মানুষের উপর প্রভাব সৃষ্টির কৌশল- ১
লিখেছেন লিখেছেন তারকা ০১ মার্চ, ২০১৪, ০১:৫০:৫৪ দুপুর
যেকোন ভাল কাজ পরিচালনার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন। আর সে ব্যবস্থাপনার একটি অন্যতম বিষয় হচ্ছে কর্মীদেরকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো। কিভাবে কর্মীদেরকে সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারা যায় তা নিয়েই আমার এ লেখা। বাস্তব অভিজ্ঞতা ও নিজস্ব চিন্তাই মূল রিসোর্স এ লিখার। পাঠকদের পরামর্শ হয়ত এ লেখাকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারবে।
মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে ছোট্ট একটি ঘটনা বলে নিই। ২০০৯ সালের কথা। ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্টের একটা প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়ল আমাদের ব্যাচের উপর। সব ব্যাচই কাজ করল তবে মূল দায়িত্ব আমাদের উপর। সেখানে প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির একটা বড় দায়িত্ব আমার উপরও ছিল। তার মধ্যে একটি ছোট্ট কাজ ছিল ভার্সিটির অডিটোরিয়াম বুকিং দেয়া। বুকিং এর জন্য অফিসিয়াল সব কাজ করে ফেলেছি। কিন্তু ওডিটোরিয়াম প্রেমিসেস এর জন্য সম্ভবত আবেদনে উল্লেখ ছিলনা। তাই, তিন দিনব্যাপী সে প্রোগ্রাম শুরুর পরে এক পর্যায় মেইন গেইট থেকে সিকিউরিটি ম্যান এসে প্রেমিসিস ব্যবহারের ব্যাপারে আপত্তি করলেন। আমাদের এক জুনিয়র তার সাথে কথা বলতে গিয়ে একটু রেগেই গেল। আমি দূরে ছিলাম। বিষয়টি বুঝতে পেরে কাছে গেলাম। সিকিউরিটি ম্যানকে সালাম দিলাম। সমস্যাটা আবার জিজ্ঞাসা করলাম শান্ত ভঙ্গিতে। ভালভাবে শুনে তারপর আমার কথা আমি বলা শেষ করলাম। তখন উনি মেনে নিয়ে চলে গেলেন। পাশে থাকা জুনিয়র ছেলেটি তাজ্জব হয়ে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে রইল। আমাকে পর মূহুর্তে দেখি বস বলে সম্বোধন করে জিজ্ঞাসা করল- ক্যামনে এতো সহজে ম্যানেজ করলেন! যাহোক, সেটা ছিল ম্যানেজমেন্টের একটা পার্ট।
পয়েন্টভিত্তিক আলোচনা করার চেষ্টা করব।
১। যে কাজ অন্যকে দিচ্ছি, সে কাজের আউটলাইনের ব্যাপারে নিজের কাছে স্বচ্ছ ধারনা থাকাঃ
অন্য কাউকে কাজ দেয়ার পূর্বে টেবিল ওয়ার্ক বা চিন্তা করে নিলে ভাল হয়। কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিষয়গুলো হয়ত আমি জানব না বা পারনা। কিন্তু কাজের একটা স্পষ্ট আউটলাইন আমার জানা আবশ্যক। এমনভাবে জানা আবশ্যক যেন ঐ কাজটি করতে গেলে আমি খুব সহজেই আয়ত্ব করে ফেলতে পারি। আমাদের এক ম্যাডাম ছিলেন। যার থিওরি ক্লাস আমার কাছে খুব বেশী ভাল লাগত না। কিন্তু তিনি সেশনাল তথা প্র্যাকটিক্যাল যে ক্লাসগুলো নিতেন তা খুব ভাল লাগত। মূল কারন ছিল- তিনি কাজের একটা সুন্দর আউটলাইন ঠিক করে তারপর কাজ দিতেন।
২। কাজের স্টেপগুলির ধারাবাহিকতা ঠিক করাঃ
কাজটি সুন্দরভাবে সমাধা করতে গেলে যে যে স্টেপ অতিক্রম করতে হতে পারে তা আগেই ডিফাইন করে ফেলতে পারলে সুবিধা হয়। সেজন্য চাই টেবিল ওয়ার্ক। কাজ দেয়ার সাথে সাথে ধারাবাহিকতা বলে দিলে কাজ প্রাপ্ত ব্যক্তি কাজটিকে প্রথমেই কিছুটা সহজ মনে করতে পারে। ফলে সে খুশি মনে কাজ গ্রহন করতে পারে।
৩। একসাথে বেশী কাজ না দেয়াঃ
কাউকে একসাথে অনেক বেশী কাজ না দিলেই ভাল। বরং যদি অনেক বড় ক্রোনলজির কাজ হয়, তবে আংশিক আংশিক কাজ দিলেই ভাল। প্রথমে ঐ অংশ শেষ করে আসবে, তারপর আবার কাজ দেয়া হবে। তাইলে দেখা যাবে কাজ প্রাপ্ত ব্যাক্তি প্রথমেই ভয় পেয়ে যাবেনা। স্বল্প কাজ হওয়ায় ঐ অংশটুকু সুন্দরভাবে মনোযোগের সাথে করার চেষ্টা করবে। তবে পরের অংশগুলোর উপর একেবারে ধারনা না দিলে আবার পরে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই কাজের একটা ফুল স্কেস তার সামনে প্রথমেই তুলে ধরা যেতে পারে। তবে কাজ এসাইন করতে হবে আংশিক আংশিক।
চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১৪২১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন