আমাদের নপংসুক মিডিয়া এবং অনিন্দ্য সুন্দর রাতারগুল
লিখেছেন লিখেছেন মামুন সিদ্দিক ১৫ জুলাই, ২০১৪, ০৮:১৪:৩৪ রাত
নপংসুকের স্বভাবের স্বাভাবিকতা হল, কাজের মেয়ে থেকে শুরু করে অসমবয়সি যে কোন নারীকে দেখলেই তার শরীরের উত্তপ্ততা বিকাশ হতে শুরু করে। অথচ তার মনের শান্তির জন্য ঘরে রয়েছে এরচেয়ে অনেক সুন্দরী ভালবাসার পরশভোলানো স্ত্রী। কিন্তু সেটা তাকে তেমন আগ্রহী করেনা। পরস্ত্রীতেই সে সুখ খুঁজে ফেরে।
ব্রাজিল বিশ্বকাপে আমাদের দেশের বেশকয়েকটি মিডিয়া প্রতিনিধি গিয়েছিরেন ব্রাজিলে। সেখানে তারা বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর কাভারেজের পাশাপাশি ব্রাজিলের বিভিন্ন মনোমুগদ্ধকর পর্যটন কেন্দ্র ও ঐতিহ্যবাহি নানা বিষয় তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। এর মধ্যে যমুনা টেলিভিশনের আহমেদ রাকিব আর চ্যানেল-২৪’র রেযোওয়ানুল হাসান সবচেয়ে বেশি কাভারেজ দিয়েছে ব্রাজিলের বিভিন্নস্থানের।
মিডিয়ায় ব্রাজিলের এত সুন্দর পর্যটন স্পটগুলো সত্যিই অবাক হওয়ার মত। তবে সবচেয়ে বড়কথা হল, এর বেশিরভাগই হচ্ছে কৃত্রিমভাবে গড়ে তোলা। ওদের কৃত্রিম ও আকর্ষনীয় সৌন্দর্য দেখে আমাদের মিডিয়া কর্মীরা সেগুলোর প্রেমে মজেছেন।
আমাদের আত্মভোলা মিডিয়াগুলো গত একমাস ব্রাজিলের কৃত্রিম স্পটগুলোকে যতটা হাইলাইট করেছেন তার অর্ধেকও যদি সারা বছর ধরে আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরতো তাহলে বিশ্বের সৌন্দর্য প্রেমি পর্যটকরা ব্রাজিল নয়, আমাদের দেশেই ছুটে আসতো।
আমাদের প্রাকৃতি স্পটের কি অভাব আছে? না নেই, কিন্তু সেগুলোর ব্যাপারে আমাদের জানা নেই। আর এর দায় আমাদের সরকাগুলোর এবং আমাদের মিডিয়াগুলোর অবশ্যই।
মনভোলানো তেমনি একটি অনিন্দ্য সুন্দর প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের রাতারগুল। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে এটির অবস্থান। রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।
বর্ষাকালে এই বনে অথৈ জল থাকে চার মাস। তারপর ছোট ছোট খালগুলো হয়ে যায় পয়ে-চলা পথ। আর তখন পানির আশ্রয় হয় বন বিভাগের খোঁড়া বিলগুলোতে। সেখানেই আশ্রয় নেয় জলজ প্রাণীকুল।
দুপাশে ঘন হিজলের বন, হিজল গাছগুলোর সাত আট ফিট পানির নিচে বাকি অংশ উপরে। গাছগাছালির ফাঁক গলে নৌকায় ঘুরে প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করতে করতে যখন নানা প্রাজাতির পাখির কলতান শুনবেন, তখন যে কেহই হারিয়ে যাবেন আদিগন্তে।
আমার দৃঢ়বিশ্বাস, আমাদের এই রাতারগুল যদি বাংলাদেশে না হয়ে পৃথিবীর অন্যকোন দেশে হত, তবে এটি হত বিশ্বের অন্যতম সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু আমাদের এতসুন্দর একটি প্রাকিৃতিক কেন্দ্র থাকার পরও এটি আমাদের অজানা।
কি জানে, হয়তো এর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার চোখই নাই আমাদের মিডিয়াগুলোর। যদি থাকত তবে অন্যদেশের কৃত্রিমতার গুনকীর্তন না গেয়ে নিজেদের দেশের সৌন্দর্য পুজারীই হত তারা
[ছবিঃ গুগল]
বিষয়: বিবিধ
১৫৬৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রাতারগুল সম্পর্কে আমার মনে হয় কম প্রচার করাই ভাল। ইতঃমধ্যে এতে ট্যুরিষ্ট বাংলো নির্মানের নামে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করা শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকারি উদ্যোগেই এই অপকর্ম। রাতারগুলের দুর্গমতাই এর সেীন্দর্যকে রক্ষা করছে। মাধবকুন্ড ও সেন্টমার্টিন যতদিন দুর্গম ছিল এর প্রাকৃতিক সেীন্দর্য বজায় ছিল। কিন্তু এখন কিছু মানুষ গিয়ে এর সেীন্দর্য ও পরিবেশ দুটাই নষ্ট করে দিয়েছে। এই দুর্গম অঞ্চলগুলি দুর্গম থাকাই ভাল। না হলে এর সেীন্দর্য ধ্বংস হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন