পুরুষের খিচুরী পার্বণ
লিখেছেন লিখেছেন চোরাবালি ৩১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৮:৪০:০৪ সকাল
আমাদের দেশে পার্বনের শেষ নেই। বড়লোকী ইলিশ পার্বণ, নারী দেখানো পিঠা পার্বণ, ------------ এর সঙ্গে খিচুরী পার্বণ যোগ তো করায় যায়।
সময়ঃ
ব্যাচেলরদের ঈদের ছুটির পর; বাচ্চাকাচ্চা যাদের স্কুলে যায়ঃ ফাইনাল পরীক্ষা বা গ্রীষ্মের ছুটিতে; বিবাহিত অথচ বাচ্চাকাচ্চা স্কুলে যায় না; অথবা নেইঃ ২/৩মাস পরপর কয়েকদিনের জন্য।
উপকরণঃ বিভিন্ন রকমের ডাল যেমন মসুর ডাল; মাস কলাই; মুগ ইত্যাদি। সরিষার তেল, সয়াবিন তেল, ঘি। বিভিন্ন রকমরে চাউল।
বলা বাহুল্য এই উৎসব পাল করা হয়ে থাকে ফাঁকা করে যখন বুয়া থাকে ছুটিতে বা ঘরের গিন্নী থাকেন বাপের বাড়ী বা অন্য কোথাও।
চারিদিকে শূণ্যতা উৎফুল্ল মনে ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে দরজা জানালা খুলে দিন।
গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে বউয়ের রেখে যাওয়া হাড়ি পাতিলগুলি আগে খুঁজে বের করে হাতের কাছে রাখুন সাথে তেল মসলাপাতিও। (বউ সম্প্রদায় যাবার আগে এমন ভাবে গুছিয়ে যান যেন ঘরে উনারা আসার আগ পর্যন্ত আর এগুলো ব্যবহার হবে না।)
যে ভাবে পালন করবেনঃ
# প্রথম দিন ডায়ট কন্ট্রোলের নামে শসা খেয়ে রাতে শুয়ে থাকুন। দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু করবেন প্রাবণ উৎসব।
# উৎসবের প্রথম দিনে হবে মসুর ডাউলের খিচুরী।
# দ্বিতীয় দিনে হবে মুগ ডাউলের খিচুরী।
# তৃতীয় দিন হেব মাস কলাই ডাউলের খিচুরী।
# চতুর্থ দিন চলবে মুগ + মসুর মিক্সড ডাউলের খিচুরী।
# পঞ্চম দিন চলতে মুগ + মসুর + মাসকলাই ডাউলের খিচুরী।
# ৬ষ্ঠদিন চলবে কালিজিরা চউলের কিছুরী।
(সবার সাথে আলু ভর্তা আর ডিম ভাজি কমন; আর যদি একটু কষ্ট সহ্য করতে পারেন তা হলে ইলশ মাছ ভাজি হলে তো কথায় থাকে না।)
# ৭দিন এই দিনে একটু ভিন্ন স্টাইলে রান্না হবে। পোলাও হবে ঘি দিয়ে রান্না, কোন সয়াবিনের ব্যাবহর হবে না। যতটা সম্ভব সুগন্ধীতে মাতামাতি করা যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে কারণ ৮দিন বা ৯দিনেই তিনারা ফিরে আসবেন আর ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই যেন পাশের বাসার কোন ভাবির মাধ্যতে খবর পৌঁছায় তাদের কানে। আর এই সংবাদ কানে পৌঁছানো মাত্র তাদের ফুরফুরে মেজাজের ভ্রমন হয়ে যাবে কড়কড়ে মনের ফোসফোস।
শতর্কতাঃ সংবাদর তিনাদের কানে পৌঁছানো মাত্র তাদের এফএম রান্না ঘর চালু হয়ে যেতে পারে; মেজাজা ঠিক রাখুন; বয়ান শোন জন্য মানুষিক প্রস্তুতি সম্পন্ন রাখতে হবে।
আমি যেভাবে পালন করলাম-
আমার তিনির ভ্রমণ টাইম একটু বেশী তাই পালন সাস্টাইল একটু ভিন্ন।
প্রথম ৪দনি কন্ট্রোল করলাম- রাতে শুধু শষা খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
৫ম দিন থেকে শুরু হল উৎসব-
প্রথম দিন গেল মুসর ডাউলের খিচুরী
দ্বিতীয় দিন গেল মুগ ডাউলের খিচুরী
তৃতীয় দিন গেল মুগ আর মসুর ডাউল মিক্সড করে খচিুরী
৪র্থ দিন গেল কণ্ট্রোলে শষার উপর দিয়ে
৫দিন গেল কালিজিরা চাউলের খিচুরীতে
৬ষ্ঠদিন- গেল আল্লার ওয়াস্তে বাড়ীওয়ার বাসায় মিলাদে।
৭দিন গেল- আরেক ব্যাচেলরে বাসায় মাংস খিচুরীর দাওয়াতে।
৮দিন- রান্না করলাম কড়া তালে মুগ মসুর মাসকলায় ডাউলের খিচুরী সরিষার তেল সয়াবিন তেল আর ঘি মিলিয়ে।
আজ ৯দিন--
রান্না হবে সুগন্ধী চাউলের পোলাও। ইলিশ মাছ ভাজি; ডিম ভাজি। কারণ আগামীকাল আমার উনি আসবেন আর এসেয় যাতে উনি গড় গড় করতে থাকনে--- আমি না থাকলে তো সুখেই থাকো; বাহারি খাবার; বাধা দেবার কেও নাই----------------------------------------
বিষয়: বিবিধ
১৪০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন