সাপ ধরবেন? তো সতীনের ছেলে
লিখেছেন লিখেছেন চোরাবালি ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:৩৫:২৩ সকাল
শব্দটি গ্রাম্য হলেও কার্যপরিধি কিন্তু সর্বস্তরে। সাপ ধরতে কেওই নিজের গর্ভধারণ করা সন্তানকে দিতে চায় না; বাহাবও তো দরকার নিজের ছেলে বলে, তাই সতীনের ছেলেকে দিয়ে ধরালে নিজের বাহাবাও পাওয়া গেল আর ছোবলে মারা গেলে শোকবার্তা আর দুফোটা চোখেরর গিলিসারিন জলে পত্রিকার পাতায় দোয়া মাহফিল।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেরকমই। মহমান্য জনপ্রতিনিধিদের দেখা মেলে না নিজ নিজ এলাকায় যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন এলাকার সর্বস্তরের উন্নয়ন তথা পাশে থাকবেন বলে। এলাকায় সময় দিতে না পারলে কি হবে তাদের দেখা কিন্তু মেলে নিয়মিতই টিভির পর্দায় চোখ রাখলেই। কখনও প্রেস কনফারেন্স; কখনও বা জরুরী সভা আবার কখনও বা ফিতাকাটা অনুষ্ঠানে।
সংবাদ মূলত অনলাইনেই দেখি টিভি দেখার সময় হয়ে ওঠে না বলে। গতকাল ফিরলাম একটু তারাতরি; গার্মেন্টস কামলাদের তারাতারি ঘরে ফেরা মানে রাত ৮টা তথাপিও ফিরতে পারলাম ৬টার মধ্যে। রাজনৈতিক টান টান উত্তেজনাকর অবস্থায় দেশীয় চ্যানেল দেখার জন্য দুই জুনিয়রের সাথে মোটামুটি যুদ্ধ আর গায়ের জোর খাটিয়ে পাগুটিয়ে চ্যানেল উল্টাতেই সিংহ গর্জন শুনে অনেকটা থমকেই গেলাম। লেকচারে তখন জনাব মায় চৌধুরী; দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে নির্দেশনা দিচ্ছেন কিভাবে পাহাড়া বসাতে হেব। বিরক্ত হয়ে আরেক চ্যানেলে যেতে সেখানে পেলাম মাননীয় কামরুল ইসলামকে; একই ভাবে নির্দেশনা; পর্যায়ক্রমে ওবায়দুল কাদের; যারা জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের; বাঁশের লাঠি হাতে পাহাড়া বসাতে আর বিএনপি জামাতকে শেষ করে দিতে এ দেশে থেকে।
আমরা গ্রামের দিনে গ্রাম্য মারামারি দেখতাম; ঢাল বল্লম; সরকি ইত্যাদি নিয়ে দু'পক্ষ ঘোষণা দিয়ে। যেখানে একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় ছিল; দলনেতা থাকতেন সবার আগে; এবং হাক ডাক নির্দেশনা যা দেবার তিনিই দিতেন। আর তার সতীর্থ বা জীবন রক্ষার্থে থাকতো তার প্রিয়জন বা প্রিয়া যোদ্ধারাই মূলত।
কিন্তু আমাদের এই বর্তমানে কোন রাজনৈতিক নেতা বা তার সন্তান বা নিকট আত্মীয়কি কখনও পাওয়া যাবে না রাস্তায় মিছিলে!! বা বিরোধী দমনে!!! প্রশ্নয় ওঠেন না; গতকাল কর্তারা ঘোষনা দিয়ে ঘুমিয়েছেন রাতে; আর ঘুম ভাঙবে সকাল ১০/১২টার পরে। আড়মোরা ছেড়ে রিমোর্ট হাতে নিয়ে কাজের লোকের হাতের চা কফি পান শেষে সংহিশতার মাত্রা বুঝে প্রস্তুত হবেন পরবর্তী নির্দেশনার জন্য।
আর উনাদের ছেলে মেয়েদের পাবেন না কেও এদেশে। তারা আছেন সবাই দেশের বাইরে আমাদের শাসন করার জন্য বুদ্ধিকৌশল জ্ঞান অর্জনে। ঝোপ বুঝে ঠিকই আসবেন দেশে; ক্ষমতার হাল ধরতে পিতার অবর্তানে।
এ সতীন তত্ত্বে আবর্তে প্রতিনিয়তই লাথি পড়ছে আমাদের মত শ্রমজীবিদের পেটে।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন