। এবং অনেক সময় এগুলো ইসলামবিরোধীদের সমালোচনার পথও খুলে দেয়।
জনাব শফি সাহেবের এ বক্তব্যটা আমি মনে করি ইসলাম পন্থী সকলের জন্যই একটি শিক্ষা। আমাদের উচিৎ অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়া।
আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান কর জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উত্তমরূপে উপদেশ শুনিয়ে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সর্বোত্তম পন্থায়। (সূরা নাহল, আয়াত-১২৫)
বিষয়: বিবিধ
১৫১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন