চারটি ছোট বাক্য, কিন্তু মহামূল্যবান !!!
লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ১৫ মে, ২০১৩, ০৬:৩৫:০৭ সন্ধ্যা
হযরত সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় বাক্য চারটিঃ সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহ আকবর। তুমি ইচ্ছামতো এই বাক্যচারটির যে কোন বাক্য আগে পিছে বলতে পারো।(বাক্যগুলির সাজানোর ক্ষেত্রে কোন নিয়ম বা ফযিলত নেই )
- সহীহ মুসলিম ৩/১৬৮৫, নং ২১৩৭।
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আমি সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর বলতে এত বেশি পছন্দ করি যে, এগুলি বলা আমার কাছে পৃথিবীর বুকে সূর্যের নীচে যা কিছু আছে সবকিছু থেকে বেশি প্রিয়।
-সহীহ মুসলিম ৪/২০৭২, নং ২৬৯৫
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা যখন জান্নাতের বাগান সমূহে যাবে বা তা অতিক্রম করবে তখন তৃপ্তির সাথে বিচরণ ও ভক্ষন করবে। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল, জান্নাতের বাগান সমূহ কি? তিনি বললেনঃ মসজিদসমূহ। আমি বললামঃ বিচরণ ও ভক্ষন কি? তিনি বললেনঃ সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার।
-সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৩২, নং ৩৫০৯
এছাড়াও ইবনে মাসউদ, সালমান ফারসী, আবু হুরাইরা ও ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্নীত বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে এ বাক্য চারটির প্রতিটি বাক্য একবার বললে জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপন করা হয়।
-ইমাম মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪০৭-৪০৮, মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৮৮-৯০
আবু যার ও আয়েশা (রাঃ) বর্নীত বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ এই বাক্যগুলির প্রত্যেক বাক্য একবার যিকর করা একবার আল্লাহর ওয়াস্তে দান করার সমতুল্য।
-সহীহ মুসলিম ১/৪৯৮ নং ৭২০; ২/৬৯৭ নং ১০০৬
আবু সালমা (রাঃ) থেকে বর্নীত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ এই বাক্যগুলি কিয়ামতের দিন বান্দার আমল নামায় সবচেয়ে বেশি ভারী হবে।
-নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/৫০, মুসনাদ আহমদ ৩/৪৪৩, ৪/২৩৭, ৫/৩৬৫; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর ২২/ ৩৪৮, মাযমাউয যাওয়াইদ ১/৪৯, ১০/৮৮
আনাস বর্নীত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ গাছের ঢালে ঝাঁকি দিলে যেমন পাতাগুলি ঝরে যায় অনুরুপভাবে এই যিকরগুলি বললে বান্দার গুনাহ ঝরে যায়।
-মুসনাদ আহমদ ৩/১৫২, আত তারগীব ২/৪১৮
আবু হুরাইরা (রাঃ) ও আবু সাঈদ (রাঃ) উভয়ে নবীয়ে আকরাম (সাঃ) থেকে বর্ননা করেছেন, “আল্লাহ এই চারটি বাক্যকে বেছে পছন্দ করে নিয়েছেন। এই বাক্যগুলির যে কোন একটি বাক্য একবার বললে আল্লাহ ২০ টি সওয়াব প্রদান করতেন এবং ২০টি গুনাহ ক্ষমা করবেন। আর এভাবে যে বেশি বেশি যিকর করবে সে মুনাফিকী থেকে মুক্তি লাভ করবে”।
-নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২১০
আবদুল্লাহ ইবনে উমার বর্নীত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ এই চারটি বাক্য যিকরকারী প্রতিটি বাক্যের প্রতিটি অক্ষরের জন্য ১০টি করে সাওয়াব লাভ করবেন।
-তাবারানী, আল-মুজমুল আউসাত ৬/৩০৯
হযরত ফাতিমা (রাঃ) নিজের হাতে যাঁতা ঘুরিয়ে ও সংসারের সকল কর্ম একা করতে কষ্ট পেতেন। হযরত আলী (রাঃ) তাঁকে পরামর্শ দেন যে, তোমার আব্বার নিকট যুদ্ধলব্ধ একটি দাসী চাও, যে তোমাকে সংসার কর্মে সাহায্য করবে। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে দেখা করতে এসে তাঁকে না পেয়ে ফিরে যান। রাত্রে তাঁরা বিছানায় শুয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁদের কাছে আসেন। তিনি বলেন, “আমার আসহাবে সুফফার দরিদ্র সাহাবীগনকে বাদ দিয়ে তোমাকে কোন দাসী দিতে পারব না। তবে দাসীর চেয়েও উত্তম বিষয় তোমাদেরকে শিখিয়ে দিচ্ছি। তোমরা যখন বিছানায় শুয়ে পড়বে তখন ৩৩ বার সুবহানআল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবর বলবে।
-সহীহ বুখারী ৩/১১৩৩, ৩/১৩৫৮, ৫/২০৫১, ৫/২৩২৯, নং- ২৯৪৫, ৩৫০২, ৫০৪৬, ৫৯৫৯; সহীহ মুসলিম ৪/২০৯১, নং ২৭২৭
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, কোন মুসলিম যদি দু’টি কাজ নিয়মিত করতে পারে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কাজ দু’টি খুবই সহজ কিন্তু করার মানুষ খুব কম। প্রথমত, প্রত্যেক সালাতের পরে ১০ বার সুবহানআল্লাহ, ১০বার আলহামদুলিল্লাহ ও ১০ বার আল্লাহু আকবর বলবে। এতে ১৫০ বার জিহবার যিকর হবে এবং আল্লাহর কাছে আমলনামায় বা মীযানে ১৫০০ সাওয়াব হবে। দ্বিতীয়ত, বিছানায় শয়ন করার পরে ৩৪ বার আল্লাহু আকবর, ৩৩ বার আল-হামদুলিল্লাহ ও ৩৩বার সুবহানআল্লাহ বলবে। এতে মুখে ১০০বার ও মীযানে ১০০০ বার হবে”। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আংগুলে গুনে গুনে তা দেখান। সাহাবীগন প্রশ্ন করেনঃ “এই দুটি কর্ম সহজ হওয়া সত্ত্বেও পালনকারী কম কেন? তিনি উত্তরে বলেনঃ “কেউ শুয়ে পড়লে শয়তান এসে এগুলি বলার আগেই ঘুম পাড়িয়ে দেয়। সালাতের পরে এগুলি বলার আগেই তাকে তার বিভিন্ন কথা মনে করিয়ে দেয়।
-সুনানু আবু দাউদ ৪/৩১৬, নং ৫০৬৫
বিষয়: বিবিধ
৩২৬৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন