ভার্চুয়াল কমেন্ট : প্রসঙ্গ অধিকার এবং আদিলুর
লিখেছেন লিখেছেন অনিরুদ্ধ অমায়িক ১২ আগস্ট, ২০১৩, ০২:০৯:১৩ দুপুর
একটি ফেসবুকীয় স্ট্যাটাস :
যদিও আদিলুর রহমান খান একরকম ডানপন্থীই হয়ে গিয়েছিলেন এবং "অধিকার" মানবাধিকার সংস্থার আদলে আসলে জামাত-পন্থী অর্গানাইজেশান তবু (আমি যেহেতু মারাত্মক উদার কেবল সেহেতু) একজন মানবাধিকার কর্মীকে সরকার ধরে নিয়ে যাবে - এটা মানতে মন চায় না।
এই লাইনের সুশীলতার বাংলাদেশে অভাব নাই। দুইজনের কথা বলি।
এক বামপন্থী একটিভিস্ট আদিলুর রহমান খান ডানপন্থী বলে খুব গোস্যা কিন্তু তার ওস্তাদ বিএনপি আমলে ডানপন্থী নেতাদের পকেট থেকে ৫০০ টাকা হাদিয়া নিতেও যখন পিছপা হতেন না তখন কিন্তু বলেন নি যদিও আমার রাজনৈতিক গুরু বাম রাজনীতিতে সিদ্ধি পেয়েছেন কিন্তু তিনি ডানপন্থী নেতাদের ভিক্ষায় চলেন বলে আমি একটু বিলা।
আমাদের আরেক পরিচিত মানুষের পিতা চোর হিসেবে সরকারী চাকুরে মহলে আদৃত, শুধু আদৃত বললে তাকে অপমান করা হবে - তিনি এক প্রকার আইডল। তিনি কিন্তু বলেন না যদিও আমার পিতা একজন অসাধারণ পিতা কিন্তু তিনি ব্যাপক ঘুষ খান বলে তাকে আমি মেনে নিতে পারছি না।
বিএনপি আমলে অধিকার এর রেফারেন্স দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলতেন, তখন আদিলুর রহমানরা প্রগতিশীল ছিলেন পাক্কা। কিন্তু এখন যেহেতু দাড়ি-টুপী অলাদের ওপর সংঘটিত mass murder নিয়ে "অধিকার" অনুসন্ধান করে সেহেতু তিনি রাষ্ট্র-বিরোধী (ভাগ্য ভালো তার দাড়ি নাই আর শুদ্ধ বাংলায় কথা বলেন। একটু দাড়ি থাকলে তিনি নায়েবে জামায়াত ইসলামী হয়ে যেতেন).
বাংলাদেশে যে দুএকটা প্রতিষ্ঠান এখনো প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখেছে তার মধ্যে অধিকার অন্যতম। আদিলুর রহমান খানের মাপের মানবাধিকার কর্মীও যখন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হন তখন বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার পক্ষে দাড়ানোর আর কোনো অজুহাত কি অবশিষ্ট থাকে?
একটি ফেসবুকীয় কমেন্ট :
আমি যদি এই দেশের একজন নিম্নবিত্ত হতাম আর আমার কিশোর ছেলেটিকে যদি একদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সন্দেহবশত তুলে নিয়ে গিয়ে তথা কথিত "ক্রস ফায়ার" করে মেরে ফেলতো, তাহলে আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে আমার না ফোটা আর্তনাদ নিজেই প্রকাশ করে তিনি সুধাকণ্ঠ হতেন।
আমার সন্তানের জন্মের পর কোন দুর্ঘটনায় আমার মৃত্যুর কারণে যদি তাকে এতিমখানায় মানুষ হতে হতো; আর কোন ইসলামিক সমাবেশে যোগ দেবার অপরাধে যদি তাকে পুলিশের গুলিতে জীবন দিতে হতো, তাহলে এই মানুষটি আমার সন্তানের নাম ঠিকানা ও কবর খুঁজে বেড় করতেন।
আমার সন্তান যদি 'বিশ্বজিত' নামের কোন সংখ্যালঘু কিশোর হতো এবং রাতজেগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিজয় আনন্দে বিভোর থাকার কারণে দেরীতে ঘুম থেকে উঠে তাড়াহুড়া করে কর্মস্থলে যাবার পথে 'বিএনপি-জামায়াত' কর্মী সন্দেহে ছাত্রলীগের কোপ খেয়ে প্রাণ হারাতো, তাহলে রাজনীতি শেষে সবাই আমার সন্তানকে ভুলে গেলেও তিনি মনে রাখতেন।
না, আমার সন্তান কোন নিম্নবিত্তের ঘরে জন্ম নেয় নাই, সে এতিম নয়, এমন কী সে সংখ্যালঘু 'বিশ্বজিত'ও নয়। আজ তার যা পরিচয়, এর পেছনে তার বা আমার কোন কৃতিত্ব নেই। আমরা কেউই জানতাম না কোথায় কোন আর্থিক পরিবেশে, কোন পিতা-মাতার কোন জাতি-ধর্মে তার জন্ম হবে। পরম করুনাময়ের অশেষ কৃপায় সে আমার পরিবারে জন্ম না নিয়ে উপরের যে কোন একটি ঘটনার শিকার হতে পারতো।
সেইক্ষেত্রে আমার সন্তানের জন্য আমার হয়ে চোখের পানি ফেলার মানুষটি হতেন #আদিলুর রহমান খান শুভ্র। আমি এই মহান মানুষটিকে অন্যায়ভাবে, অসভ্যভাবে, মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করে রিমান্ডে পাঠানোর তীব্র প্রতিবাদ করছি।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন