মডারেটর বিহীন ব্লগ
লিখেছেন লিখেছেন শরফুদ্দিন আহমদ লিংকন ০২ মে, ২০১৩, ০৭:৩৬:১৭ সকাল
দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যজ্য। স্কুল জীবনে এ ভাবসম্প্রসারণটি হয়তো আমরা সকলেই পড়েছি। ছোট বেলা থেকেই আমাদের বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে- বিদ্যা অতি মূল্যবান সম্পদ, কিন্তু চরিত্র তার চেয়েও বেশি মূল্যবান। চরিত্রহীন ব্যক্তি পশুর সমান ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু নৈতিকতা বিবর্জিত সেকুলার শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের চরিত্রকে কতটুকু শুদ্ধ করেছে তা ভাববার বিষয়।
বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেয়া যায় শিক্ষিত লোকদের চরিত্রের চেয়ে অশিক্ষিত মূর্খ লোকদের চরিত্র অনেক গুনে ভালো। তাই এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়- যে শিক্ষা আমাদের চরিত্রবান হবার আহবান জানায়, সে শিক্ষাই আমাদের চরিত্র নাশের অন্যতম কারন। কাউকে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসতে নিষেধ করা যেমন হাস্যকর; তেমনি আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা অক্ষুন্ন রেখে ‘দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যজ্য’ এ জাতীয় ভাবসম্প্রসারনের লেকচার দেয়াও চরম হাস্যকর বলে আমার কাছে মনে হয়।
বিগত কিছুদিন ধরে একটি বিষয় আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির টয়লেট গুলোকে আমার কাছে মনে হয় যেন ‘মডারেটর বিহীন ব্লগ’। যার যা মন চাইছে তা লিখে যাচ্ছে সেখানে। এগুলো কি অশিক্ষিত লোকেরা করে!!!
বিভিন্ন পাবলিক টয়লেট এবং লঞ্চের টয়লেটেও এ জাতীয় কুরুচীপূর্ন বিভিন্ন লেখা দেখা যায়। ওটা আমার আলোচ্য বিষয় নয়। কারন সেখানে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ যায়। কিন্তু ভার্সিটির টয়লেটগুলোতো বলা যায় দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা যারা গ্রহণ করতে যাচ্ছে তাদের জন্য। ওখানে এ জাতীয় কুরুচীপূর্ন লেখা বিবেকবানদেরকে সত্যিই কষ্ট দেয়।
কোন কোন ভার্সিটিতে দেখা যায় কালো রংয়ের দরজা ব্যবহার করতে। কিন্তু এটাও সোনার ছেলেদেরকে দমিয়ে রাখতে পারে না। কারন এগুলোতে বাংলা বা ইংরেজিতে লিফলেট অথবা স্টিকারে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা সাঁটানো থাকে। যেমন-ডু ফ্লাশ আফটার ইউজ (ব্যবহার শেষে ফ্লাশ করুন), নো স্মোকিং অ্যাট দ্য টাইম অফ টয়লেট- ইত্যাদি। দরজা ব্যবহার করতে না পেরে এ লিফলেট বা স্টিকারগুলোকে তখন ব্লগিং প্লাটফরম হিসেবে ব্যবহার করে সেকুলার শিক্ষার আলোয় আলোকিত উচ্চশিক্ষিত তরুণরা।
ব্রিটিশদের শিখানো এ শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের দিন দিন নিয়ে যাচ্ছে অধঃপতনের অতল গহবরে। বর্তমানে এ শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো সেকুলার ও ধর্মহীন করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কিছু নাস্তিককে ।
বাংলাদেশ প্রায় ৯০ভাগ মুসলমানের দেশ।এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিফলিত হবে মুসলমানদের চিন্তা চেতনা আদর্শ। ২% নাস্তিকদের নয়।নাস্তিকদের কথাবার্তা ও চিন্তাচেতনা কেমন, তা যে কেউ তাদের লেখা ব্লগ বা তাদের ফেইসবুক পেইজগুলো দেখলে সহজেই বুঝতে পারেন।যেসব গালি ভদ্র সমাজে চরম ঘৃণিত, সেসব গালি যেন তাদের কাছে খুব স্বাভাবিক।
এ জাতীয় লোকদের চিন্তাচেতনা প্রতিফলিত করার মত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীকে কোথায় নিয়ে যাবে, তা ভাবতেই গা শিউরে উঠে।
আমরা এমন শিক্ষাব্যবস্থা চাই, যে শিক্ষাব্যবস্থা আমাদেরকে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি আদর্শ চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলবে।
বিষয়: বিবিধ
১৯৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন