আফজাল গুরুর ফাঁসি॥ ভারতীয় গণতন্ত্রের আসল চেহারা উন্মোচিত

লিখেছেন লিখেছেন চোরাবালি ০৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:২৪:৫৮ দুপুর

সম্প্রতি ভারত সরকার আফজাল গুরু নামে এক কাশ্মীরি মুসলমানের ফাঁসি কার্যকর করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি ২০০১ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টে সন্ত্রাসী হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সত্যি কি তিনি সন্ত্রাসী, নাকি তার একমাত্র অপরাধ তিনি মুসলমান? ভারতের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ অরুন্ধতী রায়ের লেখায় বিষয়টির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে তা তুলে ধরা হলো। লেখাটি ব্রিটেনের প্রভাবশালী গার্ডিয়ান পত্রিকায় ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল।

মামলায় অসংখ্য ফাঁকফোকর ছিল এবং সবাই তা জানত। কিন্তু তবুও ভারতের সব প্রতিষ্ঠান কাশ্মীরী এই ‘সন্ত্রাসী’কে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে ভূমিকা রেখেছে।

দিল্লিতে শনিবার বসন্তের স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ ঘটেছিল। সূর্য বের হয়ে এসেছিল, এবং আইন তার নিজের পথে চলেছিল। ব্রেকফাস্টের সামান্য আগে ভারত সরকার সংগোপনে আফজাল গুরুর ফাঁসি কার্যকর করল। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে পার্লামেন্ট ভবনে হামলার প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিটি ১২ বছর ধরে দিল্লির তিহার কারাগারে নিঃসঙ্গ অবস্থায় ছিলেন। ফাঁসির পর মৃতদেহটি ওই কারাগারেই সমাহিত করা হয়। গুরুর স্ত্রী ও ছেলেকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। ‘কর্তৃপ জরুরি ডাক ও রেজিস্ট্রি করা চিঠির মাধ্যমে পরিবারকে অভিহিত করেছে,’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘তারা চিঠিটি পেল কি না তা জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালককে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’ বড় কোনো ব্যাপার নয়, তারা আরেক কাশ্মীরী সন্ত্রাসীর পরিবার মাত্র।

ভারত জাতির এই বিরল ঐক্যের মুহূর্তটিতে কিংবা অন্তত এর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো- কংগ্রেস, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী)- আইনের শাসনের মহাবিজয় উদযাপন করতে ঐক্যবদ্ধ (অবশ্য ‘বিলম্ব’ ও ‘সময়’ নিয়ে কিছুটা বাদানুবাদ ছিল) হয়। টিভি স্টুডিওগুলোতে এ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তাতে ধর্মীয় আবেগের সঙ্গে বাস্তবতার কচকচানি গুলিয়ে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ নিয়ে চেচামেচি চলে। ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ফাঁসিতে উল্লসিত হয়ে মিষ্টি বিতরণ করে, প্রতিবাদ করতে জড়ো হওয়া কাশ্মীরিদের (বালিকাদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল) পিটুনি দেয়। এমনকি গুরু মৃত এবং দৃশপটে না থাকলেও স্টুডিওর ভাষ্যকার এবং রাজপথে দুর্বৃত্তদের একে অন্যকে সাহস জোগানোর দরকার হয়েছে। এর কারণ খুব সম্ভবত মনের গহীনে তারা জানত, ভয়ঙ্কর একটা ভুল কাজে তারা পরস্পর ষড়যন্ত্র করছে।

আসল ঘটনা কি? ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাঁচ সশস্ত্র ব্যক্তি একটি বোমা-গাড়ি নিয়ে ভারতীয় পার্লামেন্ট ভবনের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করা হলে তারা লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়, গুলিবর্ষণ করে। এতে আট নিরাপত্তা কর্মী ও এক মালী নিহত হয়। গুলি বিনিময়ের একপর্যায়ে হামলাকারী পাঁচজন নিহত হয়। পুলিশ হেফাজতে আফজাল গুরু অনেকগুলো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এগুলোর একটি অনুযায়ী, তিনি ওই লোকগুলোকে মোহাম্মদ, রানা, রাজা, হামজা ও হায়দার নামে শনাক্ত করেছিলেন। তাদের সম্পর্কে আমরা ওইটুকুই জানি। এমনকি তাদের নামের দ্বিতীয় অংশও ছিল না। তখনকার বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এল কে আদভানি বলেছিলেন, তারা ‘পাকিস্তানিদের মতো দেখতে।’ (তিনি কি জানেন, পাকিস্তানিদের মতো দেখতে ঠিক কেমন? তিনি নিজে সিন্ধি।) নিরাপত্তা হেফাজতে গুরুর দেওয়া স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে (পরে সুপ্রিম কোর্ট যেটাকে ‘ত্র“টিপূর্ণ’ ও ‘প্রক্রিয়াগত সুরার লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করে আমলে নেয়নি) সরকার পাকিস্তান থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আনে, পাকিস্তান সীমান্তে পাঁচ লাখ সৈন্য মোতায়েন করে। পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলেও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছিল। বিদেশি দূতাবাসগুলো তাদের নাগরিকদের ভারত সফর না করার অনুরোধ করে, দিল্লি থেকে তাদের স্টাফদের সরিয়ে নেয়। কয়েক মাস ধরে এই অচলাবস্থা চলে, ভারতের কয়েক হাজার কোটি রুপি ব্যয় হয়।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল (ভুয়া ‘এনকাউন্টার’ হত্যাকাণ্ডের জন্য এই সেল কুখ্যাত, তারা সন্দেহজনক সন্ত্রাসীদের বিচারবহির্ভূত আক্রমণের ল্যবস্তু করে থাকে) মামলাটির সুরাহা করার দাবি করে। দিল্লিতে ১৫ ডিসেম্বর তারা ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ অধ্যাপক এস এ আর গিলানি এবং কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে শওকত গুরু ও তার কাজিন আফজাল গুরুকে গ্রেফতার করে। এর পরপরই তারা শওকতের স্ত্রী আফসান গুরুকে গ্রেফতার করে। ভারতীয় মিডিয়া উৎসাহভরে পুলিশের ভাষ্য প্রচার করতে থাকে। এসব খবরের কোনো কোনোটির শিরোনাম ছিল : ‘দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ছিলেন সন্ত্রাসী পরিকল্পনার হোতা,’ ‘ভার্সিটি ডন ফিদাইনদের গুরু,’ ‘ডন অবসর সময়ে সন্ত্রাসের দীা দিতেন।’ জাতীয় নেটওয়ার্ক জি টিভি ডিসেম্বর ১৩ নামের একটি ‘ডকুড্রামা’ প্রচার করে। এতে দাবি করা হয়, এটা ‘পুলিশের চার্জশিটের ভিত্তিতে তৈরি সত্য কাহিনী।’ (পুলিশের বক্তব্যই যদি সত্য হয়, তবে আদালত আছে কিসের জন্য?) তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি ও আদভানি প্রকাশ্যে ডকুড্রামাটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। সুপ্রিম কোর্ট এটি প্রচার স্থগিত করার আবেদন খারিজ করে দিয়ে জানায়, মিডিয়া বিচারকদের প্রভাবিত করবে না। এটি প্রচারের কয়েক দিনের মধ্যেই দ্রুত বিচার আদালত গিলানি এবং আফজাল ও শওকত গুরুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল। পরে হাইকোর্ট গিলানি ও আফসান গুরুকে নির্দোষ হিসেবে খালাস দেয়। সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশ বহাল রাখে। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত ২০০৫ সালের ৫ আগস্ট আফজাল গুরুকে তিনটি যাবজ্জীবন এবং দুটি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়।

বিজেপি সঙ্গে সঙ্গে ফাঁসি কার্যকর করার আহ্বান জানায়। দলটির একটি নির্বাচনী স্লোগান ছিল ‘দেশ আভি শরমিন্দা হ্যায়, আফজাল আভিবি জিন্দা হ্যায়।’ এর অর্থ হলো (উত্তেজনা ছড়ানো ছন্দে) ‘আফজাল গুরু জীবিত থাকায় আমাদের জাতি লজ্জিত।’ ফিসফিসানি আরো জোরালো করতে নতুন করে মিডিয়ার প্রচারণা শুরু হলো। চন্দন মিত্র, বর্তমানে বিজেপি এমপি, তখন তিনি পাইওনিয়ার পত্রিকার সম্পাদক, লিখলেন : ‘২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর যে কয়েকজন সন্ত্রাসী পার্লামেন্টে ঢুকেছিল, আফজাল গুরু তাদের একজন। সে-ই নিরাপত্তা কর্মীদের উপর প্রথমে গুলি ছুড়েছিল, নিহত ছয়জনের তিনজন সম্ভবত তার গুলিতে প্রাণ হারায়।’ খোদ পুলিশের চার্জশিটেও আফজালকে ওই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারেও স্বীকার করা হয়, অভিযোগের প্রমাণ সুস্পষ্ট নয় : ‘যে ধরনের ভয়াবহ ষড়যন্ত্রমূলক মামলা এটি, সে ধরনের অপরাধময় প্রমাণ এতে দৃশ্যমান নয়।’ কিন্তু দুঃখজনকভাবে তারপর বলা হলো, ‘ঘটনাটি, যাতে অনেক প্রাণহানি ঘটে, পুরো জাতিকে নাড়া দিয়েছে, এবং সমাজের সম্মিলিত বিবেক স্বস্তি পাবে, যদি অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।’

পার্লামেন্টে হামলা মামলায় আমাদের সম্মিলিত বিবেককে বিনির্মাণ করেছে? পত্রপত্রিকার প্রকাশিত খবর থেকে এটা তৈরি হয়েছে? টিভিতে যেসব ভাষ্য প্রচার করা হয়েছে, তা থেকে? আইনের শাসন নিয়ে উল্লাস প্রকাশের আগে আসুন আমরা দেখি সত্যি কী ঘটেছিল।

যে সব লোক আইনের শাসনের জয় হয়েছে বলে দাবি করে উল্লাস প্রকাশ করছে, তারা যুক্তি দেখায়, এটা তো সত্যি, ভারতীয় আদালত গিলানিকে খালাস দিয়েছে এবং আফজালকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এতে কি অবাধ ও নিরপে বিচার প্রমাণিত হয় না?

দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয় ২০০২ সালের মে মাসে। বিশ্ব তখনো ৯/১১-পরবর্তী উন্মাদনায় আচ্ছন্ন। মার্কিন সরকার আফগানিস্তানে তার ‘জয়’ নিয়ে আগাম উল্লাসে মত্ত। ভারতের গুজরাট রাজ্যে ওই বছরের ফেব্র“য়ারি মাসের শেষ দিক থেকে পুলিশ ও সরকারি প্রশাসনের সহায়তায় হিন্দু ভাড়াটে গুন্ডারা মুসলিম নিধনযজ্ঞে মেতেছে, যা এখনো বিপ্তিভাবে চলছে। বাতাস সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষে ভারী। এমন এক পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টে হামলা মামলাটি নিজস্ব পথে ছুটল। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ফৌজদারি মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে যখন প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়, যখন সাীদের জেরা করা হয়, যখন যুক্তির ভিত্তি নির্মাণ করা হয়, তখন আপনি কেবল আইনের দৃষ্টিতে কথা বলতে পারেন, নতুন কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন না। আর আফজাল গুরু তখন অত্যন্ত সুরতি সেলে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছেন, তার কোনো আইনজীবী ছিল না। আদালত নিযুক্ত জুনিয়র আইনজীবী একবারের জন্যও কারাগারে তার মক্কেলের কাছে যাননি, তিনি গুরুর পে কথা বলার জন্য একজন সাীকেও তলব করেননি এবং প্রসিকিউশনের সাীদের জেরাও করেননি। এমন পরিস্থিতি পরিবর্তনে কোনো কিছু করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন বিচারক।

কিন্তু তবুও শুরুতেই মামলাটি খারিজ হওয়ার কথা। মাত্র কয়েকটি উদাহরণ এখানে তুলে ধরা হলো : গুরুর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত সবচেয়ে শক্ত দুটি প্রমাণ ছিল গ্রেফতারের সময় জব্ধ করা একটি সেলফোন ও একটি ল্যাপটপ। সেগুলো সিলগালা করা হয়নি, অথচ প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করতে হলে তা করা দরকার ছিল। বিচারের সময় প্রকাশ পায়, গ্রেফতারের পর ল্যাপটপটির হার্ডডিস্কে প্রবেশ করা হয়েছিল। এতে কেবল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাল পাস এবং জাল আইডেনটিটি কার্ড ছিল যা পার্লামেন্টে ঢোকার সময় ‘সন্ত্রাসীরা’ ব্যবহার করেছিল- আর ছিল পার্লামেন্ট ভবন নিয়ে জি টিভির একটি ভিডিও কিপ। অর্থাৎ পুলিশের ভাষ্যমতে, গুরু তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্ত প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার হতে পারে, এমন কিছু ছাড়া আর বাকি সব মুছে ফেলেছিলেন। পুলিশের সাী জানান, যে গুরুত্বপূর্ণ সিম কার্ডটি ব্যবহার করে এই মামলার আসামিরা গুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, সেটি তিনি বিক্রি করেছিলেন ২০০১ সালের ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু প্রসিকিউশনের নিজস্ব সেল রেকর্ডে দেখা যায়, সিমটি আসলে কার্যকর ছিল ২০০১ সালের ৬ নভেম্বর থেকে।

আফজালকে পুলিশ কিভাবে পাকড়াও করল? তারা বলে, গিলানিই তাদেরকে তার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আদালতের রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে, গিলানিকে গ্রেফতার করার আগেই আফজালকে গ্রেফতারের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। হাইকোর্ট এটাকে ‘বিষয়গত বৈপরীত্য’ হিসেবে অভিহিত করলেও এর ওপর জোর দেয়নি।

গ্রেফতারি মেমোতে সার করেছিলেন বিসমিল্লাহ, গিলানির ভাই, দিল্লিতে। জব্ধ তালিকায় সই করেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের দুই লোক, তাদের একজন আত্মসমর্পণকারী ‘জঙ্গি’ হিসেবে অতীতে আফজালের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।

এমন ধারাই চলতে থাকে, পুলিশ মিথ্যা আর বানোয়াট প্রমাণের ¯তূপ দাঁড় করায়। আদালত এগুলো লক্ষ্য করে, কিন্তু কেবল সীমার মধ্যে থেকে পুলিশের আঙুল নাড়ানো অবলোকন করে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।

পার্লামেন্ট হামলার রহস্য উৎঘাটনে সত্যিকারভাবে আগ্রহী যেকোনো লোক উপস্থাপিত বিপুল প্রমাণ অনুসরণ করতে পারেন। কিন্তু কেউ করেননি। আর এর ফলে প্রকৃত চক্রান্তকারী অচিহ্নিত রয়ে গেছে। এ নিয়ে তদন্তও হয়নি।

গুরুর প্রকৃত কাহিনী এবং যে ট্রাজেডি তার জীবনে ঘটে গেছে, সেটা এত বিশাল যে তা আদালত কে জায়গা হওয়ার নয়। আসল কাহিনী আমাদেরকে কাশ্মীর উপত্যাকায় নিয়ে যাবে। যে স্থানটি সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সামরিকায়ন জোন, যেখানে পাঁচ লাখ ভারতীয় সৈনিক (প্রতি চারজন বেসামরিক লোকের একজন) এবং সেনাশিবির ও নির্যাতন চেম্বারের গোলকধাঁধা কাশ্মীরী জনগণকে সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক ভারতের আবু গ্রাইবের [ইরাকে মার্কিন নিয়ন্ত্রিত কারাগার] কথা মনে করিয়ে দেয়। ১৯৯০ সাল থেকে, যখন আত্ম-নিয়ন্ত্রণাধিকারের সংগ্রাম জঙ্গিতে পরিণত হয়, ৬৮ হাজার লোক মারা গেছে, ১০ হাজার গুম হয়েছে, এবং অন্তত এক লাখ নির্যাতিত হয়েছে।

কারাগারের কে মৃত লাখ লাখ লোকের কাহিনীর চেয়ে গুরুরটি ভিন্ন। তার জীবন ও মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে দিনের অন্ধ আলোতে, তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে ভারতীয় গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ ভূমিকা পালন করেছে।

এখন তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়ে গেছে। আমি আশা করি আমাদের সম্মিলিত বিবেক তৃপ্ত হয়েছে। না কি আমাদের রক্তের পেয়ালা এখনো অর্ধেক মাত্র পূর্ণ হয়েছে?

অনুবাদ : হাসান শরীফ

বিষয়: বিবিধ

১৫৪০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

159914
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:২৯
এমএ হাসান লিখেছেন : khali nirzaton ar nirzaton.ALLAH er ses kobe hobe???
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২০
114380
চোরাবালি লিখেছেন : মুসলমানদের নির্যাতনের কৌশলে অন্যেরা সবাই মত্ত।
159916
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩২
সালাম বাংলাদেশ লিখেছেন : বিজেপির চেয়ে অনেক বেশি নিমকহারাম এই কংগ্রেস , মনে রাখতে হবে বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার সময় এরাই ক্ষমতায় ছিল এবং পরোক্ষ ভাবে বিজেপি সহায়তা করেছে। আর আফজাল গুরুর ফাঁসি সিম্পলি জুডিশিয়াল কিলিং ।
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২০
114381
চোরাবালি লিখেছেন : মুসলমানদের নির্যাতনের কৌশলে অন্যেরা সবাই মত্ত।
159920
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৮
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২০
114382
চোরাবালি লিখেছেন : মুসলমানদের নির্যাতনের কৌশলে অন্যেরা সবাই মত্ত।
160108
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:০৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই বিচার ও শাস্তি ভারতিয় আদালতের বিশ্বাস যোগ্যতা চরমভাবে ক্ষুন্ন করেছে। আমার অনেক সচেতন ভারিতয় বন্ধু বলেছিলেন সেসময় কয়েকটি কেলেংকারি যার মধ্যে বিচারপতিদের জমিকেনাও ছিল সেগুলিকে ধামাচাপা দিতে এই ফাঁসি দেওয়া হয়।
১০ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:০১
115356
চোরাবালি লিখেছেন : ভারত নিজেদের একটি অভ্যন্তরীন ঘটনাকে ধামা চাপা দিতে যেমন নতুন আরেকটি ঘটনার সৃষ্টি করে তেমনি আমাদের আওয়ামী লীগ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File