নাস্তিকদের সাথে ফরিদ উদ্দিন মাসুদের একাত্মতা এবং জাকাত বিষয়ে তার গাঁজাখুরি ফতোয়া
লিখেছেন লিখেছেন হাবিবুল্লাহ ০৫ আগস্ট, ২০১৩, ০৯:১০:১০ রাত
ফরিদ উদ্দিন মাসুদ শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম। সরকারের টাকায় পোষা নামধারী আলেম। তিনি একজন ইমাম হয়েও এবং আলেম নাম ধারণ করেও নাস্তিকদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলেন কিভাবে তা আমাদের মাথায় আসে না। তিনি নাস্তিকদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করার অর্থ কি এই নয় যে তিনিও নাস্তিক? অথবা তিনিও আল্লাহর রাসুল সঃ কে গালি দিতে পছন্দ করেন? এই যদি হয় তার অবস্থান তাহলে তার পেছনে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে কিনা সেই ফতোয়া দেয়ার দায়িত্ব আলেমদের উপর উপরই ছেড়ে দিলাম। কত টাকায় নিজের ইমান বিক্রি করলে নাস্তিকদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা যায়, তা তিনিই ভাল জানেন। তবে তিনি সরকারের টাকায় দুনিয়ার জীবনে বিশেষ করে এই সরকারের আমলে খুব আরাম আয়েশে জীবন যাপন করছেন বলে শুনা যায়। দেশের আলেম ওলামাদের সাথে বিরুধীতা, কোরান হাদীস, ইসলাম ও মুসলমানদের বিপক্ষে তিনি কাজ করে তার ইহুদি প্রভুদের নিমক হালাল করতে তিনি অত্যন্ত পারদর্শী। সম্প্রতি তিনি সেই নিমক হালালির উদ্দেশ্যে একটি জঘন্য ফতোয়া দিয়েছেন। আর তাহলো জাকাতের টাকা নাকি কওমি মাদ্রাসায় দেয়া জায়েজ নাই।
তিনি কোরানের আয়াতের উদ্ধৃতি দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি এই আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আল্লাহকে নারাজ আর নাস্তিকদেরকে খুশি করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন কোরানের আয়াতে জাকাতের যে আটটি খাতের কথা উল্লেখ আছে তাতে কওমি মাদ্রাসার কথা নাই। এবার আমরা সেই আয়াতটির দিকে একটু জনর দেব। তাতে কি লিখা আছে আর মাসুদ সাহেব তার ব্যাখ্যাতে যা বললেন তা কতটা শুদ্ধ বা অশুদ্ধ তা দেখার চেষ্টা করব। কোরান মজিদের সুরা তৌবার ৬০ নং আয়াতে আল্লাহ তালা বলেছেন=
نَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّـهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّـهِ ۗ وَاللَّـهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ ﴿٦٠﴾
যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সুরা তৌবা, আয়াত ৬০,
উল্লেখিত আয়াতে আমরা দেখলাম, ফকির মিছকিনদেরকেও জাকাত দেয়ার কথা স্পষ্ট বলা হয়েছে। আর আমরা জানি, কওমি মাদ্রাসা গুলোতে ধনি মানুষদের সন্তানরাও লেখা পড়া করে সাথে সাথে গরীব মানুষদের সন্তান এবং ইয়াতীম মিছকিনরাও লেখা পড়া করে। ধনি মানুষের সন্তানেরা নিজ খোরাকিতে খানা খায় আর ইয়াতীম মিছকিন এবং গরীবের সন্তানেরা জাকাতের খানা খায়। কোরানে ফকির মিছকিনকে জাকাত দেয়ার কথা উল্লেখ আছে। তাহলে কওমি মাদ্রাসায় ফকির মিছকিন লেখা পড়া করলে তাদেরকে জাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ হবে না কেন?
আসলে নাস্তিকদের উচ্ছিষ্টভোগী এই সব দেশ ও ইমানদ্রোহী মাসুদ ফাসুদদের উদ্দেশ্য কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করে দীনি শিক্ষা থেকে মানুষকে দূরে রাখা। তারা জানে কওমি মাদ্রাসা ওয়ালারা সব সময় দেশ ও জাতির পক্ষে কথা বলেন। ন্যায়-নীতি, ইনসাফের কথা বলেন। দীন ও মানবতার কথা বলেন। কওমি মাদ্রাসা ওয়ালারা নোংরামি, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ আর জুলুম নির্যাতনের বিপক্ষে কথা বলেন। সন্ত্রাস আর দুর্নীতির বিপক্ষে, নোংরামি-লম্পটগিরী, ধর্ষণ আর ইভটিজিং এর বিপক্ষে জনমত তৈরি করেন। দেশ দ্রোহী আর ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করেন। তাই এই সব কওমি মাদ্রাসার বিপক্ষে সব সময় ষড়যন্ত্র করতে থাকে শয়তানের চেলা চামুণ্ডারা। এই ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ শোলাকিয়ার ইমাম ইমান বিক্রিত নামধারী আলেম ফরিদ উদ্দিন মাসুদের গাঁজাখুরি এই ফতোয়া
নাস্তিকরা যে যাই বলুক মুসলমানদের উচিত মাদ্রাসা গুলোতে দান করা। আল্লাহ তালা বলেন= الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُونَ مَا أَنفَقُوا مَنًّا وَلَا أَذًى ۙ لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না। সুরা বাকারা = ২৬২ وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَىٰ أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবে: হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। সুরা মুনাফিকুন = ১০,
যারা কওমি মাদ্রাসায় দান করতে নিষেধ করেন। তারা মনে করে মাদ্রাসায় দান না করলে মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাদের এই ধারণা সম্পুর্ণ ভুল। আল্লাহ তালা বলেন هُمُ الَّذِينَ يَقُولُونَ لَا تُنفِقُوا عَلَىٰ مَنْ عِندَ رَسُولِ اللَّـهِ حَتَّىٰ يَنفَضُّوا ۗ وَلِلَّـهِ خَزَائِنُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَـٰكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَفْقَهُونَ তারাই বলেঃ আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা আছে তাদের জন্যে ব্যয় করো না। পরিণামে তারা আপনা-আপনি সরে যাবে। ভূ ও নভোমন্ডলের ধন-ভাণ্ডার আল্লাহরই কিন্তু মুনাফিকরা তা বোঝে না। সুরা মুনাফিকুন = ৭,
অন্য আয়াতে আল্লাহ তালা বলেন=
يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّـهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّـهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ ﴿٨﴾
তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। সুরা আচ্ছাফ। আয়াত ৮,
বিষয়: বিবিধ
৩৬১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন