রমজানে যারা জাকাত দেন তাদের উদ্দেশ্যে দুটি কথা

লিখেছেন লিখেছেন হাবিবুল্লাহ ২০ জুলাই, ২০১৩, ০৫:৫৪:৫৭ বিকাল



যাদেরকে আল্লাহ তালা জাকাত দেওয়ার তৌফীক দিয়েছেন তারা জাকাত দেওয়ার মাধ্যমে অনেক ছওয়াব অর্জন করেন তাতে কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু কিছু ভুলের কারণে যেমনি ছওয়াব কমে যায় তেমনি কিছু সমস্যাও হয়। আমাদের দেশে জাকাত নিতে হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে অনেক সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ সময় মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আবার লাইনে দাড় করিয়ে গরিব মানুষদেরকে অপমানও কম করা হয় না। তাই যারা জাকাত দেন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু উপদেশ

১/ সর্ব প্রথম নিয়ত ঠিক করবেন। নিয়ত রাখবেন যে মানুষকে দেখানোর জন্য নয় , শুধু আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য জাকাত দিচ্ছি।

২/ জাকাত যে নিচ্ছেন তার উপর আপনি দয়া করছেন ভাববেন না, বরং মনে করবেন তিনি জাকাত নিয়ে আপনার উপকার করছেন। তাই তাদেরকে লাইনে দাড় করিয়ে অপমান করবেন না।

৩/ এমন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করুন যাতে জাকাত গ্রহীতাগণকে লাইন ধরে জাকাত নিতে না হয়। যেমন জাকাত দেওয়ার জন্য শুধু একটি দিন ঠিক করবেন না। যে সময় যে আসেন তাকেই দিয়ে দিবেন। ফুরিয়ে গেলে বলে দিবেন যে ফুরিয়ে গেছে।

৪ / রমজানের ২৭ তারিখের জাকাত দেওয়ার জন্য বসে থাকবেন না।

৫/ শাড়ি বা লুঙ্গি জাতিয় কিছু না দিয়ে নগদ টাকা দিয়ে দিলে গরিবের উপকার বেশি হবে। কারণ অনেক শাড়ি লুঙ্গি হয়ে গেলে তা আবার কম দামে বিক্রি করতে হয় তাদেরকে।

৬/ নিজের আত্মীয় স্বজনকে জাকাত আগে দিবেন, তবে বাবা-মা, বা ছেলে-মেয়েদেরকে জাকাত দেওয়া জায়েজ নাই।

৭/ আন্দাজ করে কিছু টাকা না দিয়ে হিসাব করে জাকাত দিবেন।

৮/ যেসব মাদ্রাসাতে বোর্ডিং আছে, মানে ছাত্ররা ফ্রিতে খানা খায়, সে সব মাদ্রাসায় টাকা আপনি নিজে গিয়ে দিয়ে আসবেন। নিজে গিয়ে দিতে না পারলে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে যারা আপনার কাছে আসেন, তাদের সম্মান রক্ষা করে জাকাত দিবেন। পরে আসেন বলে ঘুরা ঘুরি করবেন না। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে যে সব আলেম জাকাতের জন্য আসেন তারা আপনার কাজ করে দিচ্ছেন, আপনার উপকার করছেন বলে মনে করবেন। তারা নিজের জন্য আসেন না। দীনের জন্য আসেন। তাদের সাথে সম্মানজনক আচরণ করবেন।

মহানবী (সHappy বলেন, ‘একজন আলেমের মর্যাদা একজন সাধারণ মানুষের ওপর ততটুকুন, যতটুকুন তোমাদের ওপর আমি একজন নবীর মর্যাদা।’ (সহি তিরমিজি)।

৯/ প্রচারণা কামনা করবেন না। [তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্য দানও জায়েজ আছে]

হাদিসে আছে صدقة السر تطفيء غضب الرب'

‘গোপনে দান করা আল্লাহর রাগকে কমিয়ে দেয়’।

জাকাত সম্পর্কে কোরানে অনেক আয়াত আছে। আমি শুধু দানের ফজিলত আর লোক দেখানো দানের ক্ষতি সম্পর্কে দুটি আয়াত উল্লেখ করছি। مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍ ۗ وَاللَّـهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّـهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ ﴿٢٦١﴾الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُونَ مَا أَنفَقُوا مَنًّا وَلَا أَذًى ۙ لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না। সুরা বাকারা = ২৬১,২৬২

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُم بِالْمَنِّ وَالْأَذَىٰ كَالَّذِي يُنفِقُ مَالَهُ رِئَاءَ النَّاسِ وَلَا يُؤْمِنُ بِاللَّـهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ۖ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلْدًا ۖ لَّا يَقْدِرُونَ عَلَىٰ شَيْءٍ مِّمَّا كَسَبُوا ۗ وَاللَّـهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ হে ঈমানদারগণ!তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, এ ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা ঐ বস্তুর কোন সওয়াব পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। সুরা বাকারা ২৬৪

