রানা প্লাজা ধ্বসের জন্য আমরা ব্লগারগণও কি দায়ী নয়?

লিখেছেন লিখেছেন চোরাবালি ২৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৭:২২:৪২ সন্ধ্যা

আমারা যারা এখানে ব্লগিং করি তাদের হয়তো কারো বাবা মা সরকারী চাকুরী জীবি, কর্মকর্তা, আমলা আবার কারো বাবা মা বেসরকারী চাকুরী জীবি আবার কারো পিতা মাতা ব্যবসায়ী আবার কেও কেও নিজেরাই চাকুরী জীবি, ব্যবসায়ী অথবা আমলা। গুনিজনেরা সর্বদা নিজেদের দোষ আগে খুজে বের করতে বললেও আমরা সর্বদা অন্যের দোষ খুঁজে বের করি।

আমাদের বাবারা সরকারী প্রকৌশলী; আমাদের জন্য গড়ে তুলছেন সুরম্য প্রাসাদ। আর তাদের টাকায় কেনা ল্যাপটপ দিয়ে আমরা নিয়মিত ব্লগিং করে মজা লুটছি। দেশের জন্য গর্ববোধ করছি। কিন্তু একটি বারও কি ভেবে দেখেছি আমাদের বাবাদের বেতন কত? কতটাকা বেতনের বিপরীতে তারা কতটাকা ব্যায় করছেন? আমাদের বাবারা যে ঐ রানা প্লাজার নকশা অনুমোদন দিয়ে পকেট ভরতি করে টাকা এনে আমাদের জন্য প্রাসাদ গড়ছেন সে খবর কি কখনও আমরা নিয়েছি? আজ অবধি কেও নেই নাই ভবিষ্যতেও নিবে না। আমাদের দেশপ্রেম ব্লগে বাবাদের দেশপ্রেম মাইকে আর কলমে।

আছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকতা গণ বা তাদের ছেলে মেয়ে। ফায়ার লাইসেন্স দেয়ার সময় টাকা না দিলে কোন কাজ হয় না আর টাকা দিলে কোন কিছু দেখার দরকার পরে না। আমাদের বাবারা যে তানজির কে পুড়িয়ে তার মধ্যে মানুষ আটকিয়ে আমাদের জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা আনছেন সে খবর রাখি আমরা ক'জন?

আমাদের বাবারা রাজনীতি করেন। আগুল ফুলে বটগাছ বনে যান ৫বছরে। টাকা কোথা থেকে আসে কেও কি খোজ নিয়েছি? প্রতিনিয়ত যে তারা এলাকার বিভিন্ন ইন্ড্রাষ্টিজ থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন খবর রাখি কজনা মোরা। টাকা গুলি মালিকপক্ষ মেশিনে তৈরী করে দেন না, যে শ্রমিকদের জন্য আমাদের কান্নার শেষ নেই এখন তাদের পকেট থকেই আসে।

কাস্টমস পিয়ন যেখানে কোটি টাকার বাড়ী করে সেখানে টাকার উৎস নিয়ে কোন কথা বলি আমরা কজনা? একটা গার্মেন্টস থাকলে সে এলাকার ভ্যাট সার্কেলকে প্রতিমাসে ৩/৫হাজার টাকা দিতে হয় কোন কারণ ছাড়া। আর আমদানী রপ্তানীর ক্ষেত্রে তো টাকা ছাড়া কেও একটা কাগজে স্বাক্ষর করে না। গার্মেন্টস মালিকের টাকার খনি নাই বা ক্রেতা বা বায়াররা বস্তাভড়ে টাকা নিয়ে লাইন ধরে নাই অনেক বার্গেনিং করে ১টাকা রেট বাড়াতে হয়। সেখানে আমাদের মাঝের লোকগুলি প্রতিনিয়ত ঘুষ নিচ্ছেন না দিলে বিভিন্ন কোন কাজগে স্বাক্ষর করছেন না সেটাকা আসে কোন জায়গা থেকে সে খবর নাই আমাদের। সে টাকা আসে শ্রমিককে জোর করে কাজে নিয়ে এসে বিভিন্ন উপায়ে টাকা কম দিয়ে।

বাবা সরকারী ব্যাংকার। টাকা আর টাকার পাহাড় কি মজা তার ছেলে হয়ে টাকা ব্যায়ের জায়গা নেই। মাসিক বেতন ২৬ হলে কি হবে আমার পেছনেই ব্যয় ৩০ বোনের কথা বাদই দিলাম। একটি আমদানী এলসি খুলতে টাকা নেন রপ্তানী ডকুমেন্ট পাঠাতে টাকা নেন। গার্মেন্টস মালিক টাকা উসুল করেন শ্রমিক কে কম দিয়ে।

আমার ভাই চাকরী পেয়েছেন ঘুষ দিয়ে সরকারী অফিসে, ওহ আমি কত খুশি। কাজ জানার দরকার কি? টাকা হলে সব মিলে, ভাইও তাই করে, আর সেটি করতে গিয়েই রানা প্লাজার নকশা না দেখেই অনুমোদন দিছে গার্মেন্টস এর।

আমাদের মিডিয়া, গিয়ে টাকা দাবি করে, নিয়মিত টাকা দিতে হয় তাদের টাকা না দিলে রিপোর্ট আসতে থাকে একের পর এক। টাকা দিলে প্রশংসার শেষ নাই।

বিদ্যুৎ এ যে মই ঠেলে বেড়ায় তারও থাকে কয়েকটা বাড়ী সে বাড়ী আপনা আপনি হয় না তার পেছনে থাকে হাজারো তানজির।

ডাক্টারেরা আছেন অনেক লম্বা চওড়া লেকচার দেন নিয়মিত; কিন্তু দাদারা অষুধ লিখলেই মাসে ১০হাজার ফলে অষুধ কোম্পানী অষুধের মাত্রায় হের ফের বা ডেইট ফেইল অষুধ বাজারজাত করে আমাদের শিশুদের মারছেন, আপনাদের শিশুরা তো আবার দেশের বাইরে চিকিৎসা নেন।

একজন গার্মেন্টেস কামলা হিসেব আমার অভিজ্ঞতায় বলে এদেশে সঠিক পথে কাজ করাটা কঠিন। টাকা দিলে সব হয়। টাকা না দিলে কোন কাজ হয় না।

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File