আসুন আমরা সকল মুসলিম দলাদলি ও সকল বিভেদ ভুলে একতাবদ্ধ হই

লিখেছেন লিখেছেন শহীদ ভাই ১২ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:১২:৫৪ রাত



মুসলমনাদের অবস্থা এখন বড়ই করুণ।


কোথাও তারা নিরাপদ নয়। না দেশে, না বিদেশে। না মুসলিম রাষ্ট্রে, না বিধর্মী রাষ্ট্রে। গোটা পৃথিবীতে যখন ইসলামের শত্রুরা মুসলমানদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মুসলমান দেখলেই “সন্ত্রাসী” উপাধী দিয়ে হেনস্থা করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসী ধর্ম, সাম্প্রদায়িক ধর্ম আখ্যা দেওয়ার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে উপর্যুপরিভাবে। মুসলমানদের ইসলামী শিক্ষালয়কে সন্ত্রাসীকেন্দ্র আখ্যা দেবার হিন কর্মকান্ডে লিপ্ত। ঠিক এমনি সময় মুসলমানরা আজ শতধা বিভক্ত। মুসলমনদের মাঝে ধর্মীয় কোন্দলের সয়লাব।

অথচ এখন সবচে’ প্রয়োজন হল মুসলমানদের মাঝে একতা সৃষ্টি করা। ঐক্যমত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। নবীজী সাঃ এর কালিমায়ে তায়্যিবার প্লাটফর্মে এক হওয়া আজ সময়ের আবশ্যকীয় দাবি।

যখন মুসলমানদের দুশমনরা মুসলমানদের উপর হামলা করে, তখন তারা এটা দেখেনা যে, সে কি দেওবন্দী না বেরেলবী? সে কি মুকাল্লিদ না গায়রে মুকাল্লিদ? সে কি কিয়াম করে না করেনা? সে কি মাজারে যায় কি যায়না? সে ইমামের পিছনে কিরাত পড়ে না পড়েনা?

“লোকটি মুসলমান” কেবল এই অপরাধেই হত্যা করা হয়।

আমরা দেখতে পাচ্ছি একের পর এক মুসলিম জাতির/দেশের পতন ঘটছে৷

আমরা কি করছি? আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি ৷ যখন ফিলিস্তিনকে কেড়ে নেয়া হল, আমরা কিছুই করিনি ৷ এরপর একের পর এক জাতি বিপদের মুখে পড়তে লাগল – কাশ্মীর, চেচনিয়া, ফিলিপাইনের মুসলিম এবং সর্বশেষ ইরাক ৷ ইরাকে যখন হত্যাযজ্ঞ চলছে, তখন আমরা কিছুই করিনি৷

বার্মায় মুসলিম নিধন হয়েছে তখনও আমরা তেমন কিছু করলাম না। এখানেই শেষ নয়, পরবর্তীতে আরো জাতিকে ধরা হবে, কাকে ধরা হবে তা আল্লাহ্ই ভাল জানেন।

রসূলুলৱাহ্‌ (সা.) বলেছেন, ‘এই উম্মত হল একটি দেহের মত ৷ যদি দেহের কোথাও ব্যথা লাগে, তাহলে গোটা দেহ জ্বরাক্রান্ত হয় ও ঘুমাতে পারেনা ৷’ (বুখারী)৷ অর্থাৎ কারও হাত বা পায়ে আঘাত লাগলে, সে ব্যথার কারণে ঘুমাতে পারেনা, এবং তার দেহ ব্যথা সারাতে গিয়ে জ্বরগ্রস্থ হয়ে পড়ে ৷ পূর্ব, পশ্চিম বা উত্তর, দক্ষিণের মুসলিম জাতি ব্যথা পেলে, আপনারও এমন ব্যথা লাগা উচিত যেন আপনার নিজ পরিবার আহত হয়েছে ৷ আপনি যদি শুধু নিজের এবং আপনজনদের নিরাপত্তা নিয়েই চিন্তিত হন – তবে একটা সমস্যা আছে, তখন আপনাকে আর দেহের (উম্মাহ) অংশ বলা যায় না ৷ মুসলিমরা রাষ্ট্র, মাযহাব, দলাদলি নিয়ে বিভক্ত হতে পারে, কিন্তু তাদের বড় পরিচয় তারা মুসলিম (যদি না তারা পথভ্রষ্টদের মধ্যে কেউ হয়) ৷ অনেকে দাবী করেন ‘আমি ও আমার দল মুসলিম’, অন্যরা যেহেতু তাদের দলের অনুসরণ করেন না তাই অন্যরা মুসলিম না ৷ আপনি যতক্ষণ না কোন ভাইকে বা বোনকে কাফের প্রমাণ করতে পারবেন, ততক্ষণ সে মুসলিম [একজন মানুষের অন্তরে ঈমান আছে কি নেই তা দেখার ক্ষমতাও আমাদের নেই বা তা দেখার নির্দেশও আমাদের দেয়া হয়নি ৷ রসূল (সা) আমাদের বাহ্যিক আমল দেখে মুসলিম সনাক্ত করতে বলেছেন ৷ যেমন: নামায, যাকাত, হজ্জ ইত্যাদি]৷

আমরা মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য চাই ৷ ঐক্য বলতে বলছিনা দল, মাযহাব সব বাদ দিয়ে সবাইকে একটা জামাতের অনুসরণ করতে হবে ৷ সেটা হয়তো এই মুহূর্তেই সম্ভব নয় ৷ ঐক্য বলতে আমরা বলছি, আপনি যে মুসলিম গোষ্ঠীর (বা group-এরই) হননা কেন, যে মাযহাবের হননা কেন – আপনি বিপদে আপনার ভাইয়ের পাশে এসে দাড়াঁবেন ৷ এটাই ঐক্য!

অন্য মুসলিম ভাইদের সাথে আপনার চিন্তাধারার মিল নাও থাকতে পারে, কিন্তু তাদের বিপদে আপনি সাহায্য করবেন – একেই বলে একতা ৷

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে, আমরা মুসলিমরা, বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি।

আসুন আমরা সকল মুসলিম ভাই/বোন

দলাদলি ও সকল বিভেদ ভুলে একতাবদ্ধ হই।




বিষয়: বিবিধ

১২৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File