যাদেরকে আল্লাহ তালা জাকাত দেওয়ার তৌফীক দিয়েছেন তারা জাকাত দেওয়ার মাধ্যমে অনেক ছওয়াব অর্জন করেন তাতে কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু কিছু ভুলের কারণে যেমনি ছওয়াব কমে যায় তেমনি কিছু সমস্যাও হয়। আমাদের দেশে জাকাত নিতে হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে অনেক সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ সময় মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আবার লাইনে দাড় করিয়ে গরিব মানুষদেরকে অপমানও কম করা হয় না। তাই যারা জাকাত দেন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু উপদেশ

১/ সর্ব প্রথম নিয়ত ঠিক করবেন। নিয়ত রাখবেন যে মানুষকে দেখানোর জন্য নয় , শুধু আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য জাকাত দিচ্ছি।

২/ জাকাত যে নিচ্ছেন তার উপর আপনি দয়া করছেন ভাববেন না, বরং মনে করবেন তিনি জাকাত নিয়ে আপনার উপকার করছেন। তাই তাদেরকে লাইনে দাড় করিয়ে অপমান করবেন না।

৩/ এমন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করুন যাতে জাকাত গ্রহীতাগণকে লাইন ধরে জাকাত নিতে না হয়। যেমন জাকাত দেওয়ার জন্য শুধু একটি দিন ঠিক করবেন না। যে সময় যে আসেন তাকেই দিয়ে দিবেন। ফুরিয়ে গেলে বলে দিবেন যে ফুরিয়ে গেছে।

৪ / রমজানের ২৭ তারিখের জাকাত দেওয়ার জন্য বসে থাকবেন না।

৫/ শাড়ি বা লুঙ্গি জাতিয় কিছু না দিয়ে নগদ টাকা দিয়ে দিলে গরিবের উপকার বেশি হবে। কারণ অনেক শাড়ি লুঙ্গি হয়ে গেলে তা আবার কম দামে বিক্রি করতে হয় তাদেরকে।

৬/ নিজের আত্মীয় স্বজনকে জাকাত আগে দিবেন, তবে বাবা-মা, বা ছেলে-মেয়েদেরকে জাকাত দেওয়া জায়েজ নাই।

৭/ আন্দাজ করে কিছু টাকা না দিয়ে হিসাব করে জাকাত দিবেন।

৮/ যেসব মাদ্রাসাতে বোর্ডিং আছে, মানে ছাত্ররা ফ্রিতে খানা খায়, সে সব মাদ্রাসায় টাকা আপনি নিজে গিয়ে দিয়ে আসবেন। নিজে গিয়ে দিতে না পারলে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে যারা আপনার কাছে আসেন, তাদের সম্মান রক্ষা করে জাকাত দিবেন। পরে আসেন বলে ঘুরা ঘুরি করবেন না। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে যে সব আলেম জাকাতের জন্য আসেন তারা আপনার কাজ করে দিচ্ছেন, আপনার উপকার করছেন বলে মনে করবেন। তারা নিজের জন্য আসেন না। দীনের জন্য আসেন। তাদের সাথে সম্মানজনক আচরণ করবেন।

মহানবী (সHappy বলেন, ‘একজন আলেমের মর্যাদা একজন সাধারণ মানুষের ওপর ততটুকুন, যতটুকুন তোমাদের ওপর আমি একজন নবীর মর্যাদা।’ (সহি তিরমিজি)।

৯/ প্রচারণা কামনা করবেন না। [তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্য দানও জায়েজ আছে]

হাদিসে আছে صدقة السر تطفيء غضب الرب'

‘গোপনে দান করা আল্লাহর রাগকে কমিয়ে দেয়’।

জাকাত সম্পর্কে কোরানে অনেক আয়াত আছে। আমি শুধু দানের ফজিলত আর লোক দেখানো দানের ক্ষতি সম্পর্কে দুটি আয়াত উল্লেখ করছি। مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍ ۗ وَاللَّـهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّـهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ ﴿٢٦١﴾الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُونَ مَا أَنفَقُوا مَنًّا وَلَا أَذًى ۙ لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না। সুরা বাকারা = ২৬১,২৬২

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُم بِالْمَنِّ وَالْأَذَىٰ كَالَّذِي يُنفِقُ مَالَهُ رِئَاءَ النَّاسِ وَلَا يُؤْمِنُ بِاللَّـهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ۖ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلْدًا ۖ لَّا يَقْدِرُونَ عَلَىٰ شَيْءٍ مِّمَّا كَسَبُوا ۗ وَاللَّـهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ হে ঈমানদারগণ!তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, এ ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা ঐ বস্তুর কোন সওয়াব পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। সুরা বাকারা ২৬৪

বিষয়: বিবিধ

১২৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File