“পহেলা বৈশাখ” ওরফে “শুভ নববর্ষ” মুসলমানদেরও নয় বাঙ্গালীদেরও নয়

লিখেছেন লিখেছেন পাগলা ব্যাটা ১৪ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:২৪:১৮ রাত

“পহেলা বৈশাখ” ওরফে “শুভ নববর্ষ”। আমাদের স্বভাবটা জানি কেমন - অন্য মানুষের জিনিসকে আমরা নিজেদের বলে চালাতে ভারি ভালোবাসি। কোথাকার কোন দিল্লির সম্রাট আকবর প্রজা শোষণের সুবিধার্থে, কৃষকদের গলায় গামছা বেঁধে উৎপাদিত ফসলের ভাগ ছিনিয়ে নিতে চালু করলো তারিখ-ই-ইলাহি। তাও যদি ব্যাপারটাতে একটু স্বকীয়তা থাকতো! মুসলিমদের হিজরি সালকে (বর্তমানে ১৪৩৩) মন্ত্র পড়িয়ে, গলায় পৈতে ঝুলিয়ে করা হল সৌরবছর। সেই তারিখ-ই-ইলাহি- ই আজকের তথাকথিত বঙ্গাব্দ (বর্তমানে ১৪১৯)। এই মুঘল বাদশার চরম আক্রোশ ছিল বাংলার প্রতি। স্বাধীন বাংলাকে কব্জা করতে সে সেনাপতি মানসিংহকে ৫০টি কামান দিয়ে পাঠায়। সোনারগাঁর ঈশা খান সমানে সমানে লড়ে যান তার বিশাল বাহিনীর বিপক্ষে। শেষমেশ দন্দ্বযুদ্ধে মানসিংহকে পরাজিত করার পরেও তিনি হত্যা না করে ছেড়ে দেন। বিজয়ী বীরের মহানুভবতা দেখে মানসিংহের স্ত্রী অনেক অনুরোধ করে দিল্লিতে নিয়ে আসে ঈশা খানকে। কিন্তু সেখানে কি হল? আকবর দ্য গ্রেট ঈশা খানকে বন্দী করে ছুড়ে ফেলে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে। পরে নাকি অবশ্য মহান আকবর তার ভুল বুঝতে পেরে বাংলার সিংহপুরুষকে দয়া করে মুক্তি দেয়! এই সেই সম্রাট আকবর যে ‘দ্বীনে ইলাহি’ নামে একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তন করেছিলো - যাতে ইসলাম ধর্মের খারাপ জিনিসগুলো বাদ দিয়ে হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মের ভালো জিনিস যোগ করা হয়েছিল! যে দিল্লিপতির হানাদার বাহিনী বার বার বাংলার মাটি লাল করেছে আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্তে - তারই চালু করা ফারসি ভাষার সাল গণনাকে আমরা ‘বঙ্গাব্দ’ বলে চালিয়ে ভারী গর্ববোধ করি।

এতো গেল বছর শুরু হবার হিসেবের কথা। পয়লা বৈশাখ যাকে বাঙালি সর্বজনীন উৎসবের দাবী করা হয় তা উদযাপনের শুরুর ইতিহাস কি আমরা জানি? প্রথম ঘটা করে নববর্ষ পালন হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। ব্রিটিশরাজের বিজয় কামনা করে ১৯১৭ সালের পয়লা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করে কলকাতার হিন্দু মহল। আবার যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজলো, স্বাধীনতাকামী সুভাষ বসু ব্রিটিশ তাড়াতে আজাদ-হিন্দ ফৌজ গঠনের জন্য করতে দুনিয়া চষে বেড়াতে লাগলেন তখন হিন্দু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ১৯৩৮ সালে উৎসব করে পয়লা বৈশাখ পালন করলো আবার। পুজায় পূজায় সাদা চামড়ার প্রভুদের জন্য বিজয় কামনা করলো, তাইতো ইংরেজরা যখন ভারতবর্ষকে চুষেছে তখন ছিবড়াটা জুটেছে এদের কপালেই। অথচ এই ব্রিটিশরা সিপাহি বিপ্লবের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের খুন করে লাশ রাজপথের ল্যাম্পপোস্টে ঝুলিয়ে রেখেছিল দেশবাসীকে শিক্ষা দেয়ার জন্য। এরপরেও আতেঁল বুদ্ধিজীবিরা পয়লা বৈশাখের ইতিহাস জেনেশুনে গোপন করে একে বাঙালির প্রাণের অনুষ্ঠান বলে দাবী করে! এসব দালালরা জেনে রাখুক - আমরা মিরজাফরের বংশধর নই। বেঈমানি করার নাম বাঙালিয়ানা হলে সেই বাঙালিয়ানা আমাদের দরকার নেই।

বিষয়: বিবিধ

১৪১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File